ডাকাতির পরে ছড়িয়ে রয়েছে জিনিসপত্র। বেলেঘাটায়। নিজস্ব চিত্র
বেলেঘাটার চাউলপট্টি রোডে এক বালিকাকে বেঁধে রেখে ডাকাতির ২৪ ঘণ্টা পরেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। দু’দিন ধরে বাড়ির সদস্যদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এই ঘটনার পিছনে সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদের ভূমিকা রয়েছে বলে সন্দেহ পুলিশের। ডাকাতিতে পরিবারের কেউ সরাসরি জড়িত কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার দিনেদুপুরে ওই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ দোতলা বাড়ির নীচের তলার ঘরে একাই ছিল দশ বছরের আস্থা দাস। বিছানায় শুয়ে মোবাইলে গেম খেলছিল সে। উপরের তলায় রান্নাঘরে কাজ করছিলেন তার মা ও ব়ড় জেঠিমা। হঠাৎ আস্থার ঘরে ঢুকে পড়ে এক দুষ্কৃতী। তার পরে তার হাত-পা-মুখ বেঁধে, মুখে বালিশ চাপা দিয়ে গয়না ও নগদ টাকা নিয়ে চম্পট দেয়। ওই ঘটনার পরে সে দিন বিকেলে পুলিশের কুকুর এনে ওই বাড়ি ও সংলগ্ন এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়। কুকুরটি চাউলপট্টির বাড়ি থেকে বেলেঘাটার জোড়ামন্দির পর্যন্ত ছুটে গিয়েছিল। দুষ্কৃতীর হদিস পেতে জোড়ামন্দিরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। ডিসি (ইএসডি) দেবস্মিতা দাস ও বেলেঘাটা থানার আধিকারিকেরা আস্থাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অপরাধীর মুখের স্কেচও আঁকান।
পুলিশ জানিয়েছে, এখনও আতঙ্ক কাটেনি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী আস্থার। বুধবারও স্কুলে যায়নি সে। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আস্থা বলে, ‘‘তখন বিছানায় শুয়ে মোবাইলে গেম খেলছিলাম। হঠাৎ গোঁফওয়ালা এক জন ঘরে ঢুকেই আমার গলা চেপে ধরল। বলল, ‘চিৎকার করলে বন্দুক বার করে গুলি করে দেব।’ এর পরে আমাকে বিছানা থেকে মেঝেতে ফেলে দিল। মুখ-হাত বেঁধে আলমারি খুলে টাকা আর গয়না নিয়ে চলে গেল।’’
পুলিশ জানিয়েছে, আস্থার বাবা মহেশবাবুরা তিন ভাই। বড়দা রবীন্দ্র ও মেজদা উপেন্দ্র মারা গিয়েছেন। বেলেঘাটার ওই বাড়ির নীচের তলার দু’টি ঘরে মহেশবাবু মেয়ে আস্থা ও স্ত্রী গুড়িয়াকে নিয়ে থাকেন। আস্থার বড় জেঠিমা কাঞ্চন দাস ও মেজ জেঠিমা অনিতা দাসও নীচের তলাতেই থাকেন। বড় জেঠিমার দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। অবিবাহিতা বড় মেয়ে মায়ের সঙ্গেই থাকেন। অনিতাদেবীর সঙ্গে থাকেন তাঁর দুই ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই পারিবারিক বিবাদ চলছে মহেশবাবুদের। তদন্তকারীরা আরও জানান, মহেশবাবুর আদি বাড়ি বিহারের বৈশালীতে। সেখানকার সম্পত্তি বিক্রি নিয়েও তাঁদের পারিবারিক সমস্যা চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, মহেশবাবুর বাবা, প্রয়াত জয়কুসুম দাস চাউলপট্টি রোডে একটি গুদাম ভাড়া করে ব্যবসা করতেন। সেটির দখল নিয়েও পারিবারিক বিবাদ রয়েছে বলে জেনেছে পুলিশ। গোয়েন্দা-প্রধান বিশাল গর্গ বলেন, ‘‘বাড়ির সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অপরাধীর ছবি আঁকানো হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy