স্বপনকুমার রায়
প্রৌঢ়ের অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার সকালে। তার আগেই সোমবার মাঝরাতে নাগেরবাজারের এক বেসরকারি হাসপাতালের উঠোনে মিলল তাঁর রক্তাক্ত দেহ। মৃতের নাম স্বপনকুমার রায় (৬১)। দমদম থানার পুলিশের অনুমান, হাসপাতালের সাততলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই প্রৌঢ়।
এমন ঘটনায় স্তম্ভিত স্বপনবাবুর পরিবারের লোকজন। হাসপাতালের নিরাপত্তা এড়িয়ে ছাদে গিয়ে তিনি কী ভাবে ঝাঁপ দিলেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠানো হবে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাফাই, নিরাপত্তারক্ষীদের জায়গা বদলের সুযোগ নিয়ে ছাদে উঠে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি।
স্বপনবাবুর বাড়ি দমদমের এম সি গার্ডেন রোডে। তিনি কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের (এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া) অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। বাড়ির লোকেরা জানান, প্রস্টেটের কিছু সমস্যায় ভুগছিলেন স্বপনবাবু। ওই হাসপাতালেই এর আগে দু’বার অস্ত্রোপচার হয়েছে তাঁর। গত বৃহস্পতিবার ফের সেখানে ভর্তি হন তিনি। এ দিনই সকালে তাঁর অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার রাত দেড়টা নাগাদ হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা উপর থেকে কিছু পড়ার আওয়াজ পান। ছুটে গিয়ে তাঁরা দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন স্বপনবাবু। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, সাততলা থেকে পড়ার ফলেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। ওই প্রৌঢ় হাসপাতালের ছ’তলায় ভর্তি ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহ ময়না-তদন্তে পাঠায়।
স্বপনবাবুর ছেলে অরুণবাবু জানিয়েছেন, সোমবার রাত দেড়টা নাগাদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ফোন করে বিষয়টি জানান। এত বড় হাসপাতালে নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়িয়ে কী করে তাঁর বাবা ছাদে চলে গেলেন, বুঝতে পারছেন না তিনি। স্বপনবাবুর ভাই কনকবাবু বলেন, ‘‘সুস্থ করার জন্য দাদাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। কিন্তু সেখান থেকে তাঁর দেহ নিয়ে ফিরতে হচ্ছে। হাসপাতালের গাফিলতি ছাড়া এটা আর কিছুই নয়। আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবি করছি। হাসপাতালের বিরুদ্ধে থানার অভিযোগ দায়ের করব।’’
ঘটনায় আতঙ্কিত ওই হাসপাতালে ভর্তি অন্য রোগীদের বাড়ির লোকজন। তাঁদেরও বক্তব্য, সব ব্যবস্থা নিখুঁত হবে আশা করেই তাঁরা বেশি টাকা খরচ করে এই হাসপাতালে পরিজনেদের ভর্তি করেছেন। সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা এমন ঢিলেঢালা হবে কেন?
এই প্রসঙ্গে হাসপাতালের সিইও নিবেদিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের কাছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, দু’জন নিরাপত্তারক্ষী যখন দু’দিকে টহল দিচ্ছিলেন, তখনই স্বপনবাবু ছাদে উঠে যান।’’ অত রাতে ছাদের দরজা খোলা ছিল কেন? নিবেদিতাদেবী বলেন, ‘‘ছাদে আমাদের রান্নাঘর। সারা রাতই প্রায় রান্না হয়। সেই জন্যই দরজা খোলা ছিল।’’ কিন্তু অত রাতে কাদের জন্য রান্না হয়? সেই প্রশ্নের অবশ্য স্পষ্ট উত্তর মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy