Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Kolkata

নিয়ম মেনেই চলছিল জেরা, দাবি পুলিশের

হরিদেবপুরের বাসিন্দা ওই ব্যক্তিকে তদন্তকারীরা জেরা শুরু করেন। আচমকাই তিনি চেয়ারে ঢলে পড়েন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২১ ০৭:২১
Share: Save:

জেরা করার সময়ে বৌবাজার থানায় এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের বক্তব্য, নিয়ম মেনেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। হঠাৎ অসুস্থ বোধ করায় ওই ব্যক্তিকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। তবু থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের কাছে লালবাজার রিপোর্ট চেয়েছে। সোমবার একটি প্রতারণার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল চিটফান্ড-কর্তা, বছর ষাটেকের সুব্রত পালকে। সেখানে হরিদেবপুরের বাসিন্দা ওই ব্যক্তিকে তদন্তকারীরা জেরা শুরু করেন। আচমকাই তিনি চেয়ারে ঢলে পড়েন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এই ঘটনায় পুলিশের কর্তব্যে গাফিলতি ছিল কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত মৃতের পরিবার কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। মৃতের মেয়ে বলেন, ‘‘আইনজীবীর পরামর্শ ছাড়া কিছু বলব না।” পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ আগেও উঠেছে। ২০১৫ সালে বড়তলা থানায় বন্দি ভূষণ দেশমুখ নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। গুলি চলার ঘটনায় মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুলিশ দাবি করেছিল, পেটের গোলমালেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্টে দেখা যায়, মৃত্যু হয়েছে ‘মারধরে’ ।

সিঁথি থানায় পুলিশি হেফাজতে এক জনের মৃত্যু হয় ২০১৭-র ফেব্রুয়ারিতে। দমদমের কালীচরণ শেঠ লেনের বাসিন্দা স্নেহময় দে-র বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে ২৬ ফেব্রুয়ারি তাঁকে থানায় ডাকে পুলিশ। সন্ধ্যায় স্নেহময়বাবু অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে পরিবারে খবর পাঠানো হয়। পরে মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। স্ত্রীর দাবি, মৃত অবস্থাতেই থানা থেকে তাঁর স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। গত বছর ফেব্রুয়ারিতেই এই সিঁথি থানায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয়েছিল রাজকুমার সাউ নামে এক ব্যক্তির। একটি ঘটনার তদন্তে পুলিশ তাঁকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। পরিবারের দাবি, পুলিশি হেফাজতে মারধরে মৃত্যু হয়েছিল রাজকুমারের।

এর পরেই লালবাজারের তরফে থানাগুলিকে সতর্ক হতে একাধিক নির্দেশ দেওয়া হয়। বলা হয়, সেরেস্তা, মালখানা-সহ থানার যেখানে অভিযুক্তদের এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, সেখানে সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে। নজরদারি ক্যামেরার ভিডিয়ো নিয়ম করে লালবাজারে পাঠানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের দ্রুত জানাতেও থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তদন্তকারী-সহ কারা কারা উপস্থিত থাকছেন, তা-ও জানাতে বলা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা ব্যক্তিদের প্রথমেই স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা বলা হয় নির্দেশে।

লালবাজারের শীর্ষ কর্তারা কেউই এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাননি। তবে পুলিশের দাবি, সোমবার সব নিয়ম মানা হয়েছিল। পুলিশের দাবি, তিন সদস্যের মেডিক্যাল টিম দেহের ময়না-তদন্ত করেছে। তার ভিডিয়োগ্রাফি হয়েছে। পুলিশের অনুমান, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তবে ময়না-তদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Death Kolkata Boubazar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE