শহরের বিভিন্ন বহুতলের অগ্নি-সুরক্ষা ব্যবস্থার নানা ছবি উঠে এসেছে। প্রতীকী ছবি।
কোথাও বহুতল আবাসন দমকলের ছাড়পত্র পায়নি এখনও। কোথাও আবার দমকলের ছাড়পত্র থাকা নিয়ে আবাসিকদের মনেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কোথাও কোথাও অগ্নি-নির্বাপণের মহড়া দমকলের বিধি মেনে হয়। কোথাও তা হয় না। শহরের বিভিন্ন বহুতলের অগ্নি-সুরক্ষা ব্যবস্থার কী হাল, তা জানতে গিয়ে এমনই নানা ছবি উঠে এসেছে। ওই সমস্ত বিধি ঠিক মতো মেনে চলা জরুরি বলেই জানাচ্ছে দমকল বিভাগ।
দিনকয়েক আগে নিউ আলিপুরের বি এল সাহা রোডের একটি বহুতল আবাসনের ন’তলার ফ্ল্যাটে আগুন লেগেছিল। দমকল আধিকারিকেরা জানান, তাঁদের হোসপাইপের পাশাপাশি আবাসনের হোসপাইপ দিয়েও আগুনে জল দেওয়া হচ্ছিল। সেই সময়ে আবাসনের হোসপাইপের একটি অংশ ফেটে যায়।
নিউ টাউনের একটি আবাসনের আবাসিক সংগঠনের সভাপতি সমীর শর্মার মতে, আগুনের মোকাবিলায় হোসপাইপ-সহ সমস্ত সরঞ্জাম ঠিক মতো কাজ করছে কি না, সে দিকে নিয়মিত নজর রাখা দরকার। তিনি বলেন, ‘‘দিন দশেক আগে আমাদের আবাসনের কাছেই কয়েকটি ঝুপড়িতে আগুন লাগে। আমরা আমাদের হোসপাইপ দিয়ে আগুনে জল দিই। তাতে প্রাথমিক ভাবে আগুনের সঙ্গে মোকাবিলা করা গিয়েছিল। আমাদের সব সময়ে মনে রাখতে হয়, বহুতলে অনেক উঁচুতেও লোকজন থাকেন। জরুরি পরিস্থিতিতে খুব সহজে নীচে নেমে আসা কঠিন।’’
নিউ আলিপুরের ওই আবাসনের আবাসিকদের একাংশের দাবি, অবিলম্বে তাঁদের আবাসনের অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা পরীক্ষা করা হোক। কারণ, তাঁরা শুনেছেন, আবাসনে দমকলের ছাড়পত্রের নবীকরণ আটকে গিয়েছে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থার বেশ কিছু সরঞ্জাম ঠিক মতো কাজ না করার কারণে। যদিও আবাসিক সংগঠনের সম্পাদক জয়দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, দমকলের ছাড়পত্র তাঁদের রয়েছে। আবাসনের ভিতরে ‘ফায়ার পাম্প’, ‘স্প্রিঙ্কলার’-সহ সব ধরনের ব্যবস্থাও কার্যকর রয়েছে। ‘ফায়ার ডোর ক্লোজ়ার’ সংক্রান্ত কিছু ছোটখাটো সমস্যা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সিঁড়িতে ফায়ার ডোর ক্লোজ়ারের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু আলো-বাতাস যাতে না আটকায়, তার জন্য নির্মাণ সংস্থা সাধারণ দরজা বসিয়েছিল। আগুনের ঘটনার পরে দমকল বিভাগের নির্দেশ মেনে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা উন্নত করা হবে। সে দিন হোসপাইপ ফাটেনি। আচমকা ব্যবহারের কারণে পাইপের একটি অংশে ফাটল ধরেছিল।’’
দমকল বিভাগ জানাচ্ছে, আগুনে জল দেওয়া, অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র চালানো এবং স্প্রিঙ্কলারের ব্যবহারের পাশাপাশি আগুন লাগলে উপরের তলাগুলি থেকে মানুষকে সিঁড়ি দিয়ে নামিয়ে আনাটাও একটা বড় দায়িত্ব। আবাসনগুলিতে অগ্নিযুদ্ধের যে মহড়া হয়, তাতে মূলত জলের পাইপ ঠিকমতো কাজ করছে কি না, হুটার বাজছে কি না, স্প্রিঙ্কলার কাজ করছে কি না— সে সবই দেখা হয়। মানুষকে নিরাপদে উপর থেকে সিঁড়ি দিয়ে নামিয়ে আনার মহড়া সব সময়ে সব জায়গায় হয় না। দমকলের এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘আমরা বিভিন্ন আবাসনে গিয়ে মহড়া করাই। আগুন লাগলে কী করণীয়, করে দেখাই। তবে, এর বাইরে মানুষকেও উদ্যোগী হয়ে দমকলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে।’’
নাগেরবাজারের কাছে শ্যামনগরের একটি আবাসনের সম্পাদক রাজেশ গোয়েন্কা জানালেন, তাঁদের আবাসনে সব ধরনের অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে। মাসে দু’বার আবাসিকদের নিয়ে মহড়াও হয়। কিন্তু ওই আবাসন এখনও পর্যন্ত দমকলের ছাড়পত্র পায়নি। তিনি বলেন, ‘‘নির্মাণ সংস্থা সোসাইটিকে আবাসন হস্তান্তর করেনি। তাই আমাদের দমকলের ছাড়পত্র আটকে গিয়েছে। আমরা আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছি।’’ আবার উত্তর কলকাতার খন্না এলাকার একটি বহুতলের বাসিন্দাদের একাংশ জানান, তাঁদের আবাসনে দু’-তিন মাস অন্তর মহড়া হয়। তবে, লোকজনকে উপর থেকে নামানোর মহড়া সেখানে দেখা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy