ভোটার আছে, কিন্তু ভোটকেন্দ্র নেই। কোনও গ্রাম নয়, এ ছবি কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ময়দান থানা এলাকার।
সরকারি হিসেবে সাড়ে তিন বর্গ কিমি-র এই থানায় কোনও বসত বাড়ি নেই। তবে শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা এটি। ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড এখানে। এই থানার সীমানার মধ্যেই ‘ব্রিগেড’। যেখানে রাজনীতিবিদরা গলা ফাটিয়ে তাঁদের দলের প্রার্থীদের ভোট দিতে বলেন। শহরের বিশাল সংখ্যক বুথের ইভিএম-ও জমা থাকে এই তল্লাটেই।
তবু কলকাতা পুরভোট ঘিরে যখন কলকাতার সব ক’টি থানা এলাকা সরগরম, তখন ময়দান নিশ্চুপ। কারণ, এখানে কোনও বুথ নেই। ভোটারের সংখ্যা কত, সে হিসেব নিয়েও রয়েছে মতপার্থক্য। ভোটারদের ভোট দিতে যেতে হয় অন্য এলাকায়।
এখানকার বিশাল অঞ্চল জুড়ে ফোর্ট উইলিয়ম। সেখানে রাজনীতির প্রবেশ নিষেধ। ময়দান থানার ওসি অসীম আলি জানান, তাঁর এলাকায় ফোর্ট উইলিয়ম ছাড়া আছে আকাশবাণী ভবন, নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়াম ও ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র, ইডেন গার্ডেন্স-সহ ৬৭টি ক্লাব। ওই সব জায়গা মিলিয়ে সাকুল্যে ভোটার ৬১ জন।
নির্বাচন কমিশন সুত্রের খবর, ফোর্ট উইলিমের ভোটার ১০৯১ জন। ওই থানা এলাকার মোট ভোটার ১১৫২। তবুও কোনও বুথ নেই। ফোর্ট উইলিমের বাসিন্দারা ভোট দিতে যান ৭৫ নম্বর ওয়াডের্র হেস্টিংস-এ। আর নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের ভোটারদের যেতে হয় পাশের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে।
কিন্তু এ দেশে তো এক জন ভোটারের জন্যও কেন্দ্র তৈরির নজির আছে। এখানে কেন এমন হাল? রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সুনীল গুপ্ত বলেন, ‘‘ বুথ হয় সিভিলিয়ন এলাকায়। সেনা এলাকায় বুথ হয় না। কারণ, সেনাকর্মী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা সার্ভিস ভোটার। তাঁরা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেন। তাই ফোর্ট উইলিয়মের ভোটাররা ভোট দেন পোস্টাল ব্যালটে।’’
সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলের মুখপাত্র তরুণকুমার সিংহ জানান, এই কেন্দ্রে অবস্থানরত কেউই স্থানীয় ভোটার নন। নিয়ম অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর কেউ একটানা তিন বছরের বেশি থাকলে তবেই স্থানীয় ভোটার হতে পারেন। কিন্তু এখানকার সেনাকর্মীরা আড়াই-তিন বছরে বদলি হয়ে যান। ফলে ভোটার তালিকায় নাম তুলতে পারেন না।
নিবার্চন কমিশনের হিসেব যে বলছে ফোর্ট উইলিয়মে ১০৯১ জন ভোটার আছেন? তরুণকুমারের বক্তব্য, ‘‘যখন সিভিলিয়নরা থাকতেন, তখন তালিকায় তোলা নাম হয়তো সংশোধিত হয়নি। এখন কোনও সিভিলিয়ন থাকেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy