আবাসনের নীচে মদের দোকান খোলার প্রতিবাদে রবিবার বাগুইআটির জ্যাংড়ায় পথে নামলেন বাসিন্দারা। সঙ্গী রাজনৈতিক নেতারাও।
জ্যাংড়ার জর্দাবাগান সেতু সংলগ্ন একটি আবাসনের নীচে সম্প্রতি ওই দোকান খোলা হয়েছে। পাশে রয়েছে আরও দু’টি বহুতল। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, সন্ধ্যা হলেই আবাসনের নীচে মোটরবাইকে চড়ে প্রচুর অপরিচিত মুখের ভিড় দেখা যাচ্ছে। মদের দোকানের উল্টো দিকে খালপাড়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দোকান থেকে মদ কিনে অন্ধকারে বাইক দাঁড় করিয়ে চলছে মদ্যপান। যার জেরে পাড়ার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। একটি বহুতলের বাসিন্দা গৌতম দত্ত বলেন, ‘‘সন্ধ্যার পরে ওই রাস্তা দিয়ে হাঁটতে মহিলারা ইতস্তত বোধ করছেন।’’ আর একটি আবাসনের বাসিন্দা প্রতিমা দাস বলেন, ‘‘মূল রাস্তা হলে তবু কথা ছিল। কিন্তু যেখানে দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সেটা পাড়ার গলি। এখানে কেন মদের দোকান থাকবে?’’
যে আবাসনের নীচে মদের দোকান খোলা ঘিরে বিতর্ক, সেখানকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরকে আপত্তির কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। ওই আবাসনের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘জর্দাবাগান সেতুর কাছে শিশুদের একটি স্কুল রয়েছে। যানজট এড়িয়ে ভিআইপি রোডে যাওয়ার জন্য অনেক অভিভাবক বাচ্চাদের নিয়ে ওই পথে যাতায়াত করেন। দোকান বন্ধ না করলে ফ্ল্যাট বিক্রি করে অন্যত্র চলে যাওয়ার কথা ভাবতে হবে।’’
বিতর্কের আবহে রবিবার দলীয় পতাকা হাতে একযোগে মিছিল করেন এলাকার সিপিএম এবং কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। পরে দোকানের সামনে তাঁদের অবস্থান-বিক্ষোভে সামিল হন বহুতলগুলির বাসিন্দারা। কংগ্রেস নেতা সোমেশ্বর বাগুইয়ের দাবি, ‘‘২০০৬ সালে ওই দোকান খোলার চেষ্টা হলে তৎকালীন কংগ্রেস কাউন্সিলরের বিরোধিতায় ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া যায়নি।’’ সিপিএম নেতা শুভজিৎ দাশগুপ্তের প্রশ্ন, ‘‘রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভায় আমাদের বোর্ড যখন ছিল, তখন দোকান খোলা সম্ভব হয়নি। তা হলে এখন কী ভাবে অনুমতি পেল?’’
বিধাননগর সিটি পুলিশের এক আধিকারিক জানান, বিতর্কের জল কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছিল। সেই মামলায় মদের দোকানের মালিকের পক্ষেই রায় দিয়েছেন বিচারপতি। বাসিন্দাদের কোনও বক্তব্য থাকলে তাঁরা আদালতে যেতে পারেন। যার প্রেক্ষিতে স্থানীয় বাসিন্দা অপূর্ব সমাদ্দার বলেন, ‘‘জনবহুল এলাকায় মদের দোকান মানা যায় না। প্রয়োজনে আমরা আদালতে যাব। নববর্ষের পরে এলাকার মানুষ, ক্লাবগুলিকে নিয়ে বৈঠক করব।’’
এ বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সন্দীপ বাগুই বলেন, ‘‘কংগ্রেস-সিপিএম যৌথ ভাবে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা থাকাকালীনই ট্রেড লাইসেন্স পেয়েছেন দোকানের মালিক। কাগজপত্র রয়েছে। অসৎ উদ্দেশে মিছিল করা হয়েছে। তবে এলাকার পরিবেশ নিয়ে বাসিন্দাদের উদ্বেগের সঙ্গে সহমত। সে দিকটি দেখার জন্য প্রশাসনের কাছে জানাব।’’
মদের দোকানের মালিক রাজেশ পাল বলেন, ‘‘দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পরে প্রশাসনিক স্তরে প্রতিটি নিয়ম মেনে দোকান খুলেছি। হলফ করে বলতে পারি বাগুইআটি অঞ্চলে আর কেউ এত নিয়ম মেনে ব্যবসা করছেন না। দোকানের সামনে যাতে কেউ গালিগালাজ না করেন, তার জন্য আমি নিজে সক্রিয় থাকি। ব্যক্তিগত স্বার্থে এই বিরোধিতা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy