আরজি কর হাসপাতালে হামলার ঘটনায় কলকাতা পুলিশের সেই পোস্ট। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মেয়েদের রাত দখলের কর্মসূচির মধ্যেই বুধবার মধ্যরাতে হামলা চালানো হয়েছিল আরজি কর হাসপাতালে। হাসপাতালের জরুরির বিভাগের গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে তাণ্ডব চালান একদল ব্যক্তি। তার পরেই সমাজমাধ্যমে একাধিক পোস্টে দাবি করা হয়, হাসপাতালের চার তলায় ফুসফুস এবং বক্ষরোগ বিভাগের যে সেমিনার রুম থেকে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়, সেটিতেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এই সংক্রান্ত দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হল, ওই সেমিনার রুম ‘অক্ষত’ রয়েছে। তার পরেই গুজব এবং মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর জন্য আইনি পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছে লালবাজার।
বুধবার মধ্যরাত থেকেই নেটাগরিকদের একাংশ ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি করতে থাকেন, আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা যেখানে ঘটেছিল, সেই সেমিনার রুমে ভাঙচুর চালানো হচ্ছে। (যদিও এই ভিডিয়োগুলির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) একই সঙ্গে ওই পোস্টগুলিতে দাবি করা হয় যে, তথ্যপ্রমাণ লোপাট এবং তদন্তের কাজ ব্যাহত করতেই দুষ্কৃতীরা এমন কাজ করেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতা পুলিশের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করা হয়। সেখানে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ‘ভাঙচুরের’ দাবি এবং ভিডিয়ো সম্বলিত একটি পোস্ট শেয়ার করে লেখা হয়, “অপরাধ সেমিনার রুমে হয়েছিল। আর সেই সেমিনার রুমকে ছোঁয়া পর্যন্ত হয়নি। যাচাই না করা খবর ছড়াবেন না। আমরা গুজব ছড়ানোর জন্য আইনি পদক্ষেপ করছি।”
বুধবার রাত ১২টা নাগাদ আরজি করের সামনে ‘রাত দখলের’ কর্মসূচি শুরু হয়। ঠিক তার পর পরই একদল উন্মত্ত ব্যক্তি আচমকাই পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর চালাতে থাকেন। প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে হাসপাতাল চত্বরে তাণ্ডব চালায় লেঠেলবাহিনী। পরে ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। কয়েক জন পুলিশকর্মী জখমও হয়েছেন হামলাকারীদের ছোড়া ইটে। কিন্তু যাঁরা হামলা চালালেন, তাঁরা কারা? বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত তা স্পষ্ট নয়।
হাসপাতালে হামলার ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে যান পুলিশ কমিশনার (সিপি) বিনীত গোয়েল। এলাকা ঘুরে ‘ক্রুদ্ধ’ বিনীত বলেন, ‘‘ডিসি নর্থ প্রতিবাদকারীদের রক্ষা করতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন। এখানে যা হয়েছে, তা ভুল প্রচারের জন্য। কলকাতা পুলিশ এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।’’
এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন সিপি। তিনি বলেন, “কলকাতা পুলিশ কী করেনি! আরজি করের ঘটনার তদন্তের জন্য পুলিশ সব কিছু করেছে। আমি দায়িত্ব নিয়ে এই কথা বলছি। আমার সহকর্মীরা দিন-রাত এক করে দিয়ে এই তদন্তের কিনারা করার চেষ্টা করেছেন। তাঁরা প্রমাণ সংগ্রহে কোনও রকম ত্রুটি রাখেননি। ইতিমধ্যেই মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা পরিবারের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। নানা রকম গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ ভুল প্রচারে কলকাতা পুলিশের সম্মানহানি হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন সিপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy