সন্ত রবিদাস জয়ন্তীর শোভাযাত্রায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার। — নিজস্ব চিত্র
দুপুর আড়াইটে নাগাদ পার্ক সার্কাস থেকে বাসে উঠেছিলেন সুজন দেব। কিন্তু রাজপথে বাসের চাকা যেন নড়ছিলই না। সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার পথ পেরোতে শুক্রবার তাঁর সময় লেগেছে প্রায় দেড় ঘণ্টা।
বিকেল পাঁচটা নাগাদ এপিসি রোড ও সূর্য সেন স্ট্রিটের মোড়ে গাড়ি নিয়ে আটকে পড়েছিলেন কুবলয় নন্দী। যানজটের ধাক্কায় চেনা রাস্তাও অচেনা ঠেকছিল তাঁর। সন্ধ্যায় ট্যাক্সিতে পিকনিক গার্ডেন যেতে গিয়েও নাকানিচোবানি খেয়েছেন পঞ্জাব থেকে শহরে আসা গুঞ্জন অরোরা।
পুলিশ বলছে, একটি ধর্মীয় মিছিলের জেরেই এ দিন যান চলাচল ব্যাহত হয়েছিল। দুপুর থেকে তৈরি হওয়া সেই জটের প্রভাব কাটতে রাত গড়িয়ে গিয়েছে। ওই মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সন্ধ্যায় পার্ক সার্কাস ময়দান থেকে তিলজলার রবিদাস সরণি পর্যন্ত হাঁটেন তিনি।
লালবাজারের খবর, মিছিলে অংশ নিতে সকাল থেকেই ম্যাটাডর, গাড়িতে চেপে বহু ভক্ত রবিদাস সরণিতে ধর্মীয় সংগঠনের আশ্রমে পৌঁছন। সেখান থেকে দেড়টা নাগাদ মিছিল শুরু হয়। তিলজলা রোড, বন্ডেল গেট উড়ালপুল, রাইফেল রেঞ্জ রো়ড, বীরেশ গুহ স্ট্রিট, সুন্দরীমোহন অ্যাভিনিউ, সিআইটি রোড, মৌলালি হয়ে লেনিন সরণি, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, জওহরলাল নেহরু রোড, পার্ক স্ট্রিট, সুরাবর্দি অ্যাভিনিউ হয়ে ফের রবিদাস সরণিতে শেষ হয় মিছিল। এর জেরে দুপুর থেকেই পূর্ব, মধ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশ কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে যায়।
সকালে মেট্রো-বিভ্রাটে নাকাল হয়েছিলেন অনেকে। দুপুরে যানজট থেকে বাঁচতে অনেকে অবশ্য সেই মেট্রোই ধরেছেন। পুলিশ বলছে, প্রতি বছরই নির্দিষ্ট দিনে এই মিছিল হয়। তাই আগে থেকেই মিছিলের রাস্তা হিসেব করে যানজট সামলানো হয়েছিল। ফেসবুকেও জানানো হয়েছিল, যানজট হতে পারে। লালবাজারের এক কর্তার মতে, ‘‘জওহরলাল নেহরু রোডে সাধারণত মিছিলের অনুমতি দেওয়া হয় না। কিন্তু কিছু ধর্মীয় মিছিলের নির্দিষ্ট পথ দিয়ে যাওয়ার রীতি আছে। এ ক্ষেত্রে তাদের ছাড় দেওয়া হয়। এই মিছিলটিও তেমনই।’’
পুলিশ সূত্রের দাবি, কয়েক হাজার লোকের মিছিল হলে যানজট তো হবেই। তবে কোনও এলাকা দিয়ে মিছিল বেরিয়ে যাওয়ার পরেই দ্রুত গা়ড়ি চলাচল শুরু করা হয়েছে। কিছু এলাকায় গাড়ি ঘুরপথে চালানো হয়েছে। মিছিল থামিয়ে পার করে দেওয়া হয়েছে অ্যাম্বুল্যান্স। ‘‘কিন্তু এক বার গাড়ির জট পাকালে তা স্বাভাবিক হতে সময় লাগে। অনেক ক্ষেত্রে বিকেলে বা সন্ধ্যায় তাতে ভুগতে হয়েছে মানুষকে,’’— বলছেন এক পুলিশকর্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy