নিজস্ব চিত্র
কলকাতা পুরভোট অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং বলেছিলেন, তৃণমূলের কেউ কোথাও ‘দাদাগিরি’ করলে দল বহিষ্কার করবে। রবিবার দিনভর ভোট নিয়ে ভূরি ভূরি অভিযোগ এবং বহু জায়গায় ছোট-বড় অশান্তি, মারধরের পরেও তৃণমূলের দাবি, ভোট ছিল অবাধ ও শান্তিপূর্ণ।
অশান্তি সম্পর্কে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘উৎসবের মতো ভোট হয়েছে। ভাল ভোট হয়েছে। ও সব ওদের (বিরোধী) নাটক। ১৪৪টি আসনে লড়তে না-পেরে নাটক করলে উপেক্ষা করাই উচিত।’’ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকেরও প্রতিক্রিয়া, ‘‘কলকাতাবাসী উৎসব উদ্যাপন করেছেন। বিরোধীরা এজেন্ট দিতে না-পারলে তৃণমূল কী করবে? নাচতে না-জানলে উঠোন বাঁকা!’’ আর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ভোটের দিন কলকাতা পুলিশের ভূমিকারও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মমতা।
এ দিন ভোট শুরুর ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই অশান্তির অভিযোগ আসতে শুরু করে। উত্তর কলকাতায় বহু ওয়ার্ড থেকেই ছোট বা মাঝারি মাপের অশান্তির অভিযোগ আসতে শুরু করে। অশান্তির ঘটনার প্রত্যক্ষ করেন সাংবাদিকেরা। তার ছবিও ধরা পড়ে ক্যামেরায়। বেলা বাড়তে তার মাত্রাও বাড়তে থাকে। নিজের ওয়ার্ডে বেরিয়ে হেনস্থার অভিযোগ করেন বিজেপির দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর মীনাদেবী পুরোহিত। তা ছাড়া, বেলেঘাটা, রাজাবাজার অঞ্চলে ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগও জমা পড়ে নির্বাচন কমিশনে। তুলনায় কম হলেও অশান্তি হয়েছে দক্ষিণ কলকাতায়ও। ১০১, ১০২, ১০৩, ১০৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিভিন্ন ভাবে ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। এজেন্ট বসতে না দেওয়া এবং বিরোধীদের ভোট দানে বাধা দেওয়ার অভিযোগে বাঘাযতীনে দীর্ঘ ক্ষণ পথ অবরোধ করে সিপিএম। হামলার অভিযোগে বন্দর এলাকায় কর্মী- সমর্থকদের নিয়ে পথে বসে পড়েন সিপিএম প্রার্থী ফৈয়াজ আহমেদ খানও।
বেলা ৩টে নাগাদ ভবানীপুরের মিত্র ইনস্টিটিউশনে ভোট দিতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী ভ্রাতৃবধু কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে ভোট দিয়ে ফেরার সময় তিনি বলেন, ‘‘এত ভাল ভোট কোথাও হয় না।’’ মুখ্যমন্ত্রীর আগে ওই বুথেই ভোট দেন অভিষেকও। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘অশান্তির কোনও ফুটেজ ( ভিডিয়ো) থাকলে, দিন? তৃণমূলের কারও জড়িত থাকার প্রমাণ থাকলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেব।’’
রাজ্যের শতাধিক পুরসভার ভোট হবে আগামী মাস দুয়েকের মধ্যে। তার আগে দলের ভাবমূর্তির রক্ষায় কলকাতার পুরভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ রাখার প্রয়োজন ছিল তৃণমূলের। এ দিন সেই দায়িত্ব ছিল কলকাতা উত্তর ও দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার দুই দলীয় সভাপতি তাপস রায় এবং দেবাশিস কুমার হাতে। বিস্তর অভিযোগ থাকলেও নির্বাচন ‘মোটের উপর অবাধ ও শান্তিপূর্ণ’ হয়েছে বলেই দাবি করেছেন ওই দুই নেতা। তাপসের কথায়, ‘‘মোটের উপর অবাধ ভোটই হয়েছে। বিরোধীরা হারের আশঙ্কায় কয়েকটি জায়গায় প্ররোচনা তৈরি করে সংবাদমাধ্যমের নজরে আসতে চেয়েছে।’’ আর দেবাশিস বলেন, ‘‘হাতে গোনা কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। তাতে সাধারণ ভাবে অবাধ ভোট নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় না।’’
রাত পর্যন্ত পর্যবেক্ষক এবং প্রিসাইডিং অফিসারদের রিপোর্ট খতিয়ে দেখার কাজ চলছে। ওই রিপোর্টের উপরেই নির্ভর করবে কোথাও কোনও পুনর্নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে কি না।
ভোট নিয়ে প্রাথমিক পর্যালোচনায় দুই জেলা কমিটি মনে করছে, উত্তরে কমবেশি ৫০ এবং দক্ষিণে কমবেশি ৮০ টি আসনে তৃণমূলের জয় নিশ্চিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy