ঘটনাস্থলে ফরেনসিক দল। —নিজস্ব চিত্র।
তালা ভেঙে নয়, তালা খুলেই পঞ্চসায়রের হোম থেকে বেরিয়েছিলেন গণধর্ষণের অভিযোগকারিণী। সময়ের হিসেবেও গরমিল ধরা পড়েছে। রাত দুটো নয়, ওই মহিলা হোম থেকে বেরিয়েছিলেন রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে। এমনকি তিনি দাবি করেছিলেন, একটা গাড়ি করে তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই রাতে একটি নয়, ছিল দু’টি গাড়ি। এমনটাই জানা গিয়েছে কলকাতা পুলিশ সূত্রে।
পঞ্চসায়রের গণধর্ষণের ঘটনায় তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। উঠে আসছে একের পর এক নতুন তথ্য। যেমন, মহিলা জানিয়েছিলেন তাঁকে গাড়িতে তুলে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরানো হয়েছিল। তার পরে একটা জায়গায় থামিয়ে তাঁকে গণধর্ষণ করা হয় ফের গাড়িতে করে নিয়ে গিয়ে নামিয়ে দেওয়া হয় সোনারপুরের কাছে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ওই রাতে তাঁকে প্রায় ৪০ মিনিট ওই গাড়িতে ঘোরানোর পর সোনারপুরের কাছে কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়। এই ৪০ মিনিটের তথ্যও ভাবাচ্ছে পুলিশকে। এমনকি মহিলার দাবি মতো তদন্তকারীদের প্রথমে মনে হয়েছিল, ওই ঘটনায় দু’জন জড়িত। কিন্তু বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখার পর তাঁরা জানতে পেরেছেন, ওই অপরাধে আরও অনেকের জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ওই মহিলা সে দিন নিজেই গাড়িতে উঠেছিলেন, নাকি তাঁকে জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সে বিষয়ে কলকাতার গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “এখনই এ সব বলার সময় হয়নি।’’
পঞ্চসায়রের ওই হোমের দেখভালের দায়িত্বে থাকা এক মহিলাকর্মী পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তিনি রাতে সাড়ে তিনটে নাগাদ উঠে দেখেন নির্যাতিতা ঘরে নেই। তাঁর অনুমান ছিল অভিযোগকারিণী রাত দুটো নাগাদ চলে গিয়েছেন তালা ভেঙে। কিন্তু ফরেন্সিকের একটি দল ওই তালা প্রাথমিক পরীক্ষার পর পুলিশকে জানিয়েছে, মোটেই তা ভাঙা হয়নি। তালা খোলা হয়েছিল। তালার চাবি কোথায় থাকত নির্যাতিতা তা জানতেন বলেই পুলিশের ধারণা।
আরও পড়ুন: পিকের ছকে প্রাণপণে ময়দানে তৃণমূল, উপনির্বাচনেও আলাদা ইস্তাহার খড়্গপুর-কালিয়াগঞ্জের জন্য
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে একটি গাড়ি আসে ওই হোমের সামনে। কয়েক মিনিটের মধ্যে অন্য একটি গাড়িতে ওঠেন ওই মহিলা। গাড়িতে তিনি ছিলেন ৪০ মিনিটের আশপাশে। পুলিশকে তিনি জানিয়েছিলেন, সোনারপুরের কাছে একটি খালপাড়ে তাঁকে ফেলে রেখে যায় দুই যুবক। ভোরের ট্রেনে তাঁকে নিত্যযাত্রীরা টিকিট কেটে তাঁকে তুলে দেন। এর পর ট্রেনে বালিগঞ্জ নেমে সেখান থেকে গড়িয়াহাটে এক আত্নমীয়ের বাড়ি যান। তার পর ফেরেন বেহালায় বোনের বাড়িতে। একই কথা পুলিশকে জানিয়েছিলেন নির্যাতিতার বোনও। কিন্তু বোনের কথাতেও গরমিল রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। গোয়েন্দা প্রধান এ দিন বলেন, ‘‘ঠিক কী ঘটেছিল, তা জানতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। বিভিন্ন দিক পুলিশ খতিয়ে দেখছে।”
আরও পড়ুন: অবসাদে-আতঙ্কে এখনও অসংলগ্ন কথাবার্তা পঞ্চসায়রের নির্যাতিতার, বহু প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy