দুর্দশা: জমা জল, জঞ্জালে বেহাল ওই আবাসন পরিদর্শনে পুরকর্মীরা। শনিবার, সল্টলেকে। ছবি: শৌভিক দে
ভাঙাচোরা কয়েকটি ভবন। চার দিকে প্রায় দেড় তলা সমান ঘন ঝোপজঙ্গল। যত্রতত্র জমে রয়েছে আবর্জনা।
কোনও ধ্বংসস্তূপ নয়, এই চিত্র পরিকল্পিত উপনগরী বিধাননগরের সিসি ব্লকে একটি কেন্দ্রীয় সরকারি আবাসনের। কয়েক বছর ধরে এই আবাসনের হাল এমনই। স্থানীয় সূত্রে খবর, সেখানে গত বছর ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছিল এক বালকের। আক্রান্ত হয়েছিলেন আরও অনেকে। ওই আবাসনের রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকমতো হয় না বলে অভিযোগ উঠেছিল এলাকাবাসী থেকে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে। শেষমেশ পুরসভা অভিযান চালিয়ে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সাময়িক কিছু পদক্ষেপ করেছিল।
এ বার বর্ষার আগেই ওই আবাসনে পরিদর্শন করে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখল বিধাননগর পুরসভা। শনিবার সকালে মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় এবং স্থানীয় ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তুলসী সিংহরায়ের নেতৃত্বে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক এবং পুরকর্মীরা ওই আবাসন পরিদর্শন করেন। তাঁদের বক্তব্য, এক বছরেও হুঁশ ফেরেনি। ওই আবাসনের অবস্থা রীতিমত উদ্বেগজনক বলে জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। তাঁদের সাফ কথা, কেন্দ্রীয় সরকারের ওই আবাসন যাঁদের দেখভাল করার কথা, তাঁদের নোটিস পাঠানো হবে। তাতেও কাজ না হলে আইনের দ্বারস্থ হবেন বিধাননগর পুর কর্তৃপক্ষ।
এ দিন সকালে ওই আবাসন পরিদর্শন করতে গিয়ে চমকে ওঠেন পুরকর্মীরা। আবাসনের মধ্যে পড়ে রয়েছে থার্মোকল, প্লাস্টিকের পাত্র, মাটির পাত্র, ডাবের খোলা। সে সবের মধ্যে জমে রয়েছে জল। আবাসনের চার পাশে ঝোপজঙ্গল এতটাই ঘন যে পুরকর্মীরাও সব জায়গায় ঢুকতে পারেননি। এক পুরকর্মীর কথায়, আবাসনের ভিতরে ঢুকলেই ঝাঁকে ঝাঁকে মশা ঘিরে ধরছে। আবাসনের মধ্যে রয়েছে খোলা নর্দমাও। বিভিন্ন জায়গার জমা জলে মশার লার্ভার সন্ধান পেয়েছেন পুরকর্মীরা। স্থানীয় ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তুলসী সিংহরায় জানান, এক-দু’বছর নয়। গত দশ বছর ধরে এমনই হাল ওই আবাসনের। একটি আবাসনের জন্য গোটা ১ নম্বর সেক্টরে মশার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। ওই কেন্দ্রীয় সরকারি আবাসনে পুরসভার কিছু করার থাকে না। তা সত্ত্বেও সেখানে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে পুরকর্মীরা কাজ করছেন। তুলসীবাবু বলেন, ‘‘পুরসভাকে অনুরোধ জানাব কড়া পদক্ষেপ করতে।’’
গত বছর ওই আবাসনের দুরবস্থার কথা জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছিল বিধাননগর পুরসভা। সিসি ব্লকের আশপাশের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, অবিলম্বে কড়া পদক্ষেপ করুক প্রশাসন। একটি আবাসনে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে গোটা এলাকার মশার আঁতুড়ঘরে পরিণত হচ্ছে। ভোগান্তি হচ্ছে সল্টলেকবাসীদের। এটা মানা যায় না।
মেয়র পারিষদ প্রণয় রায় বলেন, ‘‘এখনও বর্ষা আসেনি। তার আগেই যে অবস্থা দেখলাম, তা ভয়াবহ। আপৎকালীন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। পুরসভার তরফে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করব। কাজ না হলে আইনের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হব।’’
যদিও ওই আবাসন দেখভালের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় সরকারি দফতরের অফিসে গিয়ে কারও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy