Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

আট মাস পরে খুনের মামলা

বিয়েবাড়িতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যান এক যুবক। আট মাস আগের ঘটনা। কিন্তু এত দিন পর ময়না-তদন্ত রিপোর্ট বলল, বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছিল ধীরাজ সাউ নামে গড়িয়াহাটের পণ্ডিতিয়া রোডের বাসিন্দা, বছর আঠাশের ওই যুবকের।

ধীরাজ সাউ

ধীরাজ সাউ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৭ ০১:১০
Share: Save:

বিয়েবাড়িতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যান এক যুবক। আট মাস আগের ঘটনা। কিন্তু এত দিন পর ময়না-তদন্ত রিপোর্ট বলল, বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছিল ধীরাজ সাউ নামে গড়িয়াহাটের পণ্ডিতিয়া রোডের বাসিন্দা, বছর আঠাশের ওই যুবকের।

ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে শুক্রবার ধীরাজের মা আশা সাউ পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, যাঁরা কসবায় ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ করেছিল, তাঁরাই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাঁর ছেলেকে খুন করেছে। কসবা থানার পুলিশ খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।

পুলিশ জানায়, বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল গত বছরের ১৩ জুলাই। সেই রাতেই দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান ধীরাজ। পুলিশ তখন অস্বাভাবিক মৃত্যুর একটি মামলা রুজু করেছিল।

আরও পড়ুন: চাহিদা কমছে হলুদ ট্যাক্সির

ধীরাজের মা যাঁদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছেন, তাঁদের এবং আরও কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তদন্তকারীরা। এ ক্ষেত্রে ওই বিয়ের পাত্র ও পাত্রী— দু’জনের বাড়ির পক্ষ থেকে করা অনুষ্ঠানের ভিডিও রেকর্ডিং খতিয়ে দেখবে পুলিশ। ওই চলমান ছবি থেকে কোনও সূত্র মিলতে পারে, এই আশায়।

কিন্তু আট মাস পরে ময়না-তদন্ত রিপোর্ট এল কেন? গোড়ায় পুলিশ একটুও আঁচ পেল না কেন? পুলিশ সূত্রে খবর, ধীরাজের ময়না-তদন্ত হয় কাঁটাপুকুর মর্গে। সেখান থেকে ময়না-তদন্ত রিপোর্ট আসতে অনেক সময়েই পাঁচ-ছ’মাস বা বেশি লেগে যায়। তা ছাড়া, আগে ধীরাজের পরিবার কোনও অভিযোগ করেনি। তাঁরা ময়না-তদন্ত রিপোর্ট হাতে পান ১৪ ফেব্রুয়ারি। তার পরে আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে শুক্রবার অভিযোগ করেন।

পুলিশ জানায়, বি টেক পাশ করে ধীরাজ এম টেকের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পাশাপাশি তিনি গৃহশিক্ষকতা করতেন। আশাদেবী যে তিন জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন, তাঁদের সঙ্গে ধীরাজদের পরিবারের সম্পত্তি নিয়ে গণ্ডগোল চলছিল। ওই তিন জনের এক জনেরই বিয়ে হয় ১৩ জুলাই। ধীরাজের বোন বন্দনা সাউ বলেন, ‘‘বিয়ের ক’দিন আগে ওরা আমাদের বাড়িতে এসে পুরনো শত্রুতার কথা ভুলে যেতে বলে দাদাকে নেমন্তন্ন করে যায়।’’ বন্দনার কথায়, ‘‘১৩ জুলাই রাতে বিয়েবাড়ি থেকে ফোন করে জানানো হয়, দাদা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছে। গোড়াতেই সন্দেহ ছিল, দাদাকে খুন করা হয়েছে।’’

তবে পুলিশের সূত্রের খবর, বিয়েবাড়িতে মত্ত অবস্থায় নাচগান করেন ধীরাজ, পরে তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েক জন ছাত্রকে জানান, তাঁর বুকে ব্যথা হচ্ছে। তদন্তকারীরা জানান, অনেক ক্ষেত্রে মদ্যপানের ফলে মৃত্যুতে পাকস্থলীতে হেমারেজ বা ক্ষত হলে অটোপসি সার্জন রিপোর্টে বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর কথা উল্লেখ করেন। তা ছাড়া, ময়না-তদন্তে সন্দেহজনক কিছু পেলে অটোপসি সার্জন সাধারণত মৌখিক ভাবে পুলিশকে আগেই সতর্ক করে দেন। ধীরাজের ক্ষেত্রে সে রকম হয়নি। গোয়েন্দাদের বক্তব্য, ধীরাজের পাকস্থলীর রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও আসেনি, সেটা তদন্তে বড় ভূমিকা নিতে পারে।

অন্য বিষয়গুলি:

Murder case Delayed File
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE