Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Molestation

যৌন নিগ্রহে অভিযুক্তকে লুকিয়ে রাখার প্রতিবাদ, খুন কিশোর

মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দত্তপুকুর থানার ক্ষুদিরামপল্লি এলাকায়। মৃত কিশোরের নাম যুগল দাস (১৫)। তাকে খুনের অভিযোগে সাধন-সহ তার দুই ছেলে এবং স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

যুগল দাস।

যুগল দাস। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২১ ০৬:২০
Share: Save:

বালক ও কিশোরদের যৌন নিগ্রহে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে নিজের বাড়িতে লুকিয়ে থাকতে সাহায্য করেছিল সাধন দাস নামে এলাকারই এক বাসিন্দা। সাধনের বাড়ি গিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এক কিশোর-সহ কয়েক জন তার প্রতিবাদ করে। অভিযোগ, তার জেরেই বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে ওই পরীক্ষার্থীকে।

পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দত্তপুকুর থানার ক্ষুদিরামপল্লি এলাকায়। মৃত কিশোরের নাম যুগল দাস (১৫)। তাকে খুনের অভিযোগে সাধন-সহ তার দুই ছেলে এবং স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি ধৃতদের নাম সুরজিৎ দাস, ইন্দ্রজিৎ দাস এবং অণিমা দাস। পাশাপাশি, যৌন নিগ্রহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে শম্ভু বাগ ওরফে সাধু নামে এক জনকে। তার বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। দু’টি মামলায় ধৃত পাঁচ জনকে বুধবার বারাসত জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রেলের ঠিকাকর্মী শম্ভু অবিবাহিত ছিল। মাঝেমধ্যে সে তন্ত্রসাধনা করত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই সে এলাকার বালক ও কিশোরদের নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে যৌন নিগ্রহ করত। কখনও খাবার বা টাকা, কখনও কাজের প্রলোভন দেখিয়ে সে তাদের বাড়িতে ডাকত বলে অভিযোগ। দিন কয়েক আগে বিষয়টি জানাজানি হয়। এ নিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধছিল বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। অভিযোগ, মঙ্গলবার বিকেলেও শম্ভু দুই কিশোরকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে যৌন নিগ্রহের চেষ্টা করে। ওই দু’জন পালিয়ে এসে এলাকার বাসিন্দাদের সব জানিয়ে দেয়। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। ইতিমধ্যে ক্ষিপ্ত লোকজন শম্ভুর বাড়িতে গিয়েও হাজির হয়। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, বেগতিক বুঝে শম্ভু কাছেই সাধন দাসের বাড়ির ছাদে গিয়ে লুকিয়ে থাকে। পুলিশ সেখান থেকেই শম্ভুকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ জানিয়েছে, শম্ভুকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পরে যুগল এবং আরও কয়েক জন কিশোর সাধনের বাড়িতে যায়। শম্ভুকে কেন ওই বাড়িতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল, তা জানতে চায় তারা। এর পরেই সাধনের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তাদের বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, সাধন এবং তার বাড়ির লোকজন বাঁশ দিয়ে ওই কিশোরদের এলোপাথাড়ি মারতে শুরু করে। তাতে যুগল জখম হয়। খবর পেয়ে এলাকার অন্য বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাতেই যুগলকে বারাসত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকায়।

যুগলের মা অঞ্জলি দাস বুধবার বলেন, ‘‘ওকে যারা নৃশংস ভাবে পিটিয়ে মারল তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ওদের যেন ক্ষমা করা না হয়। কোলটা খালি করে দিল। কী নিয়ে বাঁচব?’’ বাবা বুদো দাস বলেন, ‘‘শম্ভু অল্পবয়সি ছেলেদের সঙ্গে অশ্লীল কাজ করত। আমার বড় ছেলের এটাই অপরাধ যে ও প্রতিবাদ করেছিল।’’ যুগলের বন্ধুরা বলে, ‘‘ও বরাবরই অন্যায়ের প্রতিবাদ করত। স্কুলে যাতায়াতের পথে ও থাকলে ভরসা পেতাম। সেই ভরসাটাই হারিয়ে গেল চিরদিনের মতো।’’

অন্য বিষয়গুলি:

arrest Molestation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy