Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
R G Kar Hospital Incident

‘সন্ধান চাই’, আরজি করে মধ্যরাতে হামলার ঘটনায় দোষীদের খোঁজ পেতে ছবি প্রকাশ করল পুলিশ

মেয়েদের রাত দখলের কর্মসূচির মধ্যেই বুধবার রাতে আরজি কর হাসপাতালের জরুরির বিভাগের গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে তাণ্ডব চালান একদল ব্যক্তি। আক্রান্ত হন পুলিশকর্মীরাও।

ছবি: কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২৪ ১০:৫০
Share: Save:

বুধবার মধ্যরাতে আরজি কর হাসপাতালে হামলার ঘটনার অভিযুক্ত কয়েক জনের ছবি প্রকাশ করে এ বার ‘সন্ধান চাই’ বিজ্ঞপ্তি কলকাতা পুলিশের! বৃহস্পতিবার সকালে সমাজমাধ্যমে ওই অশান্তির ঘটনার ৫০টিরও বেশি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বেশ কয়েক জন পুরুষ ও মহিলাকে লাল গোল দাগে চিহ্নিত করে তাঁদের সন্ধান চেয়েছে পুলিশ।

সমাজমাধ্যমে ওই পোস্টে লেখা হয়েছে— ‘‘সন্ধান চাই: নীচের ছবিতে যাদের চেহারা চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের সন্ধান জানা থাকলে অনুরোধ, জানান আমাদের, সরাসরি বা আপনার সংশ্লিষ্ট থানার মাধ্যমে।’’ তারই সঙ্গে ইংরেজিতে লেখা বার্তা— ‘‘যে কেউ নীচের ছবিতে লাল রঙে বৃত্তাকার ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে সাহায্য করতে পারেন। সরাসরি আমাদের কাছে বা আপনার স্থানীয় থানার মাধ্যমে তা করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’’

প্রসঙ্গত, চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে মেয়েদের রাত দখলের কর্মসূচির মধ্যেই বুধবার রাতে আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে তাণ্ডব চালান একদল ব্যক্তি। তছনছ করা হয় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টার, এইচসিসিইউ (হাইব্রিড ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট), সিসিইউ (ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট), ওষুধের স্টোররুমও। হামলা চালানো হয় হাসপাতালের বাইরের চত্বরেও। ভাঙচুর করা হয় আরজি করের পুলিশ ফাঁড়ি, এমনকি চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনে দোষীদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের মঞ্চও! পাশাপাশি পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর এবং পুলিশকর্মীদের উপর হামলাও চালানো হয়।

কিছু ক্ষণ পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয় র‌্যাফ। তারা এসে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় ভিড়। হামলাকারীদের একাংশকে তাড়া করে এলাকাছাড়া করে পুলিশ। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়। পুলিশের তাড়া খেয়ে একদল লোককে হাসপাতালের পাশের খালপাড় ধরে গলিপথে দৌড়তে দেখা যায়। সেখান থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ইট। হামলাকারীদের ছোড়া ইটে মানিকতলা থানার ওসি জখম হন। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি বলেন, ‘‘এটা আমার কাজের অংশ। কিন্তু প্রতিবাদের নামে সাধারণ মানুষ, ছাত্রছাত্রীদের আঘাত করা হয়েছে।’’

প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের অভিযোগ, পুলিশ শুরুতে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। হঠাৎ হামলার ঘটনায় কেন দ্রুত পদক্ষেপ করল না পুলিশ, উঠেছে সেই প্রশ্ন। রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুলিশ কমিশনার। তিনি ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। পরে তিনি বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশের ডিসি (উত্তর) প্রতিবাদকারীদের রক্ষা করতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন। এখানে যা হয়েছে, তা ভুল প্রচারের জন্য হয়েছে। কলকাতা পুলিশ এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।’’

রাতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, ‘‘রং না দেখে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুষ্কৃতীদের ধরুন! পড়ুয়াদের দাবি ন্যায্য ও সঙ্গত! তাঁদের বাঁচান!’’ অভিষেকের সেই বার্তার কয়েক ঘণ্টা পরেই শুরু হল হামলাকারীদের চিহ্নিত করার কাজ।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য গোটা ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতাকেই দুষছেন। এক্সে তিনি লেখেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তৃণমূলের গুন্ডাদের পাঠিয়েছিলেন একটি রাজনৈতিক মিছিলে। ওঁর ধারণা, ওঁর গুন্ডারা আন্দোলনকারীদের ভিড়ের মধ্যে মিশে গিয়ে গুন্ডামি করবে আরজি কর হাসপাতালে এবং মানুষ কিছু বুঝতে পারবেন না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy