Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Medicines

ওষুধ অমিল ন্যায্য মূল্যের দোকানে, ভোগান্তি

শহরের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের যে দোকানগুলি চলে, সেগুলির নিয়ন্ত্রণ সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের হাতে থাকে না।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৫৪
Share: Save:

দোকান আছে। দোকানের সামনে মানুষের দীর্ঘ লাইনও আছে। কিন্তু ভিতরে ওষুধ আদৌ কি আছে? সরকারি হাসপাতালের ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান ঘিরে এই প্রশ্নটাই এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।

এক মাসের শিশু কোলে দোকানের সিঁড়িতে বসে রয়েছেন মা। শিশুটির বাবা এসে বললেন, ‘‘ওষুধ পেলাম না। বাড়ি ফিরে খোঁজ করতে হবে।’’ টালিগঞ্জের সোনু সাহা তাঁর এক মাসের ছেলেকে দেখাতে এনেছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালে। শিশুটি শ্বাস নেওয়ার সময়ে সোঁ-সোঁ করে আওয়াজ হচ্ছে। চিকিৎসক প্রেসক্রিপশনে নাকের একটি স্প্রে লিখেছিলেন। কিন্তু ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে তা মেলেনি। সোনু বললেন, ‘‘হাসপাতালের চিকিৎসকের লেখা ওষুধই পেলাম না। বাইরে বেশি টাকা দিয়ে কিনতে হবে।’’

শহরের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের যে দোকানগুলি চলে, সেগুলির নিয়ন্ত্রণ সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের হাতে থাকে না। রাজ্যের স্বাস্থ্য-অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বললেন, ‘‘সরকারি হাসপাতাল থেকেই বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়। কিন্তু কো‌নও ক্ষেত্রে তা পাওয়া না গেলে ন্যায্য মূল্যের দোকানে যান লোকজন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ন্যায্য মূল্যের দোকানে ৪২টি অতি প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখতেই হবে বলে নির্দেশিকা রয়েছে। তার বাইরেও অনেক ওষুধ রয়েছে। সব ওষুধ সব জায়গায় থাকবে, তেমনটা সম্ভব না-ও হতে পারে।’’

আরও পড়ুন: গন্তব্য শহরের আকাশ কুয়াশায় মোড়া, রাতভর অপেক্ষা বিমানেই

আরও পড়ুন: সরকারি ওষুধ নষ্ট ঠেকাতে চিঠি

হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত ছেলেকে নিয়ে সুন্দরবন থেকে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন মা রাজমা বিবি। পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। টাকা ধার করে হাসপাতালে এসেছেন। ন্যায্য মূল্যের দোকানে সব ওষুধ মেলেনি। মহিলার আক্ষেপ, ‘‘এখানে অনেকটা কম টাকা লাগে ওষুধ কিনতে। কিন্তু এ বার কী করব! বাইরে তো এত ছাড় দেবে না।’’

সরকারি হাসপাতালের ন্যায্য মূল্যের দোকানগুলিতে ওষুধের দামে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ছাড় মেলে। কোথাও মেলে তারও বেশি। কিন্তু অধিকাংশ সময়েই প্রেসক্রিপশনে লেখা সব ওষুধ মেলে না বলে অভিযোগ। অগত্যা বেশি টাকা দিয়ে ওষুধ কিনতে হয় বাইরের দোকান থেকে। সেখানে মেরেকেটে ১০-২০ শতাংশ ছাড় মেলে। কোথাও আবার এক টাকাও ছাড় মেলে না।

সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা যে ওষুধ লিখছেন, তা সেখানকার ন্যায্য মূল্যের দোকানে থাকা উচিত বলেই মনে করেন এসএসকেএমে চিকিৎসা করাতে আসা উমা মণ্ডল। তিনিও ছ’টির মধ্যে চারটি ওষুধ পেয়েছেন। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘যেটুকু ছাড় পেলাম, বাইরে থেকে দু’টি ওষুধ কিনতে গিয়েই তা খরচ হয়ে যাবে।’’ এন আর এসে ভর্তি থাকা স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময়ে ন্যায্য মূল্যের দোকানে গিয়ে গোমড়া মুখে ফিরলেন বজবজের গিয়াসউদ্দিন শেখ। একই অবস্থা চম্পাহাটির বাপন সরকারেরও। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ন্যায্য মূল্যের দোকানে একটি মাত্র ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন। তা-ও পাননি। জোগাড়ের কাজ করা ওই যুবকের কথায়, ‘‘ওষুধটার অনেক দাম। ৫৬.৬ শতাংশ ছাড় দেখে আশা নিয়ে গেলাম। কিন্তু পেলাম না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy