নিমতলা শ্মশানে নির্মীয়মাণ বৈদ্যুতিক চুল্লির ভবন।
ঘোষণার পরে পেরিয়েছে ছ’বছর। কাজ শুরুর পরে আরও তিন বছর। তবু শেষ হল না নিমতলা শ্মশান সংস্কার। তেমনই তিন বছরেও শেষ হয়নি রতনবাবু ঘাট সংলগ্ন শ্রীরামকৃষ্ণ মহাশ্মশানের সংস্কার। যদিও কলকাতা পুরসভা এ বছরেই শ্মশান দু’টির সংস্কারের চূড়ান্ত সময়সীমা ধার্য করেছে।
শ্রীরামকৃষ্ণ মহাশ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লির সংখ্যা বৃদ্ধি, কাঠের দু’টি চুল্লির আধুনিকীকরণ এবং প্রতীক্ষালয় তৈরির কাজ শেষ হয়েছে অনেক দিন। ধ্যানমন্দিরের কিছু কাজ এবং শ্মশানের মধ্যে কয়েকটি সৌধের সংস্কার এখনও বাকি। স্তম্ভ বসলেও এখনও বাতি লাগানো হয়নি। ঘাটের দিকের চাতাল চওড়া করার কাজও শেষ।
অন্য দিকে, নিমতলা শ্মশানের সংস্কার অনেকটাই পিছিয়ে আছে। আজও পুরনো পদ্ধতিতে কাঠের চুল্লি জ্বলছে। এর পিছনে টিনের শেড। সেখানে আধুনিকীকরণের কাজ চলছে। বৈদ্যুতিক চুল্লির নতুন বাড়ির কাজ অনেকটা বাকি। ফলে বর্তমান বৈদ্যুতিক চুল্লির ঘরটিকে প্রতীক্ষালয় করার পরিকল্পনা আটকে। রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিসৌধের সামনের বাগান ঢেলে সাজার কাজ একে বারে প্রাথমিক স্তরে।
পুরসভা সূত্রের খবর, হাতে মাত্র সাড়ে তিন মাস। বৃষ্টি ও উৎসবের দিন বাদ দিলে সময় আরও কম। বাকি অনেক কাজ। সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা নিয়ে নিশ্চিত নন পুরকর্মীরাই।
নিমতলায় চারটি চুল্লি বন্ধ করে গঙ্গার ধারে নতুন আটটি চুল্লির জন্য বাড়ি তৈরির কথা। পুরনো চুল্লিগুলির ঘরে মৃতের পরিজনদের জন্য প্রতীক্ষালয় তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে।
উদ্বোধনের অপেক্ষায় শ্রীরামকৃষ্ণ মহাশ্মশানের ধ্যানমন্দির।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, শ্রীরামকৃষ্ণ মহাশ্মশানে কাঠের চুল্লির আধুনিকীকরণ হয়ে গিয়েছে। সেখানে লোহার বেদির উপরে কাঠের চিতা সাজানো হয়। দূষিত ধোঁয়া ‘অ্যাফল্যুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’-এর ‘অ্যান্টি পলিউশন ডিভাইস’ হয়ে নির্গত হয়। চিতা বরাবর রয়েছে শাটার। নিমতলায় একই পদ্ধতিতে কাঠের চুল্লির আধুনিকীকরণের কথা। রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিসৌধের পাশের দু’টি চিতা বন্ধ করে বাগান হচ্ছে। স্ট্র্যান্ড রোড থেকে সোজা এখানে আসা যাবে। রতনবাবুঘাট সংলগ্ন কন্যাকুমারীর ধ্যানমন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে ধ্যানমন্দির। সামনেই গঙ্গা। বৈদ্যুতিক চুল্লি ও কাঠের চুল্লি উদ্বোধন হয়ে গেলেও ধ্যানমন্দির-সহ স্মৃতিসৌধগুলি এখনও সাধারণের জন্য খোলা হয়নি।
কলকাতা পুরসভার পূর্ত বিভাগ সূত্রের খবর, উপযুক্ত সংস্থা আবেদন না করায় নিমতলার ক্ষেত্রে তিন বার টেন্ডার ডাকতে হয়েছে। ফলে নির্দিষ্ট সময়েরও এক বছর পর কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া পুনর্বাসন-সহ নানা সমস্যা ছিল। এখানে ১৩ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকার সিভিল ওয়ার্ক হওয়ার কথা। রতনবাবুঘাটের কাজ শেষ। সমাধিমন্দির সংস্কারের কিছু সূক্ষ্ম কাজ চলছে। বাকি আছে ইলেকট্রিক্যাল। পুরসভার আলো বিভাগ সূত্রে খবর, শ্রীরামকৃষ্ণ মহাশ্মশানের যাবতীয় কাজ শেষ। নিমতলা ঘাটের জন্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছে। ১ কোটি ১১ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা খরচ অনুমোদন হয়েছে। সিভিলের কাজ চলছে ওখানে। তাই ইলেকট্রিকের কাজ শেষ হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy