ধৃত সঞ্জয় পাল। —নিজস্ব চিত্র
দিন তিনেক আগে সোনারপুরের এক নেশা মুক্তি কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিকে মারধর করে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল। এ বার বেহালায় একটি নেশা মুক্তি কেন্দ্রের মালিকের বিরুদ্ধে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল। বুধবার রাতে অভিযুক্তকে প্রোটেকশন অব চিল্ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্স (পকসো) আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম সঞ্জয় পাল। বেহালার মুচিপাড়া এলাকায় ‘সুরক্ষা’ নামে একটি নেশা মুক্তি কেন্দ্র চালান তিনি। অসংলগ্ন জীবনযাপনে অভ্যস্ত বজবজের বছর পনেরোর এক কিশোরীকে স্বাভাবিকতায় ফিরিয়ে আনতে মাস তিনেক আগে তাকে ওই কেন্দ্রে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন তার মা। বুধবার বিকেলে তিনি মেয়েকে দেখতে এসেছিলেন। কিশোরীটি তখনই তাঁকে ধর্ষণের কথা জানায়। মা কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে এসে আশপাশের লোকজনকে সব জানান। বাসিন্দারাই তাঁকে থানায় পাঠান।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, নেশামুক্তি কেন্দ্র গড়বেন বলে সঞ্জয় বছর দুয়েক আগে মুচিপাড়ার ওই দোতলা বাড়িটি ভাড়া নেন। সেখানে মদ, মাদক-সহ সব ধরনের নেশা থেকে মুক্ত করার চিকিৎসা হয় বলে তিনি বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞাপনও দিতেন। ওই কেন্দ্রের দোতলায় মহিলা এবং একতলায় পুরুষ রোগীদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। অম্বরীশ ঘোষ নামে এক স্নায়ু ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞের মোবাইল নম্বর দিয়ে কেন্দ্রের বাইরে একাধিক হোর্ডিং রয়েছে। কিন্তু এলাকার লোকজন জানান, এক জন রাঁধুনি, দু’টি যুবক এবং সঞ্জয় ছাড়া আর কাউকেই সেখানে খুব একটা দেখা যেত না। কখনও কোনও চিকিৎসক ওই কেন্দ্রে এসেছেন বলে তাঁরা মনে করতে পারছেন না।
আরও পড়ুন: অগ্নিদগ্ধ বৃদ্ধা, না বাঁচিয়ে ছবি তুললেন পড়শিরা
আশপাশের লোকজনের অভিযোগ, ওই কেন্দ্রের পুরুষ আবাসিকদের মারধর করা হত। সোনারপুরে একই ধরনের একটি কেন্দ্রে তো এক ব্যক্তিকে মারতে মারতে মেরেই ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রশ্ন উঠছে এই ধরনের নেশা মুক্তি কেন্দ্রগুলির বৈধতা নিয়ে।
এই ধরনের চিকিৎসা কেন্দ্র খোলার জন্য কোন কোন দফতর থেকে কী ধরনের অনুমতি নিতে হয়, পুলিশও তা জানে না। শুধু ‘সোসাইটি অ্যাক্ট ১৯৬১’-এ অনুমতি নেওয়া হয়েছে বলে মুচিপাড়ার ওই কেন্দ্রের বাইরে টাঙানো হোর্ডিংয়ে লেখা রয়েছে। সেটি আদৌ নেওয়া হয়েছে কি না, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। সমাজকল্যাণ দফতরের এক কর্তা জানান, তাঁরা এই ধরনের কেন্দ্রের জন্য কোনও অনুমতি দেন না। ফলে এই সব কেন্দ্র কার বা কাদের অনুমতিতে চলে, সেটা রহস্যই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy