অঘটন: দুর্ঘটনাস্থলের সামনে তদন্তকারীরা। (ইনসেটে) পৌলোমী সাহা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হল শিশুরোগ বিভাগের স্নাতকোত্তরের পড়ুয়া এক তরুণীর। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম পৌলোমী সাহা (৩১)।
আর জি করের জরুরি বিভাগে ঢোকার জন্য একটি র্যাম্প রয়েছে। তার কাছে রয়েছে রোগীর পরিজন ও চিকিৎসকদের দেখা করার একটি জায়গা। সূত্রের খবর, সেই জায়গারই রেলিংয়ের উপরে শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ ওই ছাত্রীর দেহ আছড়ে পড়ে। ঘটনাস্থলের কাছেই রয়েছে আর জি কর পুলিশ ফাঁড়ির কর্মীদের বসার জায়গা। তার উল্টো দিকে রোগীর পরিজনদের প্রতীক্ষালয়। আচমকা জোরে আওয়াজ পেয়ে সকলে ঘটনাস্থলের দিকে ছুটে যান। কালো রঙের জিনস এবং সাদা রঙের জামা পরিহিতা ওই তরুণীর দেহ তখন রক্তে ভেসে যাচ্ছে। হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা দ্রুত ট্রলি এনে তাতে তরুণীকে তুলে জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, পৌলোমী আত্মঘাতী হয়েছেন।
এ দিন জরুরি বিভাগের সামনে গিয়ে দেখা যায়, স্ট্রেচারের উপরে তরুণীর দেহ সাদা চাদর দিয়ে ঢাকা রয়েছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, ন’তলার ছাদ থেকে পড়ায় ওই তরুণীর নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। বাঁ পা-ও সম্ভবত ভেঙে গিয়েছিল।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ওই তরুণী প্রবাসী বাঙালি। অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে বড় হয়েছেন তিনি। পৌলোমীর ফেসবুক প্রোফাইল অনুযায়ী, বিশাখাপত্তনমের শ্রীচৈতন্য কলেজের ছাত্রী ছিলেন তিনি। অন্ধ্র মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করার পরে আর জি করের শিশুরোগ বিভাগে স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য ২০১৮ সালের মে মাসে ভর্তি হন তিনি।
আর জি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পৌলোমী কয়েক মাস ধরে অবসাদে ভুগছিলেন। এর জন্য মনোরোগ চিকিৎসককেও তিনি দেখাচ্ছিলেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন পৌলোমীর বাবা-মা। চিকিৎসার জন্য এক মাস তাঁকে ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বলে সূত্রের খবর। সম্প্রতি তিনি কাজে যোগ দিয়েছিলেন। এ দিন ঘটনার মিনিট পনেরো আগে এক রক্ষী তাঁকে লিফটে করে উপরে উঠতে দেখেছিলেন। জরুরি বিভাগেরই একটি তলায় শিশুরোগের চিকিৎসা হয়। কিন্তু পৌলোমী বিভাগে না গিয়ে সোজা ছাদে চলে যান বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। করোনার জেরে হাসপাতালে এখন আগের মতো ভিড় নেই। ফলে ওই চিকিৎসক সকলের নজর এড়িয়ে ছাদে চলে যান। তবে বিষয়টি রক্ষীদের নজরে পড়া উচিত ছিল বলে মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। এক জুনিয়র চিকিৎসক বলেন, ‘‘দিদি হাসিখুশি স্বভাবের ছিলেন। এই ঘটনা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। মনে কষ্ট থাকলে আমাদের বলতে পারতেন।’’
আরও পড়ুন: তালাবন্দি শহরে চাবি ঘোরার অপেক্ষায় বন্ধ ঘড়ি
মেয়ে আর জি করে যোগ দেওয়ার পরে উল্টোডাঙায় থাকতেন তাঁর বাবা-মা। মেয়ে পড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে তাঁরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। সন্ধ্যায় তাঁদের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy