ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জেরে ফাটল রাস্তায়। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গে ঢুকতে থাকা জল আটকানোই এখন সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বৌবাজারের দুর্গা পিতুরি লেনে মাটির নীচে জলপ্রবাহ আটকাতে পারলেই উপরের ধস ঠেকানো যাবে বলে মনে করছেন মেট্রোকর্তারা। কিন্তু ঠেকাবে কে?
সুড়ঙ্গে বিভিন্ন ‘অ্যাকুইফারে’ (ভূগর্ভে জলের স্বাভাবিক উৎস) সঞ্চিত জলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সেনাপতি হতে রবিবারেই দক্ষিণ আফ্রিকার সুড়ঙ্গ-বিশারদ পল ভেরলের সাহায্য চান মেট্রো-কর্তৃপক্ষ। আমন্ত্রণ পেয়ে সোমবার মুম্বই থেকে উড়ে আসেন পল। গঙ্গার নীচে মেট্রোর সুড়ঙ্গ খননের সময় প্রযুক্তিগত খুঁটিনাটি সামলানোর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বে নির্বিঘ্নে গঙ্গা পেরোনোর পরে ব্রেবোর্ন রোডের ফ্লাইওভার এবং সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন জীর্ণ বাড়ি অতিক্রম করে সুড়ঙ্গ। বি বা দী বাগের বহু হেরিটেজ বাড়ি পেরিয়ে জোড়া সুড়ঙ্গ পৌঁছয় এসপ্লানেডে। কলকাতার জল-বালি-কাদা-পলি মেশা মাটিকে তাই বিলক্ষণ চেনেন পল।
২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে আথেন্স, মিশর, মালয়েশিয়া-সহ নানা দেশে সুড়ঙ্গ খননের দায়িত্ব সামলানো পলের পরামর্শই এখন বৌবাজারের সুড়ঙ্গ-বিপত্তি সামলাতে মেট্রোর মূল ভরসা। তাঁকে সাহায্য করতে সঙ্গে এসেছেন এক জন ভূতত্ত্ববিদও। এসেই কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশেনের (কেএমআরসিএল) কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পল। ঘটনাস্থলে গিয়ে সুড়ঙ্গ ও ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলির অবস্থা খুঁটিয়ে দেখেন। মেট্রোর খবর, আজ, মঙ্গলবার পলের পরামর্শ মেনে জল আটকানোর কাজ শুরু হতে পারে।
ফাটল দেওয়ালে-ছাদে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
শনিবার রাত থেকে ‘গ্রাউটিং’ করে সুড়ঙ্গে ঢুকতে থাকা জল আটকানোর চেষ্টা করছিলেন মেট্রো-কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতে তেমন কাজ হয়নি। গ্রাউটিং পদ্ধতিতে সিমেন্ট বালি, বেন্টোনাইট-সহ কিছু রাসায়নিকের মিশ্রণের সাহায্যে জল আটকানো হয়। সোমবারেও সারা দিন পাম্পের সাহায্যে ওই মিশ্রণ ভূগর্ভে ঢুকিয়ে জলস্রোত ও ধস ঠেকানোর চেষ্টা চলে। তবে তাতে বিশেষ ফল মিলছে না। যদিও জলপ্রবাহ বন্ধের পরে এই পদ্ধতি চালিয়ে যেতে হবে বলে জানান মেট্রো-কর্তৃপক্ষ। কেননা তাতে ধস ঠেকানোর কাজটা অন্তত হবে।
এর আগে, গত বছরের শেষের দিকে গঙ্গার ধারে স্ট্র্যান্ড রোডের কাছে মেট্রোর ভেন্টিলেশন শ্যাফটের গর্ত খোঁড়ার সময় একই ধরনের বিপত্তি দেখা দিয়েছিল। খাড়া কুয়োর মতো গর্ত খুঁড়তে খুঁড়তে আচমকাই নদীর জল ঢুকতে শুরু করে। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়ায় যে, কিছু ক্ষণের মধ্যে ধস নামে চক্ররেলের লাইনেও। ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিতে হয়। পরে বিপরীত দিক থেকে পাল্টা জলের চাপ তৈরি করে সেই বিপত্তি সামাল দেন মেট্রো-কর্তৃপক্ষ। বৌবাজারেও ওই প্রযুক্তি কাজে লাগানোর চেষ্টা চলছে বলে মেট্রো সূত্রের খবর। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এক কর্তা বলেন, ‘‘সম্ভাব্য সব সমাধানসূত্র খুঁজতেই পলের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। জলের চাপ লাঘব করতে জল ব্যবহারের কথাও ভাবা হচ্ছে। সেই জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ঘটনাস্থলে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy