বাড়ছে এটিএম প্রতারণার অঙ্ক। —ফাইল ছবি
শুধু যাদবপুর নয়। এ বার একই রকম প্রতারণার শিকার হয়ে পুলিশে অভিযোগ জানালেন কড়েয়া, নেতাজি নগর এবং চারুমার্কেট এলাকার একাধিক ব্যাঙ্ক গ্রাহক। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মুরলিধর শর্মা মঙ্গলবার জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত যাদবপুরেই অভিযোগ জমা পড়েছে ৪৪টি। ১৩টি জমা পড়েছে চারু মার্কেট থানায়। এই দু’টি থানা এলাকা মিলে প্রায় ১২ লাখ টাকার প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
মুরলীধর এ দিন বলেন, ‘‘সমস্ত ক্ষেত্রেই টাকা তোলা হয়েছে দক্ষিণ দিল্লির কয়েকটি এটিএম থেকে। সেখানে ইতিমধ্যেই পৌঁছেছে কলকাতা পুলিশের দল। ওই এটিএমগুলির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে মিলেছে এক প্রতারকের মুখ ঢাকা ছবি।’’ তাকে দেখে প্রাথমিক ভাবে গোয়েন্দাদের ধারণা, প্রতারক বিদেশি, রোমানীয় বা তুরষ্কের নাগরিক হতে পারে।
লালবাজার সূত্রে খবর, যে দু’টি এটিএম কিয়স্ক প্রতারকরা ব্যবহার করেছিল ‘স্কিমিং ডিভাইস’ বসিয়ে গ্রাহকদের তথ্য চুরি করতে, সেগুলি একই ব্যাঙ্কের। একটি যাদবপুরের সুলেখায়, অন্যটি টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ওই দু’টি এটিএমেই ‘অ্যান্টি স্কিমিং ডিভাইস’ বসানো হয় এ বছরের জুন মাসে। চিপ কার্ড প্রযুক্তিও বসানো হয় ওই সময়েই। কারণ, তার আগে এপ্রিল মাসে ওই দু’টি এটিএমেই ‘স্কিমিং ডিভাইস’ পাওয়া গিয়েছিল। এ দিন গোয়েন্দা প্রধান বলেন, ‘‘এখনও শহরে প্রায় ২৫০টি এটিএম রয়েছে যেখানে কোনও নিরাপত্তা কর্মী নেই। পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে ওই এটিএমগুলোতে পাহারাদারির ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।’’ তিনি এ দিনও নিয়মিত ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ডের পিন পরিবর্তনে জোর দেন।
আরও পড়ুন: এটিএমে স্কিমার ধরা পড়ার পরেও গ্রাহকদের সতর্ক করেনি ব্যাঙ্ক, বলছে পুলিশ
এ বিষয়ে সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্তও এক মত। তিনি বলেন, “মাঝেমাঝেই এটিএম পিন নম্বর বদলানো উচিত। নিরাপত্তারক্ষী না থাকা এটিএম কাউন্টারগুলি এড়িয়ে চলাই ভাল। টাকা গায়েব হলে, সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করা উচিত।”
অন্য দিকে, এ দিনও ব্যাঙ্ক থেকে টাকা গায়েব হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। নোটেন্দ্র পাত্র নামে এক ব্যক্তি এ দিন যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। আদতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা নোটেন্দ্র পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী। যাদবপুর সুলেখার কাছে ভাড়া থাকেন। তিনি দু’দিন আগে বাড়ি গিয়েছিলেন। সেই সময়ে বেশ কয়েকটি মেসেজ তাঁর মোবাইলে আসে। তিনি লক্ষ করেননি। মঙ্গলবার কলকাতায় ফেরার পর তিনি এই প্রতারণার কথা জানতে পারেন। তার আগে ব্যাঙ্কের পাঠানো মেসেজ দেখে জানতে পারেন, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৬৯ হাজার টাকা উঠে গিয়েছে ১ ডিসেম্বর-৩ ডিসেম্বরের মধ্যে।
আরও পড়ুন: আসানসোলে পুলিশকে গুলি করা সোনু পাকড়াও হাওড়া থেকে, মোবাইলের ভিডিয়ো দেখে তাজ্জব পুলিশ
মঙ্গলবার সকালেও দিল্লির রাজীব সার্কল এবং গ্রেটার কৈলাসের এটিএম থেকে ওই টাকা উঠেছে। মুরলিধর শর্মাও জানান, এখনও টাকা তোলার ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন, ‘‘দিল্লি পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতা পুলিশের দল পাকড়াও করার চেষ্টা করছে ওই বিদেশি প্রতারকদের।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy