Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Crime

এক শিশুর তিন দাবিদার! প্রসূতির বয়ানে বাবা রহস্যের কিনারা, রয়েছে ধোঁয়াশাও

শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার জট কাটে রহস্যের। শিশুর মা, যিনি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময়ে নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন স্বপ্না মৈত্র হিসাবে, পুলিশের কাছে দেওয়া বয়ানে শিশুকন্যার বাবার নাম বলেন।

দক্ষিন কলকাতার এই হাসপাতালে শিশু কন্যার জন্ম দিয়েছেন স্বপ্না মৈত্র। ছবি: সংগৃহীত।

দক্ষিন কলকাতার এই হাসপাতালে শিশু কন্যার জন্ম দিয়েছেন স্বপ্না মৈত্র। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ১৮:৫৩
Share: Save:

শেষ পর্যন্ত সমাধান হল ‘বাবা’ রহস্যের। রবিবার থেকেই সদ্যোজাত শিশু কন্যার আসল বাবা কে, তা নিয়ে আতান্তরে পড়েছিলেন দক্ষিণ কলকাতার গাঙ্গুলিবাগানের একটি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শিশু জন্মানোর পর থেকে তিন যুবক হাসপাতালে এসে নিজেদের ওই শিশুর ‘বাবা’ হিসাবে দাবি করেন। কে আসল, কে নকল বুঝতে না পেরে পুলিশের দ্বারস্থ হন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার জট কাটে রহস্যের। শিশুর মা, যিনি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময়ে নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন স্বপ্না মৈত্র হিসাবে, পুলিশের কাছে দেওয়া বয়ানে শিশুকন্যার বাবার নাম বলেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, পুলিশ এবং হাসপাতালের চিকিৎসকদের সামনে স্বপ্না জানান যে, তাঁর স্বামীর নাম হর্ষ ক্ষেত্রী। তিনি বাগুইআটি-তেঘরিয়া এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশের কাছে দেওয়া বয়ানে ওই মহিলা জানিয়েছেন, হর্ষের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু দাম্পত্য অশান্তির কারণে তিনি হর্ষের সঙ্গে বেশ কয়েক মাস ধরে থাকছিলেন না। সন্তানসম্ভবা অবস্থায় তিনি চিকিৎসার জন্য গাঙ্গুলিবাগানের ওই হাসপাতালের কাছে রবীন্দ্রপল্লিতে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন স্বপ্না। তাঁর আসল বাড়ি হুগলির উত্তরপাড়ায়।

স্বপ্নার দাবি, গত শনিবার তাঁর বন্ধু দীপঙ্কর পাল তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং প্রয়োজনীয় নথিপত্রে তিনি সই করেন। যদিও স্বপ্না স্পষ্ট করে বলেননি, কেন আত্মীয় হিসাবে সই না করে দীপঙ্কর নিজেকে স্বপ্নার স্বামী হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন? স্বপ্না দাবি করেছেন, তিনি চাননি হর্ষ গোটা বিষয়ের মধ্যে যুক্ত হোন। অন্য দিকে হর্ষ দাবি করেন, তিনি স্বপ্নার হোয়াটস্অ্যাপ আপডেট দেখে জানতে পারেন যে তাঁর স্ত্রী কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। জানতে পারার পরই তিনি তাই হাসপাতালে আসেন নিজের মেয়েকে দেখতে। তবে প্রদীপ রায় নামে তৃতীয় ব্যক্তি সোমবার নিজেকে ওই শিশুকন্যার বাবা বলে পরিচয় দিলেন কেন তা যদিও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। তবে এখনও স্বপ্নাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছুটি দেননি। তাঁর চিকিৎসার প্রয়োজন আছে বলে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: বাবা কে! সদ্যোজাতের পিতৃত্বের দাবি নিয়ে হাসপাতালে তিন জন

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, হর্ষকে নিজের স্বামী হিসাবে স্বীকার করলেও স্বপ্না তাঁদেরকে জানিয়েছেন যে, ‘বাবা’কে যেন শিশুর কাছে যেতে না দেওয়া হয়। স্বপ্না পুলিশকেও জানিয়েছেন যে, তিনি তাঁর পারিবারিক বন্ধুর সঙ্গেই নিজের বাড়িতে ফিরতে চান। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বপ্নার কথা মতোই কাউকে শিশুর কাছে যেতে দিচ্ছেন না। তবে হাসপাতাল সূত্রে খবর, স্বপ্নার বয়ানে ‘বাবা’ রহস্যের কিনারা হলেও, আরও বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে।

যদিও হর্ষ এ দিন বলেন, একটি ক্লাবে তাঁর সঙ্গে স্বপ্নার আলাপ হয়েছিল বছর দেড়েক আগে। তিনি স্বীকার করেন যে, স্বপ্না আগে একটি পানশালায় নর্তকী হিসাবে কাজ করতেন। আলাপের পরে তাঁদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয় বলেও জানান হর্ষ। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, সেই সময়ে স্বপ্না সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন। এর পরেই হর্ষের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন স্বপ্না। শেষে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে চলতি বছরের এপ্রিলে স্বপ্নাকে বিয়ে করেন হর্ষ। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, বিয়ের পরেই স্বপ্না তাঁকে ছেড়ে চলে যান। এর পর থেকে থেকে স্বপ্না দীপঙ্কর পাল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে থাকছিলেন বলে হর্ষ পুলিশকে জানিয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বপ্নার চিকিৎসার খরচ মিটিয়েছেন হর্ষ। তাঁর দেওয়া কাগজপত্র দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হর্ষের নামই বাচ্চার বাবা হিসাবে নথিভুক্ত করেছেন।

আরও পড়ুন: হাসপাতালে লিফট কেন বন্ধ মাঝপথে, রিপোর্ট পেশ

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Hospital Mystery Kolkata Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy