প্রতীকী ছবি।
মাধ্যমিক পরীক্ষার বেশ কিছুটা পরে শুরু হয়েছিল আইসিএসই এবং সিবিএসই পরীক্ষা। তাই সেই সব পরীক্ষার ফল বেরোতে এখনও কিছুটা দেরি আছে। এ দিকে, মাধ্যমিকের ফল বেরোনোর পরে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই এ বছর আইসিএসই ও সিবিএসই বোর্ড থেকে দশমের পরীক্ষায় পাশ করে কোনও ইচ্ছুক পড়ুয়া সরকারি বা সরকার-পোষিত স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে আদৌ ভর্তি হতে পারবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। তবে শহরের বেশ কিছু সরকারি ও সরকার-পোষিত স্কুল জানাচ্ছে, এ ক্ষেত্রে ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীদের জন্য সেই ব্যবস্থা করে রাখা হবে।
সরকারি ও সরকার-পোষিত স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, সংখ্যায় কম হলেও কিছু ছাত্রছাত্রী আছে, যারা সিবিএসই এবং আইসিএসই বোর্ড থেকে রাজ্যের সরকারি এবং সরকার-পোষিত স্কুলগুলিতে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে আসে। কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানান, প্রধানত খরচের কারণেই অনেকে সরকারি স্কুলে পড়তে আসে। হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত জানান, সরকারি স্কুলে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তির খরচ ২৯৫ টাকা। অন্য দিকে, বেসরকারি স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তির খরচ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। দক্ষিণ কলকাতার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তির খরচ এক লক্ষ পাঁচ হাজার টাকা। বেসরকারি কিছু স্কুলে একাদশে পুনরায় ভর্তির জন্য দিতে হয় ৫১ হাজার টাকা। ফি-র এই পার্থক্যের জন্যই অনেকে বেসরকারি স্কুল ছেড়ে সরকারি স্কুলে ভর্তি হতে আসে।
কয়েকটি সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মতে, ‘‘অনেক অভিভাবকেরই লক্ষ্য থাকে, সন্তানকে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করা। উচ্চ মাধ্যমিকের ফল যেমনই হোক না কেন, তাঁরা একাদশ শ্রেণিতে ছেলেমেয়েকে সরকারি স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। আর বেসরকারি স্কুলে পড়াতে যে অতিরিক্ত টাকা খরচ হত, সেটা ইঞ্জিনিয়ারিং বা মেডিক্যাল পড়ানোর প্রশিক্ষণ দিতে খরচ করেন। মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া বেসরকারি সংস্থাগুলিতে পড়ানোর খরচ তো অনেক।’’ শুভ্রজিৎ জানান, এ বার তাই বেসরকারি স্কুল থেকে কোনও পড়ুয়া সরকারি স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে যদি ভর্তি হতে চায়, তা হলে সরকারি স্কুলে ভর্তির শেষ দিনে সে কথা জানিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখতে হবে। সেই চিঠির ভিত্তিতেই স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষা দফতরকে সে কথা জানাবেন।
করোনা-কালে অনেকের পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ায় বেসরকারি স্কুলে পড়ানোর খরচ টানতে পারছেন না অভিভাবকেরা— এমনটাও দেখা যাচ্ছে। বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকদের সংগঠন ‘ইউনাইটেড গার্ডিয়ান্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর রাজ্য সম্পাদক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘করোনা-কালে ফি কম বলে সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের ভর্তি করা হচ্ছে বলে দেখা গিয়েছে। গত বছর ফি নিয়ে যে ভাবে বেসরকারি স্কুলগুলি স্বেচ্ছাচারী মনোভাব দেখিয়েছে, তাতে অনেকেই এ বার ছেলেমেয়েদের সরকারি স্কুলে ভর্তি করাতে আগ্রহী। কিন্তু সরকারি স্কুলে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই সরকারি স্কুলগুলি পড়তে চাওয়া ছেলেমেয়েদের জন্য কিছু আসন সংরক্ষিত করে রাখলে ভাল হয়।’’
শিয়ালদহ টাকি বয়েজ়ের প্রধান শিক্ষিকা স্বাগতা বসাক এবং মিত্র ইনস্টিটিউশন, ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দেজানিয়েছেন, তাঁদের স্কুলে কিছু পড়ুয়া আছে, যারা বেসরকারি স্কুল থেকে এসেছে। তাই তাঁরাও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কিছু আসন আলাদা করে বেসরকারি স্কুল থেকে আসা পড়ুয়াদের জন্য রেখে দেবেন।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy