যাদবপুর থানার দিক থেকে গড়িয়াহাট রোড ধরে গাড়িতে গোলপার্কের দিকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যাচ্ছিলেন অসীম রায়। গোলপার্কের কাছে রাস্তার মাঝে রাখা গার্ড রেল দেখেই গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করলেন তিনি। গাড়ির দিকে এগিয়ে গেলেন পুলিশ অফিসার-সহ একটি দল। গাড়ির সামনে, পিছনে ও ভিতরে তল্লাশি চালানোর পরে অসীমবাবুর গাড়িকে যাওয়ার অনুমতি দিল পুলিশ।
গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন জায়গায় শহরবাসীকে এমনই তল্লাশির সামনে পড়তে হয়েছে। এ জন্য কোথাও অস্থায়ী ভাবে বসেছে বাঁশের ড্রপ গেট, কোথাও বা গার্ড রেল দিয়ে গাড়ি থামিয়ে ওই তল্লাশি হচ্ছে।
কিন্তু নাকা তল্লাশি চালানো হচ্ছে যে জায়গায়, তা কি আদৌ সিসি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে? সেটাই এ বার জানতে চেয়েছে লালবাজার। একই সঙ্গে ওই এলাকাগুলি ওয়েব ক্যামেরায় বন্দি করা যায় কি না তা-ও জানতে চেয়েছে লালবাজার। পুলিশ সূত্রের খবর, আসলে নির্বাচন কমিশনের তরফে লালবাজারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশ এলাকায় নাকা তল্লাশির এই ব্যবস্থা আছে কি না। সে কারণেই লালবাজার তার প্রতিটি থানার কাছ থেকে জানতে চেয়েছে সিসি ক্যামেরা এলাকার অধীনেই নাকা তল্লাশি হচ্ছে কি না। সেই সঙ্গে ওয়েব ক্যামেরাবন্দি করার বিষয়টিও নজরে আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কলকাতা পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, শহরের যে সব এলাকায় ওই তল্লাশি হচ্ছে, তার অধিকাংশই রয়েছে সিসি ক্যামেরার অধীন। যে সব জায়গায় তা নেই, দ্রুত সেই এলাকা সিসি ক্যামেরার অধীন নিয়ে আসা হবে। তবে ওই ক্যামেরাগুলি ট্র্যাফিক পুলিশের অধীন, যান চলাচলের কথা মাথায় রেখে বসানো হয়েছে। ফলে তা দিয়ে তল্লাশির ছবি স্পষ্ট মিলবে কি না সে নিয়েও প্রশ্ন থাকছে। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, ওয়েব ক্যাম কভারেজের সুবিধে নেই কোনও জায়গাতেই। তবে নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দিলে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেন নির্বাচন কমিশনের তরফে সিসিটিভি এবং ওয়েব ক্যামেরার কভারেজের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে? লালবাজার সূত্রের খবর, শহরে বেআইনি অস্ত্র ঢোকা ঠেকাতে এবং বেহিসেবি অর্থের লেনদেন বা পাচার বন্ধ করতেই কমিশনের নির্দেশে নাকা তল্লাশি হচ্ছে। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত তা চলছে শহর জুড়ে। তল্লাশিতে যাতে অনিয়ম না হয়, বা অভিযোগ উঠলে তার সত্যতা যাচাই করা যায়, সম্ভবত সে কারণেই তল্লাশির এলাকাগুলিকে সিসি ক্যামেরার অধীনে রাখার কথা ভাবছে কমিশন। একই কারণে ওয়েব ক্যামেরার সুবিধের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
লালবাজার জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশনের তরফে লোকসভা নির্বাচন, ২০১৪ এবং বিধানসভা নির্বাচন, ২০১৬-তে শহরের কোথায় কোথায় ভোট চলাকালীন গোলমাল হয়েছিল, তা জানতে চাওয়া হয়েছে সব থানার কাছে। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তার জন্য কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই থানাগুলি লালবাজারকে সেই তথ্যও জানিয়ে দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy