মেট্রোর খামখেয়ালিপনার জেরে ফি দিন সমস্যায় পড়ছেন নিত্য যাত্রীরা।
মেট্রো স্টেশনে অপেক্ষায় থেকে দিনের বেলা একটি বা দু’টি ট্রেনের সময় পেরিয়ে যেতে দেখার অভিজ্ঞতা তো ছিলই। ইদানীং রাতের শেষ মেট্রোও দেরিতে আসার ঘটনা প্রায় নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অভিযোগ, আত্মহত্যা বা ট্রেন বিকল হওয়ার মতো ঘটনা ছাড়া স্বাভাবিক দিনে মেট্রো কতটা দেরিতে চলছে বা কেনই বা দেরিতে চলছে তার কোনও ঘোষণাই ইদানীং মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে করা হয় না।
বদলে বড়জোর দায়সারা ভাবে আপ এবং ডাউন লাইনের কোন কোন স্টেশনে মেট্রো রয়েছে তা জানান মেট্রো কর্তৃপক্ষ। স্টেশনের ঘড়িতে মেট্রো আসার সময় পেরিয়ে গেলেও সে দিকে কর্তৃপক্ষের কোনও ভ্রূক্ষেপ থাকে না বলে অভিযোগ।
এক ধাপ এগিয়ে, ট্রেন আসতে কত সেকেন্ড দেরি রয়েছে তা যাত্রীদের জানাতে মেট্রোর তরফে কয়েক মাস আগে সবকটি স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে একাধিক টাইমার বসানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে, ওই টাইমাররের সময় পেরিয়ে গেলেও ট্রেনের দেখা মেলে না বলে অভিযোগ যাত্রীদের। মেট্রোর এই খামখেয়ালিপনার জেরে ফি দিন সমস্যায় পড়ছেন নিত্য যাত্রীরা।
রাতের মেট্রোয় ‘বেনিয়মের’ জেরে অনেকেই উত্তরে দমদম এবং দক্ষিণে নিউ গড়িয়া থেকে শহরতলির ট্রেন ধরতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন। বাড়ি ফেরার পথে বাস এবং অটো পেতে গিয়েও নাকাল হচ্ছেন বহু যাত্রী।
এক মেট্রো যাত্রী বলেন, “এসপ্ল্যানেডে রাতের মেট্রো প্রায়ই ১০টা ২৪ মিনিটের বদলে ১০টা ৩৫ বা ১০টা ৪০ মিনিটে ঢোকে। ফলে দমদম পৌঁছে ট্রেন পেতে সমস্যা হয়।” ফলে মেট্রোর উপর নির্ভর করে শহরতলির লোকাল ট্রেন, বাস, বা অটো ধরার বিষয়টি প্রায় ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিতে হচ্ছে বলে ক্ষোভ যাত্রীদের।
যদিও, মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি ট্রেন সময়েই চলছে। কোনও ট্রেন বাতিলের খবর নেই তাঁদের কাছে। সোম থেকে শুক্র সপ্তাহের কাজের দিনে নিয়ম করে ৩০০টি ট্রেন চালানোয় কোনও ঘাটতি নেই।
তা হলে যাত্রীদের এমন অভিজ্ঞতা হচ্ছে কেন? মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যস্ত সময়ে পুরনো রেক নিয়ে ট্রেন চালাতে গিয়ে নানা কারণে প্রায়ই দেরি হচ্ছে দু’প্রান্ত থেকে ট্রেন ছাড়তে। কিন্তু সারা দিনে নির্দিষ্ট সংখ্যক ট্রেন চালানোর হিসেব ঠিক রাখতে গিয়ে কোনও ট্রেনই সময়ে চালানো সম্ভব হচ্ছে না। সে জন্যই কোন মেট্রো কতটা দেরিতে চলছে ‘কৌশলে’ ওই ঘোষণা করার বিষয়টি ইদানীং মেট্রো কর্তৃপক্ষ এড়িয়ে যান।
পাশাপাশি, কোনও কারণে দেরি হলে একটি ট্রেন বাতিল করে পরের ট্রেনটিকে সময়ে চালানো যায় বলে মত মেট্রোকর্তাদের একাংশের। কিন্তু, ট্রেন কমালে ভিড়ের সময় সমস্যা হতে পারে বলেও আশঙ্কা মেট্রো কর্তাদের একাংশের।
এক মেট্রো কর্তা বলেন, “প্রায়ই শেষ মেট্রোর সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরে যে ট্রেনগুলি চলে তাতে কোনও যাত্রী থাকেন না। তবু নিয়মানুবর্তিতা রক্ষার খাতিরে ওই ট্রেনগুলি চালাতে হয়। এতে ট্রেন এবং স্টেশনে আলো, বিদ্যুৎ, পাখা-সহ সব কিছুর অপচয় হয়। অনেক কর্মীকে অহেতুক রাত পর্যন্ত আটকে রাখতে হয়।”
অন্য এক মেট্রো কর্তার দাবি, সকালের পরিষেবা ঠিক মতো চালু রাখতে দমদম এবং নিউ গড়িয়ায় নির্দিষ্ট সংখ্যক মেট্রো পৌঁছে দিতেই ওই ব্যবস্থা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy