প্রতীকী ছবি।
করোনা পরিস্থিতিতে মত্ত চালকদের ধরার ব্যাপারে ঢিলেমি দেখা গিয়েছিল পুলিশের মধ্যে। কিন্তু শহরে পর পর বিভিন্ন দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে দেখা যায়, মদ্যপান করে গাড়ি বা মোটরবাইক চালানোর ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। সেই কারণে মত্ত চালকদের ধরতে ফের অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। করোনার কারণে ব্রেথ অ্যানালাইজ়ারের ব্যবহার আপাতত বন্ধ আছে। তাই চালককে দেখে মত্ত বলে সন্দেহ হলে তাঁকে আটক করে সোজা হাসপাতালে পাঠাবে পুলিশি।
লালবাজার সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহে বড়দিনের উৎসবের আগেই মত্ত চালকদের বিরুদ্ধে রাতের ওই বিশেষ অভিযান শুরু হবে। কারণ, বড়দিন এবং বর্ষবরণের উৎসবের এই সময়ে গাড়ি ও মোটরবাইক চালকদের একটি বড় অংশই মত্ত অবস্থায় রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। পুলিশের দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা তেমনটাই বলছে। তা ছাড়া, গত কয়েক দিনের কয়েকটি দুর্ঘটনা থেকেও তা পরিষ্কার। পুলিশ সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে দক্ষিণ কলকাতার গরফায় মত্ত অবস্থায় গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে বসে এক পথচারীকে পিষে দিয়েছিলেন এক চালক। আবার তার কয়েক দিনের মধ্যেই মত্ত অবস্থায় মোটরবাইক চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা যান দু’জন। লালবাজারের এক পুলিশকর্তা জানান, শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা বেছে নিয়ে রাতভর ওই বিশেষ অভিযান চালানো হবে।
করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় গত মার্চ মাস থেকে সন্দেহভাজন চালকদের ব্রেথ অ্যানালাইজ়ার দিয়ে পরীক্ষা বন্ধ রেখেছে লালবাজার। তাই থমকে গিয়েছিল তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযান। তবে কিছু ক্ষেত্রে চালকের আচরণ দেখে সন্দেহ হলে তবেই তাঁকে আটক করে হাসপাতালে পাঠানো হত পরীক্ষার জন্য। ট্র্যাফিক পুলিশের একটি অংশ জানাচ্ছে, বিভিন্ন হাসপাতাল করোনা চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট হওয়ায় চালকেরা সংক্রমণের ভয়ে সেখানে যেতে চান না। সেই কারণেই মত্ত চালকদের বিরুদ্ধে অভিযানে ঢিলেমি দেখা দেয়। কিন্তু গত শুক্রবার মাসিক অপরাধ দমন বৈঠক এবং ট্র্যাফিক পর্যালোচনা বৈঠকে পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা রাতের শহরে বেপরোয়া এবং মত্ত চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য ক্ষোভ উগরে দেন বাহিনীর শীর্ষ কর্তা থেকে শুরু করে আধিকারিকদের কাছে। সেখানেই তিনি কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের জানিয়ে দেন, মত্ত চালকদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, তা আলোচনা করে ঠিক করতে হবে।
লালবাজার সূত্রের খবর, আপাতত ঠিক হয়েছে, করোনা পরিস্থিতির আগের মতোই বিশেষ অভিযান চলবে। তবে ব্রেথ অ্যানালাইজ়ার আপাতত ব্যবহার করা হবে না। তার পরিবর্তে সন্দেহভাজন চালকদের আটক করে সোজা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হবে পরীক্ষার জন্য। সেই রিপোর্ট দেখার পরেই ঠিক হবে, চালকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্রেথ অ্যানালাইজ়ার দিয়ে পরীক্ষা করলে শরীরে অ্যালকোহলের মাত্রা নির্দিষ্ট সীমার বেশি আছে কি না, তা সঙ্গে সঙ্গেই জানা যায়। সেই মতো ঘটনাস্থলেই চালকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়। কিন্তু হাসপাতালে পাঠিয়ে পরীক্ষা করানোটা সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। তা ছাড়া, অভিযুক্ত চালক করোনা সংক্রমণের ভয়ে হাসপাতালে যেতে না চাইলে কী করা হবে, তা নিয়ে পুলিশের কোনও কর্তাই কিছু বলতে পারেননি।
লালবাজারের ট্র্যাফিক বিভাগের এক কর্তা জানান, প্রতিবারই দেখা যায়, বড়দিন এবং নববর্ষের এই উৎসবের আবহে মদ্যপান করে মোটরবাইক নিয়ে প্রমোদভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন অনেকে। সেই প্রবণতা বন্ধ করতেই এ বার ওই অভিযান শুরু হচ্ছে। প্রতিটি থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডকে নির্দিষ্ট সময়ে ওই বিশেষ অভিযান সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy