—ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল নির্বাচন কমিশন। একাধিক বৈঠকে এ নিয়ে প্রশ্নও তোলা হয়। এর পরেই কলকাতার নতুন পুলিশ কমিশনার দায়িত্ব নিয়েই বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আরও কড়া হওয়ার। কিন্তু অভিযোগ, নাকা-তল্লাশি ঠিক মতো হয় না। ফলে রাতের শহরের নিরাপত্তা সেই তিমিরেই। দিন কয়েক আগে গড়িয়াহাটের ঘটনায় এই অভিযোগের সত্যতা দেখছেন শহরের একাংশ। লালবাজারের পুলিশকর্তাদের অবশ্য দাবি, নিয়ম করেই রাতের শহরে নাকা-তল্লাশি ও টহলদারি চলছে।
তা হলে দিন সাতেক আগে গড়িয়াহাটে কী ভাবে মায়ের সামনেই মেয়েকে হেনস্থার ঘটনা ঘটে? রাত দশটা নাগাদ টিউশন থেকে মায়ের সঙ্গে ফিরছিল ওই কিশোরী। স্কুটার খারাপ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা সেটি ঠেলছিলেন। ম্যান্ডেভিল গার্ডেন্স এবং সুইনহো লেনের সংযোগস্থলে বাইকটি সারাতে এগিয়ে যায় বাইকে সওয়ার দুই অপরিচিত তরুণ। কিন্তু সেটি ঠিক না হওয়ায় ফের মা ও মেয়ে স্কুটার ঠেলে এগোতে থাকেন। কিশোরীর মায়ের অভিযোগ, কিছু ক্ষণ পরে ফাঁকা জায়গা আসতেই ওই দুই তরুণ কিশোরীর হাত ধরে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিশোরী রাস্তায় পড়ে গেলেও তাঁকে হিঁচড়ে কিছু দূর নিয়ে যায় দুই অভিযুক্ত। কিশোরীর মা ছুটে যেতেই ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। গড়িয়াহাট থানায় অভিযোগ দায়ের হলে তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে। অভিযোগ আরও ওই ঘটনার সময়ে দেখা মেলেনি পুলিশের কোনও টহলদারি গাড়ির। ফলে রাতপথের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
বাস্তব চিত্র যেন সেই প্রশ্নকে আরও জোরালো করছে। রাত সাড়ে আটটা। ইএম বাইপাসের মেট্রোপলিটন। নিয়ম মেনে লাগানো রয়েছে নাকা-তল্লাশির বোর্ড। তবে খাতায়-কলমেই। নির্বিঘ্নে পেরিয়ে যাচ্ছে পর পর সব গাড়ি। কিন্তু কোথায় পুলিশকর্মী? একই রকম অবস্থা বাইপাসের রুবি কানেক্টর, এক্সাইড মোড় এবং রাসবিহারী কানেক্টরের। গড়িয়াহাটের ঘটনার এক সপ্তাহ পরেও রাতপথের এই ছবি।
গার্ডেনরিচের বাসিন্দা পারমিতা অধিকারী বলেন, ‘‘অফিস থেকে ফিরতে রাত হয়ে যায়। কসবা-রাজডাঙা থেকে স্কুটার চালিয়ে ফেরার পথে রাতে নাকা-তল্লাশি চোখে পড়ে না। অনেক সময়ে পুলিশ থাকলেও নিজেদের মধ্যে গল্প করতেই দেখা যায়। ভোটের আগে নিরাপত্তার এই হাল সত্যিই চিন্তায় রাখছে।’’
পথের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত নাগরিকদের একটি অংশের মতে, আগে নিয়মিত নাকা-তল্লাশি হত। ফলে রাতের শহরে অপরাধ অনেকটা রুখে দেওয়া গিয়েছিল। করোনা পরিস্থিতির কারণে ওই ব্যবস্থা এখন ঢিলেঢালা। অভিযোগ, যার জেরে বাড়ছে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য, রাতে বেপরোয়া গাড়ির দাপাদাপি। সেই সঙ্গে ফের বাইকের দাপট বৃদ্ধিতে ঘটছে পর পর দুর্ঘটনা। যার ফলে মৃত্যুও হচ্ছে।
যেখানে ভোটের আগে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার হওয়ার কথা, সেখানে এই ঢিলেঢালা ভাব কেন?
অভিযোগ মানছে না লালবাজার। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) শুভঙ্কর সিংহ সরকার বলেন, ‘‘নাকা-তল্লাশি না হওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। এখনও নিয়ম মেনেই শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে রাতে নাকা-তল্লাশি চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy