Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

কলকাতার কড়চা: বিসর্জনের বাজনা

‘অত লিখাপড়ি দিয়ে কুছু হোবে না’। এটুকু বলেই আব্বাস, কামাল, বিক্রমদের অনুরোধ— ‘ব্যান্ডের নাম লিখবেন না।’

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:১৩
Share: Save:

বছরটা ছিল ভয়ানক। ১৯৭৬। তখনও টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো পেরোতে চাইতেন না ট্যাক্সিচালকেরা। অঞ্জুশ্রী ও দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৌভাতের আগের দিন কিন্তু ওঁরা ঠিক চলে এসেছিলেন সুদূর কলেজ স্ট্রিট, মহাত্মা গাঁধী রোড থেকে, ‘পাকিজ়া’-র গান বাজাতে বাজাতে। তখন পথ এত সুগম হয়নি। তবু ওঁরা সবই এনেছিলেন সঙ্গে। ক্ল্যারিয়োনেট, স্যাক্সোফোন, ট্রাম্পেট, বিউগল, সানাই, বিগ ড্রাম, কেট্ল ড্রামস। সব নিয়ে এসেছিলেন নববধূর শ্বশুরবাড়ি আসার মুহূর্তকে সঙ্গীতমুখর করে তোলার জন্য। সে দিনের দলটি ছিল মেহবুব ব্যান্ড।

আর এই ২০১৯-এ! সুদিন গিয়েছে। বেশির ভাগ ব্যান্ড কোম্পানি আর কথাই বলতে চায় না। ভাবখানা এমন— কত লোকই তো আসছেন! কত কী লিখছেন! চার দিকে কত কী হচ্ছে! শুধু আমাদেরই হাল দিনে দিনে খারাপ হচ্ছে! ‘অত লিখাপড়ি দিয়ে কুছু হোবে না’। এটুকু বলেই আব্বাস, কামাল, বিক্রমদের অনুরোধ— ‘ব্যান্ডের নাম লিখবেন না।’ তার পর ডুব দেন বিষাদঘূর্ণিতে। ‘‘নতুন ছেলেরা এ প্রফেশনে কেন আসবে? আগের মতো আর রোজগার নেই। আগে পাঞ্জাবি কাস্টমাররা রাস্তায় ব্যান্ডের গানের সঙ্গে নাচতে নাচতে টাকা ওড়াতেন। বাঙালিবাবুরা কত যত্ন করে খাওয়াতেন। উত্তমকুমার বিশ্বজিতের বাড়িতে কত বার বাজিয়েছি। কুড়ি-বাইশ জনের একটা দল যখন বাজাত, কত ভাল লাগত! এখন কাস্টমার এসে বলেন দশ থেকে বারো জনের বেশি লোক নেওয়া যাবে না! কেউ তো বুঝবে না একটা ব্যান্ড চালাতে গেলে কত কী দরকার হয়। আগে আমরা ড্রেস দোকানে কাচতে দিতাম। এখন যে যার ড্রেস ওই সামনের গঙ্গার জলে ধুয়ে নিই। কেউ ডাকে না। ডাকলে খেতে দেয় না। পকেটে যা আছে তাই দিয়ে খেতে হয়। বাপ-দাদার কারবার। এই কাজই শিখেছি। এখন নতুন করে কোন কাজ শিখি?’’

মহাত্মা গাঁধী রোড ধরে সারি সারি ব্যান্ডের একই হাল। ঘন শীতে উৎসবের মরসুমেও ওঁদের কাজ আজ প্রায় নেই। আক্ষেপ করছেন, ‘‘এখন ছোট ট্রাক, মানে ছোট হাতিতে বড় বড় বাক্স বসিয়ে মোবাইল বা অন্য কিছুতে গান চালাচ্ছে। আমরা এখন নতুন গান তুলি না। রিহার্সালও করি না। শেষ তুলেছিলাম ‘সাজন’ সিনেমার ‘দেখা হ্যায় পহেলি বার’। এখন কেউ ডাকলে পুরনো গানই চলে।’’ নিবে আসে গান জানা মানুষগুলোর কণ্ঠ, ‘‘নোটবন্দির আগে থেকেই ধুঁকছি। মালিক ভি খুশ নেই। বড়দিন পেরিয়ে গেল। অর্ডার এল না।’’ মহাত্মা গাঁধী রোডের ট্রামলাইনে ট্রাম-বাস বিষণ্ণ শব্দে এগিয়ে চলে। এগিয়ে চলে সময়। দেখা যাক ২০২০ ওঁদের জন্য কী খবর নিয়ে আসে।

শতবর্ষে

গণনাট্য সঙ্ঘ, চল্লিশ-পঞ্চাশ দশকের কমিউনিস্ট পার্টির সাংস্কৃতিক সংগঠন, যখন বদলে দিচ্ছে বাঙালির প্রাত্যহিক জীবনের আমূল চালচিত্র, তখন সে সঙ্ঘের নাট্যপ্রযোজনায় অভিনয় করে চলেছেন করুণা বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯১৯-২০০১)। অন্য দিকে তাঁর স্বামী সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯১৯-২০০৭) তখন কমিউনিস্ট পার্টির সক্রিয় কর্মী হওয়ার অপরাধে দেশের অন্য প্রান্তে কারারুদ্ধ। করুণার সত্যজিৎ রায়ের একাধিক ও মৃণাল সেনের একটি ছবির অভিনেত্রী হয়ে-ওঠা আরও পরের ঘটনা। তাঁর দু’খণ্ডব্যাপী রচনাসমগ্র সর্বজয়াচরিত্র থেকে জানা যায় তাঁর ও সুব্রতর আজীবন বামপন্থী রাজনৈতিক জীবনযাপনের বৃত্তান্ত, আছে তাঁর চলচ্চিত্র স্মৃতি ও ভাবনা, গল্পলেখাও। পাশাপাশি ‘‘সুব্রতর সম্প্রতি প্রকাশিত আত্মজীবনী ফ্র্যাগমেন্টস অব টাইম-এও সেই কাহিনিরই পরিপূরক চিত্র’’, জানিয়েছেন শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরই তত্ত্বাবধানে করুণা-সুব্রত দু’জনেরই জন্মশতবর্ষ উদ্‌যাপন করবে প্রগতি লেখক সঙ্ঘ, ভারতীয় গণসংস্কৃতি সঙ্ঘ, কালান্তর পত্রিকা। শমীক-সহ বলবেন করুণা-সুব্রতর কন্যা শম্পা (‘পথের পাঁচালী’ ছবির ছোট দুর্গা) এবং দেবেশ রায়। ২ জানুয়ারি ভূপেশ ভবনে বিকেল সাড়ে ৪টেয়। সঙ্গে ‘সর্বজয়া’ করুণা।

শীতের গান

শহরে এখন জম্পেশ শীত, কিন্তু ক’দিনই-বা, কলকাতায় দীর্ঘস্থায়ী শীতের রেকর্ড বড়ই দুর্বল। সে জন্যেই কি রবীন্দ্রনাথ তাঁর গানে শীতকে অল্প জায়গা দিয়েছেন? কলকাতার ক্ষণস্থায়ী শীতের মতোই কবির ঋতুসঙ্গীতে শীতের গানও স্বল্পসংখ্যক, মাত্র ১২টি। তা ছাড়া মূলত বর্ষা আর বসন্তের রবীন্দ্রগানই বাঙালির মুখে-মুখে ফেরে। তাই আগ্রহীদের রবীন্দ্রনাথের শীতের গান শোনাতে উদ্যোগী রোহিণী ও দেবাশিস রায়চৌধুরী, কন্যা ও পিতা। তাঁদের ১২টি শীতের গানের অ্যালবাম বেরোচ্ছে ভাবনা রেকর্ডস থেকে: ‘শীতের বেলা’। প্রেস ক্লাবে ২ জানুয়ারি বিকেল ৪টেয়, পবিত্র সরকার ও বরুণ চন্দ-র উপস্থিতিতে। অ্যালবাম থেকে দু’একটি গানও শোনাবেন পিতা-পুত্রী সে সন্ধ্যায়।

গুরুদক্ষিণা

সম্প্রতি যাদবপুর বিদ্যাপীঠের ১৯৮৭-১৯৮৮ মাধ্যমিক ব্যাচের ছাত্র-ছাত্রীরা এক মিলনসভার আয়োজন করেছিলেন। ছাত্রছাত্রীদের পুনর্মিলন অসাধারণ কোনও ঘটনা নয়। কিন্তু এর অভিনবত্ব হল এই যে এটি প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের উদ্যোগে তাদের ছাত্রজীবনের শিক্ষকশিক্ষিকাদের জন্যে আয়োজিত এক পুনর্মিলন উৎসব। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অধিকাংশের সঙ্গেই যোগাযোগ আস্তে আস্তে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাই সেই মানুষগুলিকে নিজেদের ছোটবেলার স্মৃতি থেকে তুলে এনে আর এক বার তাঁদের সঙ্গে নিজেদের ছোটবেলায় ফেরার এ এক অনন্য প্রয়াস। যেখানে আজকের মধ্যবয়স্ক মানুষেরা তাঁদের সংসার, সন্তান, কর্মক্ষেত্র সব ভুলে আবার ফিরে যেতে পারেন তাঁদের অতিপরিচিত ক্লাসরুমে। যে শিক্ষককে দূরে সিঁড়িতে দেখলেও ছাত্ররা পালাত ভয়ে, যাঁর ক্লাসে কেউ কথা বলত না শিক্ষণের অপূর্ব ভঙ্গিতে, কিংবা ভাল ফল করলে যে শিক্ষক বুকে টেনে নিতেন— তাঁদের সামান্য গুরুদক্ষিণা এই অনুষ্ঠান।

আইন ও অর্থনীতি

শীতের কলকাতার একটা মস্ত প্রাপ্তি, বিদেশ থেকে এই সময় দেশে ফেরেন জ্ঞানীগুণী বঙ্গসন্তানেরা। শহরের সভাঘরগুলো জমজমাট হয় তাঁদের ভাষণে, আলোচনায়। ৪ জানুয়ারি গোলপার্কের রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচারের সভাঘরে সন্ধে ৬টায় তেমনই এক অনুষ্ঠান। বক্তা অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু। অর্থনীতির সঙ্গে আইনের সম্পর্ক নিয়ে দীর্ঘ দিন চর্চা করছেন তিনি। ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয়েছিল বই দ্য রিপাবলিক অব বিলিফস। শনিবার হীরক ঘোষ স্মারক বক্তৃতায় অধ্যাপক বসু এই সম্পর্কের কথাই আলোচনা করবেন। অতীত আর বর্তমানের উদাহরণ দিয়ে বলবেন, আইন আর অর্থনীতির সম্পর্ক বুঝলে কী ভাবে দেশের নীতিগুলো আরও বেশি উপযোগী হয়ে উঠতে পারে, কী ভাবে এই দুনিয়া আরও খানিক বাসযোগ্য হতে পারে।

অন্ধকারে একা

‘‘কিছু লেখার জন্মই হয় সময়ের ধারাবিবরণী দিতে গিয়ে। আজ মনে হয় সময় এসেছে, এক দিন একজোট হয়ে কেবল সেইসব লেখা পড়বার, যারা কেবলমাত্র এই অন্ধকারের কথাই বলে। এ সময়ে দাঁড়িয়ে, এটুকুই কেবল করতে পারি আমি। তবে আমার একার এমন সাহস হতো না কখনও, যদি না ‘কৃতি’-র তরুণ ও উদ্যমী ভাবুকরা এগিয়ে এসে আমায় এ প্রস্তাব দিতেন যে, কেবলমাত্র এই ধরনের লেখাদের নিয়ে একখানা জমায়েত করা যাক এ বার। এমন অনুষ্ঠান আগে কোথাও হয়েছে কি না জানা নেই, যার উদ্দেশ্য কেবল এবং কেবলই অন্ধকারের কথা বলা। যার কোথাও উদ্‌যাপনের লেশমাত্র নেই, কেবল আছে নিমজ্জনের সংলাপধ্বনি।’’ বলছেন শ্রীজাত। ‘কৃতি’র আয়োজনে ‘অন্ধকার শ্রীজাত’, ৫ জানুয়ারি বেলা ১২টা থেকে, নিউ টাউন আর্টস একর প্রেক্ষাগৃহে তাঁর একক পাঠের অনুষ্ঠান।

কাহ্ন সমগ্র

নতুন কবিদের হইচই নিয়ে অনিয়মিত ভাবেই বেরোত শিবাশিস মুখোপাধ্যায় ও পিনাকী ঠাকুর সম্পাদিত ‘কাহ্ন’ পত্রিকা। নব্বই দশকের তরুণদের লেখায় ঝলমল করত প্রতিটা সংখ্যা। অগ্রজ কবিরাও কাহ্নর পাতায় মিশে থাকতেন তরুণ হয়েই। শঙ্খ ঘোষের প্রবাদ হয়ে যাওয়া কবিতা ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ বেরিয়েছিল কাহ্নতেই। বাদল বসু এখানে নিয়মিত লিখতেন টুকরো গদ্য। কাহ্নর সব ক’টি সংখ্যা নিয়ে সমগ্র সঙ্কলন প্রকাশ করছে পরম্পরা প্রকাশন। ভূমিকা লিখে দিয়েছেন শঙ্খ ঘোষ, প্রকাশও করবেন তিনিই। ৪ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টায় জীবনানন্দ সভাঘরে। অনুষ্ঠানে কবিতা পড়বেন বিশিষ্ট কবিরা।

আত্মীয়বিয়োগ

চলে গেলেন অপূর্ব বিশ্বাস। মাত্র ৬৭ বছর বয়সে। রবীন্দ্রনাথের গান থেকে তপন সিংহের সিনেমা, বাংলা নাটক— তাঁর গবেষণার ক্ষেত্র ছিল বহুমুখী। কিন্তু, তার চেয়েও অনেক বিস্তৃত ছিল তাঁর সংসার— হিন্দু স্কুলে তেত্রিশ বছর বাংলার শিক্ষকতাসূত্রে পাওয়া বহু হাজার ছাত্রের সংসার। অধিকাংশ ছাত্রের কাছেই আর ‘স্যর’ হয়ে থাকেননি তিনি, হয়ে উঠেছিলেন অপুদা। একান্ত আপনজন, মনখারাপের কথা খুলে বলা যেত যাঁকে। যাঁর কাছে পাওয়া যেত নিজের মতো করে ভাবার সাহস। ক্যানসারে তাঁর অকালমৃত্যুর পর বিভিন্ন ব্যাচের ছাত্ররা সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর স্মৃতিচারণ করে লিখছেন, কী ভাবে কোনও দিন কারও গায়ে হাত না তুলে, এমনকি এক বার ধমক না দিয়ে শুধু পড়ানোর জাদুতে গোটা ক্লাসকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতেন তিনি। কী ভাবে সাহিত্য পাঠ করতে হয়, শেখাতেন। এক মুহূর্তের জন্যেও নিজে প্রগল্‌ভ না হয়ে কী ভাবে ছাত্রদের বন্ধু হতে হয়, তার আশ্চর্য উদাহরণ ছিলেন অপুদা। তাঁর মৃত্যুতে তাই ছাত্রদের আত্মীয়বিয়োগের শোক।

দ্বান্দ্বিকের উৎসব

সরকারি প্রশাসনের উচ্চ পদে আসীন থেকেও গ্রুপ থিয়েটারই ছিল তাঁর মন-প্রাণ-ধ্যান। বিডিও, এডিএমের মতো পদের গুরুদায়িত্ব সামলে তিনি সমান উৎসাহে নাট্যচর্চা করে সত্তর ও আশির দশকে বাংলার নাট্যোৎসাহীদের নজর কেড়েছিলেন। হাওড়ার দ্বান্দ্বিক নাট্যসংস্থা গড়ায় ভূমিকা ছিল তাঁর। ২৭ বছর আগে এক পথদুর্ঘটনা নাটক-অন্ত প্রাণ অচিন্ত্য চৌধুরীর জীবনছন্দে যতিচিহ্ন এঁকে দেয়। তার পর থেকে দ্বান্দ্বিককে আগলে রেখেছেন অচিন্ত্যের অনুজরা, তাঁর উত্তরসূরিরা। দ্বান্দ্বিক-এর ২২তম নাট্যোৎসব শুরু হচ্ছে ৪ জানুয়ারি। এ বার অচিন্ত্য স্মারক সম্মান পাবে ‘চাকদহ নাট্যজন’। বাংলাদেশের সায়িক সিদ্দিকির নাটক ‘ভানুসুন্দরীর পালা’ মঞ্চস্থ করে এঁরা সারা বাংলার দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ৬ জানুয়ারি আশিস চট্টোপাধ্যায় এই সম্মাননা তুলে দেবেন। একই সঙ্গে নাটকটি মঞ্চস্থও করবেন চাকদহ নাট্যজন-এর শিল্পীরা। ৭ জানুয়ারি বর্তমান গ্রুপ থিয়েটারের গতিপ্রকৃতি নিয়ে সুশান্ত চৌধুরী স্মারক ভাষণ দেবেন নাট্যব্যক্তিত্ব সুরঞ্জনা দাশগুপ্ত। এ ছাড়া ৪-৯ জানুয়ারি বিভিন্ন সন্ধ্যায় হাওড়ার রামরাজাতলার বাণী নিকেতন প্রেক্ষাগৃহে নানা নাটক।

স্মারক বক্তৃতা

পঞ্চাশের দশকে ভারতবর্ষে যে অল্প কয়েক জন নারী সংস্কৃত সাহিত্য ও দর্শনে বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন তাঁদের মধ্যে চিন্ময়ী চট্টোপাধ্যায় (১৯২৯-১৯৯৯) অন্যতম। তাঁর জন্ম বর্তমান বাংলাদেশের চুয়াডাঙায়, পরে তাঁদের পরিবার হুগলির চুঁচুড়া শহরে চলে আসে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে তিনি সংস্কৃতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ ডি এবং অক্সফোর্ড থেকে এম লিট করেন। ১৯৬১ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত বিভাগে অধ্যাপনায় যুক্ত হন। তাঁর ছাত্রছাত্রীরা ছড়িয়ে আছেন দেশেবিদেশে। তিনি বারোটি গ্রন্থের রচয়িতা। তাঁর ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ৬ জানুয়ারি গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচারের বিবেকানন্দ সভাগৃহে ‘চিন্ময়ী চট্টোপাধ্যায় প্রথম স্মারক বক্তৃতা’ দেবেন বিশিষ্ট দার্শনিক অরিন্দম চক্রবর্তী। বিষয়: ‘ঈশ্বরপ্রেম, প্রেমের অদ্বৈত, প্রেমের ত্রিকোণ: অগাস্টিন, মধুসূদন সরস্বতী, রূপ গোস্বামী ও রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ’। সভামুখ্য নির্মাল্যনারায়ণ চক্রবর্তী, প্রধান আলোচক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি।

সফরনামা

ক্যালকাটা কারবাঁর (ইতিহাস, ঐতিহ্য পরম্পরা, সাহিত্য নির্ভর গল্প কথকদের একটি অভিনব উদ্যোগ) নবম হেরিটেজ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে ৪ জানুয়ারি ২০২০, আইসিসিআর-এর অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর গ্যালারিতে, বিকেল ৫টায়। এ বারের বৈঠকের শিরোনাম ‘সফরনামা’। ক্যারাভান নিয়ে মুসাফিরের দল, বণিকের দল দূর দূরান্ত পাড়ি দিত। চলার পথে পথে তারা গল্প কুড়িয়ে নিয়ে চলত। চলার পথের সেই সব আকর্ষক কিস্‌সা নিয়ে গল্প শোনাবেন আসিফ খান দেহল্‌ভি। সুপর্ণা দেবের দাস্তানগোই শোনাবে ক্যারাভানসরাই-এর দাস্তান। গানে ঋষিতা সাহা। আগাগোড়া চিত্তাকর্ষক ভ্রমণের গল্পে মোড়া এই বৈঠক, ভ্রমণপ্রিয় ও মজলিশি শ্রোতাদের কাছে নিয়ে আসছে এক জমজমাট সন্ধে। এই সঙ্গে ক্যালকাটা কারবাঁ দ্বিতীয় বছর পূর্ণ করবে।

বেথুন সম্মিলনী

প্রাসাদের মতো কলেজবাড়ি। সিঁড়িটাও হগওয়ার্টস স্কুলের মতোই আশ্চর্য। বিরাট, অতিবৃদ্ধ, তবু কী বলশালী আর ঋজু! তারই এক পাশে ওই বিশাল বোর্ড। সেখানে খোদিত এই কলেজ থেকে পাশ করা দিগ্বিজয়িনীদের নাম। শীর্ষে উজ্জ্বল চন্দ্রমুখী বসু ও কাদম্বিনী বসু (গঙ্গোপাধ্যায়)। এই বেথুন কলেজ থেকেই তাঁরা দু’জন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তথা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রথম মহিলা গ্র্যাজুয়েট হয়েছিলেন। প্রাক্তনীদের সেই নক্ষত্রপুঞ্জে সরলাদেবী চৌধুরানি, কামিনী রায়, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, ইলা মিত্র, শোভা সেন, সাধনা বসু, ভাটনগর বিজয়িনী নীনা গুপ্তা প্রমুখ অগণিত নাম। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম মহিলা গ্র্যাজুয়েটও বেথুন কলেজেরই। বেথুন সাহেবের স্কুল থেকে সম্প্রসারিত হয়ে ১৮৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ভারতের প্রথম মহিলা মহাবিদ্যালয় বেথুন কলেজ। ১৯২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তদানীন্তন অধ্যক্ষ মিস রাইটের উদ্যোগে গড়ে ওঠে ‘ওল্ড স্টুডেন্টস গিল্ড’, কালক্রমে যা হয় প্রাক্তন ছাত্রী সমিতি, অধুনা ‘বেথুন কলেজ সম্মিলনী’। শতবর্ষে প্রবেশ করতে চলেছে এই সম্মিলনী। প্রাক্তন ছাত্রী ছাড়াও বর্তমান ও প্রাক্তন অধ্যাপকরা এই সমিতির সদস্য। সকলকে সঙ্গে নিয়ে বছরভরই চলে পুনর্মিলন, সভা, সেমিনার, নাট্য ও সংস্কৃতি চর্চা। ৭ ফেব্রুয়ারি পুনর্মিলন, আর শতবার্ষিক প্রতিষ্ঠা দিবসের সূচনা ২০২০-র ৩ সেপ্টেম্বর।

পথের গীতালি

কলকাতার আকাশে বাতাসে রাস্তাঘাটে ভেসে বেড়ায় সুর ও ছন্দ। গঙ্গার ছলাৎ জল, মন্দিরের ঘণ্টার ঢং, আজানের রেশ, জীবনের চাকা ছোটার ঘড়ঘড়, নববধূর চুড়ির টুংটাং, বৈঠকখানায় পিয়ানোর ঝঙ্কার। এই সব জীবনসঙ্গীতকেই কণ্ঠে ও যন্ত্রে অমরত্ব দেন পথ সঙ্গীতকাররা। সেই নিয়েই আয়োজিত হতে চলেছে ‘কলকাতা স্ট্রিট মিউজ়িক ফেস্টিভ্যাল— সিজ়ন ওয়ান’। ২০২০-র ৪ জানুয়ারি, আইসিসিআর-এর স্পাইস অ্যান্ড সসেজ়-এ। ভাবনায় সুদীপ্ত চন্দ, আয়োজনে সোমা দাস, কৌশিক ইভেন্টস ও দ্য ড্রিমার্স। এই অভিনব সমাবেশে থাকবেন বাঁশি বিক্রেতা মহম্মদ ইবরান, অনিল মহান্ত, রাজপথের বেহালাবাদক সৌরজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর দল থার্ড স্টেজ। সুবল দাস বৈরাগ্যের দল গাজন, বহুরূপী, চণ্ডীমঙ্গল ও মনসামঙ্গলের গান শোনাবেন। চুঁচুড়ার কুন্তল শীল হারমোনিকায় সুর তুলবেন। নীলাঞ্জন সাহা আসরে থাকবেন সেই মিউজ়িকাল স্যান্ডউইচ নিয়ে। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পটচিত্রকর কল্পনা শোনাবেন পটের গান। তাঁদের গান রেকর্ডেরও ব্যবস্থা করবে ইনরেকো।

বৃক্ষবন্দনা

‘সাহেববাবা’ রেভারেন্ড জেমস লঙের নাম আমরা হয়তো ‘নীলদর্পণ’ নাটকের সূত্রে স্মরণ করি, কিন্তু তাঁর ‘দি ইন্ডিজেনাস প্ল্যান্টস অব বেঙ্গল’ শিরোনামের সুবিশাল প্রবন্ধটি বাংলার সঙ্গে লঙের নাড়ির যোগের নিদর্শন। ১৬০ বছর আগে এগ্রিকালচারাল সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত রচনাটি বাংলাদেশের গাছপালার বিজ্ঞানভিত্তিক ক্ষেত্র সমীক্ষার এক অমূল্য দলিল। অগ্রন্থিত এই প্রবন্ধটি নিয়ে পরিশ্রমী আলোকপাত করেছেন স্বপন মুখোপাধ্যায়, ‘দুর্বার কলম’ পত্রিকার ‘বৃক্ষবন্দনা’ সংখ্যায়। আমন্ত্রিত সম্পাদক দিলীপ মজুমদার সঙ্কলনটিকে আঠেরোটি উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধে সাজিয়েছেন, যেখানে উঠে এসেছে প্রাচীন ভারতে বৃক্ষচেতনা, রবীন্দ্রনাথের বৃক্ষভাবনা ও শান্তিনিকেতনে তার প্রকাশ, চিপকো আন্দোলন, অরণ্য ও অরণ্যের অধিকারের মতো বিষয়। এ ছাড়া আছে বৃক্ষজননী ওয়াঙ্গারি মাথাই, অমৃতা, গৌরা দেবীর লড়াইয়ের কথা এবং ‘রোগ সারাতে গাছ-গাছড়া ও ফল-পাকড়’-এর দীর্ঘ তালিকা।

শুভম নাট্যমেলা

শীতের সন্ধ্যায় টিমটিমে আলোয় জোর কদমে মহড়া চলেছে এত দিন... সাতটি নাটক নিয়ে টানা তিন দিন ধরে উৎসব। ১৮তম শুভম নাট্যমেলা। ১৮-র সাতকাহন। মিনার্ভা থিয়েটারে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি। বিডন স্ট্রিট শুভম-এর এমনটাই দস্তুর, শুধু কনকনে শীত নয়, ঘর্মাক্ত গ্রীষ্ম বা ভিজে স্যাঁতসেতে বর্ষায় একই ভাবে নিরলস মহড়া চালানোর পর মঞ্চস্থ হয় নাটকগুলি। ছোটরা, বা ছোট থেকে বড় হয়ে ওঠে যারা, তারা প্রত্যেকেই নিয়মিত নাট্যচর্চার ভিতর দিয়ে তৈরি করে নেয় নিজেদের। বিডন স্ট্রিট শুভম-এর মতোই আছে বিডন স্ট্রিট শুভম রেপার্টরি-ও। বিজয়লক্ষ্মী বর্মণকে সম্মানজ্ঞাপন করে শুরু হবে এ উৎসব। ভীমবধ, শব চরিত্র কাল্পনিক, হযবরল, নট ফর সেল, অথঃ শিক্ষা বিচিত্রা, রূপ তেরা সস্তা না— এই ছ’টি নাটকের সঙ্গে সপ্তম নতুন নাটকটি: ‘সামিয়ানা’। সুনির্মল বসুর ‘উই ধরেছে সামিয়ানায়’ কবিতাটির সূত্রে শিকড় খোঁজার এ নাটক ফিরিয়ে নিয়ে যাবে ফেলে আসা দিন থেকে হারানো মূল্যবোধের কাছে। নির্দেশনা অনমিত্র খাঁ।

সৃজনে উৎসাহ

‘‘পায়ে পায়ে বারো বছর! এই ‘রাজ্য শিশু কিশোর উৎসব’ যখন শুরু করেছিলাম, অভিপ্রায় ছিল আগামী দিনের প্রতিভা তৈরি করা। নিছক উৎসব হিসেবে না দেখে এই নতুন ভাবে ভাবতে প্রাণিত করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিগত কয়েক বছরে যে শিশু-কিশোরেরা অংশ নিয়েছে এ-উৎসবে, তাদের অনেকেই আজ অভিনয়-গান-নাচ-মূকাভিনয়-আবৃত্তি-ছবি আঁকা-যন্ত্রবাদনে সম্ভাবনাময় শিল্পী হয়ে উঠেছে। এমনটাই চাই আমরা, ছোটদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের শিল্পসৃষ্টিতে উৎসাহ জোগাতে।’’ বলছিলেন অর্পিতা ঘোষ, শিশু কিশোর আকাদেমির সভাপতি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের অন্তর্গত এই আকাদেমির উদ্যোগে রবীন্দ্রসদন-নন্দন প্রাঙ্গণ জুড়ে এবং মিনার্ভা থিয়েটারে অনুষ্ঠিত হবে এ বারের দ্বাদশ উৎসব, ২-৬ জানুয়ারি। বিকেল ৫টায় রবীন্দ্রসদন প্রাঙ্গণের একতারা মুক্তমঞ্চে উদ্বোধন করবেন নারী ও শিশুকল্যাণ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী শশী পাঁজা। থাকবেন তথ্য-সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন ও শিল্পী যোগেন চৌধুরী। রাজ্যের সব জেলা থেকে সহস্রাধিক শিশু-কিশোর যোগ দিচ্ছে এতে।

রাজেন্দ্রলাল স্মরণ

ক্যামেরা নামক নতুন প্রযুক্তিটিকে আয়ত্ত করে আজ থেকে ১৫০ বছর আগে বহুশাস্ত্রজ্ঞ রাজেন্দ্রলাল মিত্র (১৮২২-১৮৯১) ভারতের পুরাতত্ত্ব চর্চায় জোয়ার এনেছিলেন। পুরী ও ভুবনেশ্বরের মন্দিরগুলির আলোকচিত্র তুলেছিলেন স্বহস্তে, সযত্নে। তাঁর ‘অ্যান্টিকুইটিজ় অব ওড়িশা’ গ্রন্থ সেই নবযুগের প্রবর্তনার অম্লান সাক্ষ্য। ব্রিটিশ প্রশাসনের একাংশ তাঁকে যেমন তাঁর প্রাপ্য সম্মানে ভরিয়ে দিয়েছিল, তেমনই বর্ণবৈষম্যবাদী অন্য একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসিত অপপ্রচারে নেমেছিল। কালের প্রবাহে সেই সব মূঢ়তা কোথায় তলিয়ে গিয়েছে; উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে রাজেন্দ্রলালের সাফল্য। প্রতি বছরের মতো এ বারেও রাজেন্দ্রলালের আলোকচিত্র-কৃতিকে সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যে ২-৪ জানুয়ারি (প্রতি দিন ৩-৭টা) কলেজ স্ট্রিটে সি গুহ স্মরণে বই-চিত্র প্রদর্শশালায় উদ্‌যাপিত হবে বেঙ্গল ফটোগ্রাফি ডে। এ বারের বাড়তি আকর্ষণ ১৫০ বছর আগে রাজেন্দ্রলালের তোলা মন্দির-চিত্রগুলির প্রদর্শন (সঙ্গে তারই একটি)। পাশাপাশি থাকবে ওই মন্দিরগুলিরই আধুনিক আলোকচিত্র। ২ জানুয়ারি বিকেল ৫টায় মেক্সিকোর সেন্টার ফর এশিয়ান স্টাডিজ়-এর অধ্যাপক, জগন্নাথ-মন্দির বিশেষজ্ঞ ঈশিতা বন্দ্যোপাধ্যায়-দুবের আলোচনা এ অনুষ্ঠানকে মর্যাদাবান করে তুলবে।

পরিযায়ী পাখিরা আবার ফিরে আসবে তো

শীতের কলকাতার অতিথি কারা? সার্কাস, ইডেনে ক্রিকেট দল, সান্তা ক্লজ়, সরস্বতী ঠাকুর আর? আর দেশ-বিদেশের সুন্দরীশ্রেষ্ঠা পরিযায়ী পাখিরা। তারা শুধু আলিপুর চিড়িয়াখানা বা সাঁতরাগাছির ঝিলেই ঘুরতে আসে না। চুপিচুপি এসে লুকিয়ে বসে থাকে রবীন্দ্র সরোবরের আশপাশে, সাফারি পার্কে, নলবন, রাজারহাটের ঘেসোজমিতে। অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পাখির ছবি-তুলিয়ে আর পাখিপ্রেমীদের বেজায় মজা। দেশের রংবাহারি মাছরাঙা, কোঁচ বক, হলদে বেনেবৌ পাখি তো আছেই। দূর হিমালয়ের পাখি এসে লেকের ধারের গাছের পাতার মধ্যে লুকিয়ে রোদ পোহায়। ইউরোপে যে পাখির মন ভোলানো গান শোনা যায়, সে ‌ইকো পার্ক সংলগ্ন জলাজমি থেকে ডাক দেয়। অক্টোবর নাগাদ রাজারহাটের জলের কাছে ডিমে তা দেয় ফেজ়েন্ট টেলড জাকানা, কমন কুট। ক’দিন বাদেই ঘাসের ফাঁকে দেখা মেলে ট্রাইকালার্ড মুনিয়া, প্রিনিয়া, স্ট্রবেরি ফিঞ্চের। ঢাকুরিয়ার বাগানে ঘোরে কপার স্মিথ বারবেট। সাগর পেরিয়ে আসে প্যারাডাইস ফ্লাইক্যাচার, সাইবেরিয়ান রুবি থ্রোট, ব্লু থ্রোট। এই সব পাখিরা নাকি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তাদের যাত্রাপথের জলাজমিগুলি চিনে রেখেছে। তাই প্রতি শীতে ঠিক চলে আসে। কিন্তু, এই শহর গণ্যমান্য অতিথিদের আপ্যায়ন করে? বোধ হয় না। বাড়ছে দূষণ, কমছে পাখির বাসস্থান। জলাশয়, মাঠ শপিং মল আর ফ্লাইওভারের গ্রাসে। রাজারহাটের সবুজও ক্রমেই ধূসর হচ্ছে। তাই এই শহরে পাখি আর কত দিন, ভাবনার বিষয়। বিষণ্ণ সুরে বললেন স্থাপত্যবিদ ও পাখিপ্রেমী শুভ্রাংশু চট্টোপাধ্যায়। (সঙ্গে তাঁর তোলা ফেজ়েন্ট টেলড জাকানা, বাবার সঙ্গে ছানা। ওদের সংসারে বাবারা শিশুদের দেখভাল করে)।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy