ভোগান্তি: রাস্তা আটকে পড়ে রয়েছে দুই বাতিল বাতিস্তম্ভ। শনিবার, দমদম রোডে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
সমন্বয়ের অভাবে মানুষের দুর্ভোগ কোন পর্যায়ে যেতে পারে তার সাক্ষী থাকল শনিবারের দমদম রোড।স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত আড়াইটে নাগাদ স্টেশন সংলগ্ন
দমদম রোডের চিড়িয়ামোড়মুখী রাস্তায় ১১এ বাসস্ট্যান্ড এবং কো-অপারেটিভ নিউ মার্কেটের সামনে দু’টি বাতিস্তম্ভ ভেঙে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েক জন জানান, একটি গাড়ি যাওয়ার সময়ে তারে হেঁচকা টান লেগে প্রথমে ১১এ বাসস্ট্যান্ডের সামনের বাতিস্তম্ভটি উল্টোদিকের দেওয়ালে গিয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে অন্য বাতিস্তম্ভটিও ভেঙে রাস্তা আটকে যায়। এ দিন সকাল ১১টা ৪০ মিনিট নাগাদ যখন কলকাতা পুরসভা বাতিস্তম্ভ সরিয়ে রাস্তা সাফ করল তত ক্ষণে দুর্ভোগে নাভিশ্বাস অবস্থা মানুষের।
এ দিন দমদম রোডের ওই ঘটনার সঙ্গে বিটি রোডের অবস্থা আরও জটিল করে পরিস্থিতি। মাঝেরহাট বিপর্যয়ের নিরিখে ডানলপ-দক্ষিণেশ্বর উড়ালপুলে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। যার জেরে সকালে সাড়ে ৮টা থেকেই বিটি রোডের কলকাতাগামী রাস্তায় চাপ বাড়তে থাকে। এক সময়ে কামারহাটি পর্যন্ত গাড়ির লাইন চলে যায়। পরিস্থিতি বিচার করে দক্ষিণেশ্বর থেকে ডানলপমুখী কিছু গাড়িকে আলমবাজার দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। উড়ালপুলের বেয়ারিং মেরামতির কাজ কেমন চলছে তা-ও এ দিন খতিয়ে দেখা হয়।
শনিবার দমদম রোডের বাতিস্তম্ভ পড়ে যাওয়ার ফলে আন্ডারপাসের চিড়িয়ামোড়মুখী রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল সম্ভব ছিল না। আবার আন্ডারপাসের অন্য রাস্তাও এত চওড়া নয় যে দু’দিকের গাড়ি একসঙ্গে যাতায়াত করবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে তাই এক দফা নাগেরবাজারমুখী গাড়ি ছাড়ার পরে একই রাস্তা দিয়ে চিড়িয়ামোড়মুখী গাড়ি ছাড়া হচ্ছিল। ফলে এক দিকে নাগেরবাজার এবং অন্য দিকে প্রায় চিড়িয়ামোড় পর্যন্ত বাস, লরি, ট্যাক্সি, সাইকেল, রিকশার লাইন পৌঁছে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এমনিতেই দমদম রোডে যানজট দীর্ঘ বছরের সমস্যা। তার মধ্যে এই পরিস্থিতি। এ ক্ষেত্রে জরুরি ছিল, প্রশাসনিক স্তরের সমন্বয়। কিন্তু বাতিস্তম্ভ কার, তা নিয়ে কলকাতা পুরসভা এবং পূর্ত দফতরের টানাপড়েনে বেলা গড়িয়ে যায়। প্রশ্নও উঠেছে, মরচে পড়া বাতিস্তম্ভ আগে কেন সরানো হল না? কলকাতা পুরসভার বক্তব্য, ওই বাতিস্তম্ভ পূর্ত দফতরের অধীন। পূর্ত দফতরের দাবি, সেটা বছর দশেক আগে ছিল। এখন তা কলকাতা পুরসভার অন্তর্ভুক্ত। যেগুলি ভেঙেছে তা দীর্ঘদিন অব্যবহৃত অবস্থায় ছিল বলে জানান পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক। কলকাতা পুলিশের দাবি, এ দিন রাজ্য পুলিশের অধীন ওই এলাকায় গিয়ে যানশাসনের চেষ্টা করলেও ব্যারাকপুর কমিশনারেটের তরফে সহযোগিতা মেলেনি। পুলিশ সূত্রের খবর, সকাল ন’টা নাগাদ কো-অপারেটিভ মার্কেটের উল্টোদিকের বাতিস্তম্ভটি সরানো হলে ওই রাস্তা দিয়ে ছোট গাড়ি যাওয়ার জায়গা হয়। কিন্তু ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকায় গাড়িগুলোর একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার প্রবণতায় সেই পরিকল্পনা কাজে আসেনি। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের দাবি, যান নিয়ন্ত্রণে তারা যথেষ্ট সচেষ্ট ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy