Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Fake Vaccination

ভুয়ো প্রতিষেধক থেকে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা নয়

তাই ধরে নিতে হচ্ছে, কসবা ও সিটি কলেজের শিবিরে কেউ বিসিজি বা হামের প্রতিষেধক, কেউ আবার অ্যামিক্যাসিন পেয়েছেন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২১ ০৬:৩৩
Share: Save:

ভায়ালের ভিতরে আসলে কী ছিল?

কসবার ভুয়ো ভ্যাকসিন-কাণ্ড থেকে উঠে আসা সেই প্রশ্নের এখনও সদুত্তর মেলেনি। কারণ, রাজ্যের ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি ওই প্রতিষেধকের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও দেয়নি। তবে বৃহস্পতিবার প্রাথমিক ভাবে পুরসভা দাবি করেছিল, বিসিজি কিংবা হামের প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। আবার পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, বেশ কিছু ভুয়ো কোভিশিল্ড ভায়ালের নেপথ্যে ছিল অ্যামিক্যাসিন ইঞ্জেকশন।

তাই ধরে নিতে হচ্ছে, কসবা ও সিটি কলেজের শিবিরে কেউ বিসিজি বা হামের প্রতিষেধক, কেউ আবার অ্যামিক্যাসিন পেয়েছেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই চিন্তায় পড়েছেন ভুয়ো প্রতিষেধক নেওয়া বহু উপভোক্তা। যদিও চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ওই প্রতিষেধক নেওয়ার পরে তাৎক্ষণিক বড় কোনও সমস্যা হলে সেটি প্রকাশ্যে চলে আসত। কিন্তু তা হয়নি। পাশাপাশি, কী ওষুধ কতটা পরিমাণে দেওয়া হয়েছে, সেটাও জরুরি। তবে যে কোনও প্রতিষেধকেরই তাৎক্ষণিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কসবার ঘটনায় তেমন কিছু শোনা না গেলেও, প্রতিষেধক নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যে কেউ অসুস্থ হয়েছেন কি না, সেটা খতিয়ে দেখা অত্যন্ত জরুরি। তবে ভুয়ো প্রতিষেধক গ্রহীতারাও কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বুঝলেই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন, জানাচ্ছেন ফার্মাকোলজির এক অধ্যাপক। তাঁর কথায়, “যে কোনও ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা থাকে। সেটা মেনে নিই, কারণ তার ভাল করার ক্ষমতা অনেক বেশি বলে। এ ক্ষেত্রে বিসিজি, হাম বা অ্যামিক্যাসিন যেটাই দেওয়া হোক না কেন, তা তো উপভোক্তাদের ভাল করবে না। তাই বিষয়টি নিন্দনীয়। তবে করোনার প্রতিষেধক যে পরিমাণ দেওয়া হয়, তেমনই দেওয়া হয়ে থাকলে খুব বড় ক্ষতি করবে না।”

আবার সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যোগীরাজ রায় বলছেন, “সাধারণত যে কোনও প্রতিষেধক নিরাপদ হয়। কিন্তু গুণগত মান বজায় রাখতে যে কোল্ড-চেন পদ্ধতিতে রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন, তা কতটা হয়েছে কেউ জানেন না। যদি সেটা না হয় তা হলে ওটা সাধারণ জলের সমান। তবে কারও বড় কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হওয়ার থাকলে এত ক্ষণে হয়ে যেত।”

এসএসকেএম হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রধান চিকিৎসক মৌসুমী বসু জানাচ্ছেন, জাতীয় টিকাকরণ নির্দেশিকা অনুযায়ী, জন্মের পর থেকে এক বছরের কমবয়সিদের বিসিজি-র প্রতিষেধক দেওয়া হয়। আবার পাঁচ বছরের কময়সিদের দু’বার হামের প্রতিষেধক দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “কেউযদি ওই প্রতিষেধক পেয়ে থাকেন, তা হলে নিয়ম অনুযায়ী অন্তত এক মাস পরে অন্য প্রতিষেধক নিতে পারবেন। অর্থাৎ, করোনার প্রতিষেধক নিতে এখন তাঁকে অপেক্ষা করতে হবে।”

কিন্তু অ্যামিক্যাসিন ইঞ্জেকশনটি কী?

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই জানাচ্ছেন, অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড শ্রেণির এই অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন খারাপ ব্যাক্টিরিয়ার সংক্রমণ, যেমন শরীরের অস্থিসন্ধি, পেট, মেনিনজাইটিস, নিউমোনিয়া, সেপসিস, মূত্রনালীর সংক্রমণ ও ড্রাগ রেসিস্ট্যান্ট টিবি বা যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। তিনি বলছেন, “অ্যামিক্যাসিনের অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে দু’টি হল শ্রবণ ক্ষমতা চলে যাওয়া, কিডনির সমস্যা দেখা দেওয়া। বেশি মাত্রায় নিলে মাথা ঘোরা, অসাড় ভাব, এমনকি খিঁচুনিও হতে পারে।” তাই ওই অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার আগে কিডনির কার্যক্ষমতা ভাল ভাবে দেখে নেওয়া অত্যন্তজরুরি বলেও জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তবে করোনা প্রতিষেধক দেওয়া হয় ০.৫ মিলিলিটার হিসেবে। সেই পরিমাণ অ্যামিক্যাসিন দেওয়া হলে তেমন বড় সমস্যা না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলেই জানাচ্ছেন যোগীরাজ।

অন্য বিষয়গুলি:

kasba Fake Vaccination
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy