Advertisement
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

বর্ষবরণের রাতে খোয়া গেল লক্ষাধিক টাকা

বর্ষশেষের রাতে কয়েক দফায় প্রায় এক লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা খুইয়ে থানায় ছুটতে হল দক্ষিণ ২৪ পরগনার পৈলানের বাসিন্দা সুদীপ্ত ঘোষ নামে এক ব্যক্তিকে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২০ ০১:২৭
Share: Save:

বর্ষবরণের আগেই নতুন বছরের উপহার হিসেবে হাতে এসেছিল ক্রেডিট কার্ড। সেটিকে আর্থিক লেনদেনের অ্যাপ্লিকেশন পেটিএমের মাধ্যমে ব্যবহার করতে গিয়েই বিপত্তি। বর্ষশেষের রাতে কয়েক দফায় প্রায় এক লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা খুইয়ে থানায় ছুটতে হল দক্ষিণ ২৪ পরগনার পৈলানের বাসিন্দা সুদীপ্ত ঘোষ নামে এক ব্যক্তিকে। যত ক্ষণে বুঝলেন যে প্রতারিত হয়েছেন, নতুন বছর এসে গিয়েছে!

ঘটনার পরেই বিষ্ণুপুর থানার পাশাপাশি লালবাজারের সাইবার শাখায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সুদীপ্তবাবু। প্রাথমিক তদন্তের পরে বিষ্ণুপুর থানা অবশ্য বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ডায়মন্ড হারবার জেলা সাইবার থানার সাহায্য চেয়েছে। বিষয়টি জানিয়ে তিনি অভিযোগ করেছেন পেটিএম কর্তৃপক্ষের কাছেও। দেশীয় উদ্যোগপতি সংস্থার তৈরি পেটিএম অবশ্য জানিয়েছে, প্রতারিত হওয়ার আগে সুদীপ্তবাবুই ব্যক্তিগত তথ্য জানিয়েছিলেন প্রতারকদের। কলকাতায় জনসংযোগের

দায়িত্বপ্রাপ্ত পেটিএমের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বিষয়টি তবু আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে এ ক্ষেত্রে পেটিএমের কোনও দায় নেই।’’

সুদীপ্তবাবু যদিও দাবি করেছেন, গত রবিবার পেটিএম অ্যাপ্লিকেশনটি নিজের ফোনে ডাউন-লোড করেন তিনি। সদ্য হাতে পাওয়া ক্রেডিট কার্ডটি ব্যবহার করে দেখতে এর পরে সেই কার্ড থেকে দু’দফায় মোট দশ হাজার টাকা তিনি ‘পেটিএম ওয়ালেট’এ তোলেন। তবে পরের দিনই তাঁর কাছে মেসেজ আসে যে সম্পূর্ণ কেওয়াইসি (প্রতারণা রুখতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের চালু করা গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি, এর দ্বারা আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত সংস্থাগুলি নিজের সিস্টেমে গ্রাহকের পরিচিতি তৈরি করে) না করালে তাঁর অ্যাকাউন্টটি ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ব্লক করে দেওয়া হবে। সুদীপ্তবাবুর কথায়, ‘‘যে মেসেজটি এসেছিল সেটি পেটিএমের নাম করে এসেছিল। তাতে যে ফোন নম্বরটি দেওয়া ছিল সেটিতে ফোন করেই আমি প্রতারিত হয়েছি। এখন পেটিএম দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে।’’

তিনি জানান, গত মঙ্গলবার বর্ষশেষের রাতে ওই নম্বর থেকে ফোন করে বলা হয়, ফোনেই কেওয়াইসি করে দেওয়া হবে। সুদীপ্তবাবু বলেন, ‘‘না করলে আমার ওয়ালেটে তোলা ১০ হাজার টাকা চলে যাওয়ার ভয় ছিল। ফোনের অপর প্রান্তের লোক যে ক্রেডিট কার্ডটি আমি পেটিএমের সঙ্গে যুক্ত করেছিলাম তার নানা তথ্য জেনে নেয়। কার্ডটি আমার স্ত্রীর নামে। তাঁর নাম, ঠিকানা, কার্ডের নম্বর সমস্ত বলে দিই। ওটিপিও জেনে নেন তিনি। পেটিএমের লোক ভেবে এক বারও সন্দেহ হয়নি। প্রথম দু’বার ২০ হাজার টাকা করে কেটে নিল। এর পরে এক বার ৩৮ হাজার আর এক বার ৮০ হাজার টাকা তুলে নিল। পরে ওয়ালেটের ১০ হাজার টাকাও নিয়ে নিল। গোটাটাই চোখের নিমেষে হল।’’

ক্রেডিট কার্ডটি যে ব্যাঙ্কের এর পরে সেখান থেকে ফোন আসে সুদীপ্তবাবুর কাছে। দ্রুত কার্ড বন্ধ করিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন

সুদীপ্তবাবু। যে ফোন থেকে প্রতারণা করা হয়েছে, সেটির নম্বর এবং টাওয়ার লোকেশন ধরে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে পুলিশের দাবি। পেটিএম কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও তাঁরা যোগাযোগ করছেন। কলকাতা পুলিশের সাইবার শাখার এক কর্তা যদিও বলেন, ‘‘বারবার বলা সত্ত্বেও, কোনও না কোনও ভাবে ঠিকই ওটিপি বা ব্যক্তিগত তথ্য বলে দিয়ে গ্রাহকেরা প্রতারিত হচ্ছেন। অনলাইনে পাওয়া বা মেসেজে আসা কোনও হেল্পলাইন নম্বরকে বিশ্বাস না করতে বলা হয়েছে বারবার। তবু গ্রাহককে বোকা বানাচ্ছে প্রতারকেরা। সতর্ক না হলে কিছুই করার নেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Pailan Online Cheating Paytm
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy