প্রবীর দাস।
রাতে ডেকে নিয়ে গিয়ে এক যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল তাঁরই শ্যালক ও তার দলবলের বিরুদ্ধে। রবিবার, দীপাবলির রাতে ঘটনাটি ঘটেছে রবীন্দ্র সরোবর এলাকায়। অভিযোগ, সারা রাত নিখোঁজ থাকার পরে রবীন্দ্র সরোবর থানা থেকে মিটার দশেক দূরে ফুটপাতের উপরে আক্রান্ত যুবককে পড়ে থাকতে দেখা গেলেও সোমবার দুপুরের আগে পর্যন্ত কিছু জানতেই পারেনি পুলিশ! মৃতের মায়ের দাবি, তিনি ছেলের খোঁজে বেরিয়ে তাঁকে ওই অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে থানায় সব জানান। পুলিশ যুবকের দেহ উদ্ধার করে এসএসকেএমে পাঠালে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ময়না-তদন্তের রিপোর্ট আসার পরে মৃতের মায়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার চার যুবকের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। যদিও বুধবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। থানার কাছেই ওই অবস্থায় এক যুবকের পড়ে থাকার খবর তাঁরা আগে কেন পাননি, তা নিয়েও মুখ খুলতে চাননি পুলিশের কেউ।
জানা গিয়েছে, মৃতের নাম প্রবীর দাস (৩৮)। বাড়ি লেক থানা এলাকার রহিম ওস্তাগর রোডে। রবীন্দ্র সরোবরে বিভিন্ন জিনিস ফেরি করতেন প্রবীর। তাঁর স্ত্রী আশা দুই সন্তানকে নিয়ে অন্যত্র ভাড়া থাকেন। প্রবীরের মা কাজল দাসের দাবি, রবিবার রাতে পঞ্চাননতলা রোডে জগন্নাথ পোড়েল নামে এক বন্ধুর বাড়িতে থাকতে যান তাঁর ছেলে। সেখান থেকেই রাতে তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করে বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, সুরজিৎ চক্রবর্তী, বাপি হালদার এবং আশিস গায়েন নামে চার জন। কাজলদেবী বলেন, ‘‘সোমবার ভোরে জগন্নাথের দিদির আমতলার বাড়িতে ভাইফোঁটা নিতে যাওয়ার কথা ছিল প্রবীরের। রবিবার রাতে তাই জগন্নাথের বাড়িতে ছিল ছেলে। ভোরে জগন্নাথ আমাদের বাড়িতে এসে জানান, প্রবীরকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়েছে। ওকে পাওয়া যাচ্ছে না। বেলায় প্রবীরের এক বন্ধু এসে জানান, ওকে ফুটপাতে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। আমি গিয়ে দেখি, ছেলের পোশাক ছেঁড়া, আশপাশে চাপ চাপ রক্ত। জড়ানো কথায় ছেলেই আমায় বলে, কারা ওকে মেরেছে।’’
কিন্তু প্রবীরকে মারধর করা হল কেন? যারা মারল, তারাই বা কারা? কাজলদেবী এ ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু বলতে চাননি। মুখ খোলেননি প্রবীরের স্ত্রী আশাও।
প্রবীরের বন্ধু জগন্নাথের স্ত্রী রত্নার অবশ্য দাবি, পারিবারিক বিবাদের জেরে এই খুন। তিনি বলেন, ‘‘এফআইআরে যাদের নাম রয়েছে, তাদের মধ্যে বিশ্বজিৎ সম্পর্কে প্রবীরের স্ত্রী আশার মাসতুতো ভাই। বাপি এবং সুরজিৎ বিশ্বজিতের আত্মীয়। ওই রাতে আমরা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। প্রবীর শৌচাগারে যাবেন বলে ঘরের বাইরে বেরোন। তখনই তাঁকে ধরে বিশ্বজিৎ। বহু দিন ধরে ওদের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। কেন প্রবীরের সঙ্গে ওঁর স্ত্রী থাকেন না, তার জন্য প্রবীরকেই দায়ী করে মারতে শুরু করে বিশ্বজিৎ। আমরা বাধা দিতে গেলে আমাদেরও ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়। পরে ওই অবস্থায় ওঁর দেহ উদ্ধার হল! নানা অসুখে ভুগতেন প্রবীর। এই মার আর নিতে পারেননি।’’
পুলিশে জানালেন না কেন? রত্না বলেন, ‘‘রবীন্দ্র সরোবর থানায় ফোন করেছিলাম। পুলিশ এলে বিশ্বজিতের বাড়ির মহিলারা বলে দেন, ঘটনাটি পারিবারিক বিবাদ। মিটে গিয়েছে। ছেলেটার যে এই ভাবে প্রাণ যাবে, পুলিশও হয়তো ভাবেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy