একডালিয়ার সামনে দর্শনার্থীদের ঢল। তার জেরেই দাঁড়িয়ে পড়েছে গাড়ি। বুধবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী
বিকেল পাঁচটাও বাজেনি। মধ্য কলকাতার একটি পার্কের পুজোয় তখনই দর্শনার্থীদের ভিড়। কিন্তু পুজোর উদ্বোধন না হওয়ায় মণ্ডপে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না কাউকে। তাতেও পরোয়া নেই দর্শকদের। বন্ধ গেটের ফাঁক দিয়েই উঁকি মারছিলেন তাঁরা। কয়েক জন আবার বিফল মনোরথ হয়ে হাঁটা দিলেন ওই এলাকার অন্য একটি পুজো দেখতে।
দেবীর বোধন হবে শুক্রবার, ষষ্ঠীর সন্ধ্যায়। কিন্তু বুধবার দুপুর থেকেই শহরের বেশির ভাগ মণ্ডপ খুলে দেওয়া হয়েছে। তাই চতুর্থীর বিকেলেই শহরের রাস্তায় দর্শকেরা নেমে পড়েন। সেই ভিড়ের জেরেই বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় যানজট হয় শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। ভিড়ের চাপে বেশ কয়েকটি রাস্তায় যান চলাচল বন্ধও করে দিতে হয়েছিল পুলিশকে।
লালবাজারের খবর, এ দিন দুপুরের পর থেকে যানজটে থমকে যায় দক্ষিণের গড়িয়াহাট রোড, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, শরৎ বসু রোড, টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড, চেতলা সেন্ট্রাল রোড, দুর্গাপুর সেতু ও আলিপুর রোড। সন্ধ্যায় বি কে পাল অ্যাভিনিউ, রবীন্দ্র সরণি ও অরবিন্দ সরণির একাংশ বন্ধ করে দিতে হয়। আমহার্স্ট স্ট্রিটকে মানিকতলামুখী ও বিধান সরণিকে কলেজ স্ট্রিটমুখী করে দেওয়া হয়। টালা সেতুর বেহাল দশার কারণে এমনিতেই উত্তর কলকাতায় গাড়ির চাপ রয়েছে। তার উপরে পুজোর ভিড় সমস্যা আরও বাড়িয়েছে। দক্ষিণে সেই সমস্যা তৈরি হয়েছে ভাঙা মাঝেরহাট সেতুর জন্য।
এ দিন দুপুর থেকেই রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে গাড়ির চাপ বেশি ছিল। যার প্রভাব গিয়ে পড়ে গড়িয়াহাট ও শরৎ বসু রোডে। ওই এলাকার মণ্ডপগুলিতে এ দিন থেকেই ভিড় জমতে শুরু করেছে। দুপুর থেকেই নিউ আলিপুর ও চেতলায় যানজট শুরু হয়। বিকেলে পরিস্থিতি সামলাতে প্রায় আধ ঘণ্টা টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড বন্ধ করে দিয়েছিল পুলিশ। টালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে কোনও গাড়িকে ওই রাস্তায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তার ফলে দেশপ্রাণ শাসমল রোডে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে গাড়ি। পুলিশ সূত্রের খবর, বিজন সেতু থেকে গড়িয়াহাটের দিকে নামার পরেই গাড়ির গতি থমকে গিয়েছে বারবার। চেতলায় গাড়ির জট সামলাতে হাজির হন খোদ ডিসি (ট্র্যাফিক) সন্তোষ পাণ্ডে। ঢাকুরিয়ার দিকেও গাড়ি চলেছে ঢিমে গতিতে।
হাতিবাগানে এমনিতেই পুজোর বাজারের শেষ লগ্নের কেনাকাটার ভিড় ছিল। তার সঙ্গে যুক্ত হয় ওই এলাকার পাঁচটি বড় পুজোর ভিড়। সব মিলিয়ে কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয় রাস্তায়। বিকেলের পরেই পরিস্থিতি সামাল দিতে অরবিন্দ সরণির একাংশে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভিড় জমতে দেখা গিয়েছে কলেজ স্কোয়ার ও সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারেও। সন্ধ্যার পরে ইডেন হসপিটাল রোড ও কলুটোলা স্ট্রিটে গাড়ি ঢোকা বন্ধ করে দেওয়া হয়। নিউ মার্কেট ও বড়বাজারে শেষ লগ্নের কেনাকাটার ভিড়ে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে জওহরলাল নেহরু রোড ও মহাত্মা গাঁধী রোডে। ভিড় জমেছিল আহিরীটোলার বিভিন্ন পুজো মণ্ডপেও। যার জেরে বি কে পাল অ্যাভিনিউ ও রবীন্দ্র সরণির একাংশে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এ সবের মধ্যে সব থেকে বেশি ভুগেছেন উল্টোডাঙা দিয়ে যাতায়াতকারী মানুষজন। এমনিতেই ভিআইপি রোড এবং ই এম বাইপাস সংযোগকারী উড়ালপুলের এক দিক বন্ধ। তার উপরে লেক টাউনে পুজোর ভিড়ের ‘বিশৃঙ্খলা’য় ভিআইপি রোড কার্যত অবরুদ্ধ। যার জেরে উল্টোডাঙায় থমকে যায় গাড়ির চাকা।
উৎসব কাপের লড়াইয়ে চতুর্থীর ভিড় কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে পুলিশকে। আজ, পঞ্চমীতে সেই চ্যালেঞ্জ কী ভাবে সামলায় লালবাজার, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy