দেখা: ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে কলকাতা পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরের যৌথ পরিদর্শন। শুক্রবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী
আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বন্ধ গেটের তালা খুলবে তো? শুক্রবার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যৌথ পরিদর্শনে মূলত সেটাই পরখ করতে চেয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের ডিসি (কমব্যাট) নভেন্দ্র সিংহ পাল এবং স্বাস্থ্য দফতরের অতিরিক্তি সচিব তথা এন আর এস-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে মেডিক্যাল কলেজগুলির জন্য গঠিত কমিটির নোডাল অফিসার সঞ্জয় বনসল। আর সেই পরিস্থিতিতেই দেরি হল চাবি আনতে! যার জেরে প্রকাশ্যেই ওয়ার্ড মাস্টারকে শো-কজ করার জন্য ডেপুটি সুপার বিমলবন্ধু সাহাকে নির্দেশ দিলেন সুপার সন্দীপ ঘোষ। পরে সেই শো-কজ নোটিস জারিও হয়।
আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বন্ধ কোনও গেট খুলতে চাবি ঠিক সময়ে পাওয়া যাবে কি না, এন আর এস হাসপাতালেও সেই প্রশ্ন করেছিলেন কলকাতা পুলিশের নোডাল অফিসার। এ দিন সেই দৃশ্যেরই পুনরাবৃত্তি হয় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। নির্দেশ পাওয়া মাত্র বেসরকারি সংস্থার কয়েক জন রক্ষী চাবির খোঁজে বেরিয়ে পড়েন। কিন্তু চাবি আনতে দেরি হচ্ছে দেখে অস্বস্তি বাড়তে থাকে হাসপাতালের কর্তাদের। খোদ সুপারকে বলতে শোনা যায়, ‘‘একটা চাবি আনতে এত দেরি?’’ প্রায় পাঁচ মিনিট পরে চাবি যদিও বা এল, গেট খুলতে গিয়ে কোন তালার কোন চাবি, গুলিয়ে ফেলেন রক্ষীরা। সচিবের উপস্থিতিতে এমন পরিস্থিতির জন্য আদৌ প্রস্তুত ছিলেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিশেষত ‘বহিরাগত’ রোধে যখন তাঁদের বেশ কিছু পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই শীর্ষ কর্তাদের তারিফ কুড়িয়েছে।
এ দিন ন্যাশনাল মেডিক্যাল পরিদর্শনে গিয়ে প্রশাসনিক কর্তারা দেখেন, মূল প্রবেশপথে গার্ডরেল বসানো। রোগীর আত্মীয়দের যাতায়াত, বাইরের গাড়ি ঢুকতে গেলে রক্ষীরা পরীক্ষা করছেন। হাসপাতাল চত্বর জুড়ে হেল্পলাইন নম্বর, গ্রিভান্স সেল, ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া রয়েছে। গোলমাল হলে দু’টি ‘প্যানিক বাটন’ও রয়েছে। যা শুনে নোডাল অফিসার পরামর্শ দেন, আরও সাতটি ‘প্যানিক বাটন’ এবং গন্ডগোলের ছবি যাতে সকলে দেখতে পান সেই ব্যবস্থা করতে হবে। সামগ্রিক আয়োজন পরিদর্শক দলের মুখে হাসিই ফুটিয়েছিল। হাল্কা মেজাজে বেসরকারি রক্ষীকে আরও তরতাজা থাকার পরামর্শ দেন অতিরিক্ত সচিব। এরই মধ্যে ওই চাবি-কাণ্ড!
চাবি-পর্বের পরে রাজা রামমোহন ব্লকে প্রশাসনিক কর্তাদের হাতের কাছে পেয়ে ওয়ার্ডে অবাঞ্ছিত ভিড় নিয়ে তাঁর ক্ষোভের কথা জানান প্রবীণ এক চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘‘ওয়ার্ডে রোগী পিছু পাঁচ-দশ জন করে লোক। চিকিৎসা করব কী ভাবে?’’ সে কথা শুনে লিফটের কাছে রোগীর পরিজনেদের কার্ড দেখতে বলেন নভেন্দ্র।
পরিদর্শনের শেষে অবশ্য আর তাল কাটেনি। ‘পরীক্ষায়’ উত্তীর্ণ হতে পেরে ঘনিষ্ঠ মহলে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সুপার। আজ, শনিবার যে পরীক্ষায় বসতে চলেছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy