Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Kolkata Metro

মেট্রোর সব নন-এসি রেক বাতিল হবে না এ বছরেও

মেট্রোর ১৩টি পুরনো এসি রেকের মধ্যে একেবারে প্রথম দিকের কয়েকটি রেকের বয়স দশ ছুঁইছুঁই।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

ফিরোজ ইসলাম
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৪৫
Share: Save:

নতুন আনা ছ’টি এসি রেক চালাচ্ছে মেট্রো। প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে এসি রেক চললেও নন-এসি রেকগুলি কবে পুরোপুরি বন্ধ হবে, তার কোনও উত্তর নেই। সেই সঙ্গে নিত্যযাত্রীদের প্রশ্ন, মেট্রোর সময়ানুবর্তিতা কি আদৌ কখনও ফিরে আসবে? এ প্রশ্নেরও অবশ্য সদুত্তর মেলেনি।

মেট্রোর ১৩টি পুরনো এসি রেকের মধ্যে একেবারে প্রথম দিকের কয়েকটি রেকের বয়স দশ ছুঁইছুঁই। ইদানীং সেগুলিতে নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বিশেষত, বাতানুকূল যন্ত্র গরম হয়ে গিয়ে ধোঁয়া বেরোনোর ঘটনা প্রায়ই ঘটছে।

পুরনো এসি রেকগুলির মধ্যে একটিকে খোলনলচে বদলে মেরামত করা হয়েছে। নন-এসি রেকের সংখ্যা আগের তুলনায় কমলেও এখনও চারটি রেক চলছে। চলতি বছরে ওই রেকগুলি বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।

মেট্রোকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, রেল বোর্ডের আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতার কারণেই পরিষেবার এমন বেহাল দশা। পুরনো অসুখ তো রয়েছেই, তবে তার থেকেও বড় সমস্যা হল, রোগ নির্ণয়ের পরে ওষুধ জোগাড় করে সময়মতো চিকিৎসা শুরু হওয়া। আর তাতেই বহু সময় গড়িয়ে যায়। তত দিনে নতুন উপসর্গ এসে বাসা বাঁধে। আবার শুরু হয় তার ওষুধ খোঁজার পালা। শেষ পর্যন্ত রোগমুক্তি আর হয় না। অসুখ নিয়েই এগিয়ে চলতে হয়।

মেট্রো সূত্রের খবর, উন্নতমানের বাতানুকূল রেকের অভাব ২০১১-’১২ সাল থেকেই টের পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু নতুন রেকের জন্য যাবতীয় শর্ত পূরণ করে দরপত্র ডাকতে ডাকতেই আরও তিন-চার বছর কেটে যায়। শেষে একটি চিনা সংস্থা রেক সরবরাহের দায়িত্ব পায়। ২০১৯ সালের মার্চে এসে পৌঁছয় ওই সংস্থার প্রথম রেক। আপাতত ওই রেক নিয়ে পরীক্ষামূলক দৌড় চললেও এখনও তা মেট্রো পরিষেবার কাজে লাগানো যায়নি।

প্রাথমিক সমস্যা কাটিয়ে ওঠার পরে চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরির রেক মেট্রো কর্তৃপক্ষকে এখন কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে। তবে তিন বছর অপেক্ষার পরে এত দিনে মাত্র ছ’টি রেক চালানোর ব্যবস্থা করা গিয়েছে। সব মিলিয়ে মেট্রোয় এখন মোট ১৯টি বাতানুকূল রেক চললেও তার মধ্যে কমবেশি চারটি বাতানুকূল রেক বুড়ো হতে বসেছে। ফলে কয়েক মাসের মধ্যে আরও অন্তত চারটি রেক নামাতে না পারলে গ্রীষ্মকালে ফের ভুগতে হবে মেট্রোযাত্রীদের।

মেট্রোয় যাত্রীর সংখ্যা কয়েক বছরে অনেকটাই বেড়েছে। ২০১১ সালে গড়ে দৈনিক যাত্রী-সংখ্যা ছিল তিন লক্ষ ৭৫ হাজারের কাছাকাছি। এখন তা সাড়ে ছ’লক্ষের মতো। যাত্রীর এই চাপ সামাল দিতে দু’টি ট্রেনের মধ্যে সময়ের ব্যবধান পাঁচ মিনিটেরও নীচে নামিয়ে আনা প্রয়োজন। কিন্তু তা করার জন্য মেট্রোর সিগন্যালিং-সহ বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিকাঠামোয় বদল আনা প্রয়োজন। গত বছর সিগন্যালিং ব্যবস্থা উন্নত করা সংক্রান্ত প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে রেল বোর্ড। কিন্তু তার জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে, তা যথেষ্ট নয়। রেলের আর্থিক অবস্থা তলানিতে ঠেকায় ওই কাজ কবে শেষ করা যাবে, তা নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে।

এক মেট্রোকর্তার কথায়, ‘‘রোগ নির্ণয় হওয়ার পরে ওষুধ যখন এসে পৌঁছয়, তখন আর তাতে কাজ হয় না। শুধু সমস্যা নিয়ে জেরবার হতে থাকলে পরিষেবার মানোন্নয়ন নিয়ে ভাবা হবে কখন?’’ ওই কর্তা জানান, সামান্য এসক্যালেটর বদলানোর টাকা আসতেই কয়েক বছর লেগে গিয়েছে। সব ক্ষেত্রেই এই বিলম্ব প্রায় নিয়মে পরিণত হয়েছে। ভাড়া বাড়ায় মেট্রোর আর্থিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও পরিকাঠামো উন্নত করার কাজ কবে শেষ করা যাবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

মেট্রো কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, সারা দেশের মধ্যে একমাত্র কলকাতা মেট্রোই রেল বোর্ডের অধীন হওয়ায় রেলের আর্থিক স্বাস্থ্যের ভালমন্দের প্রভাব সরাসরি পরিষেবার উপরে পড়ে। তা ছাড়াও আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার নানা সমস্যা তো রয়েছেই। অন্যান্য বেশির ভাগ শহরেই মেট্রো নগরোন্নয়ন দফতর বা রাজ্য সরকারের অধীন। ফলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে এই দীর্ঘসূত্রতা নেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Metro Non Ac Rake
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy