গত বছরের ৩০ নভেম্বর জি ডি বিড়লা স্কুলে নার্সারির পড়ুয়া এক শিশুকন্যাকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল শারীরশিক্ষার দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার তদন্তে পুলিশ নিষ্ক্রিয়, এই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছেন শিশুটির বাবা। কিন্তু কেন শিশু পড়ুয়ার উপরে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠল এবং তার প্রেক্ষিতে স্কুল কর্তৃপক্ষই বা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, সোমবার মামলার শুনানিতে তা জানতে চাইলেন হাইকোর্টের বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া। ওই স্কুলের পড়ুয়াদের কল্যাণের জন্য অথবা স্কুল পরিচালনার সময়ে ভবিষ্যতে এই ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কর্তৃপক্ষ কোনও নির্দেশিকা তৈরি করে থাকলে তা ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদালতে জমা দিতে নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি।
কলকাতা পুলিশ ইতিমধ্যেই বিচারপতি পাথেরিয়ার আদালতে জানিয়েছে, অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার চার্জশিটও পেশ হয়েছে আদালতে। তবে মামলায় স্কুল কর্তৃপক্ষকে যুক্ত করা হলেও কর্তৃপক্ষ বা তাঁর প্রতিনিধি আগের শুনানিতে হাজির হননি। গত শুক্রবারের সেই শুনানিতে স্কুল কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিকে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। সেই মতো এ দিন স্কুলের পক্ষে আদালতে হাজির ছিলেন আইনজীবী সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেন একটি শিশুর উপরে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠল, এ দিনের শুনানিতে সব্যসাচীবাবুর কাছে জানতে চান বিচারপতি পাথেরিয়া। তাঁর মন্তব্য, ‘‘স্কুল কর্তৃপক্ষকে মনে রাখতে হবে, তাঁরা শিশুদের নিয়ে কাজ করছেন। তাদের জন্য স্কুলে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে কি? প্রত্যেক স্কুলেই কাউন্সেলর থাকা উচিত।’’
বিচারপতি জানান, পড়ুয়াদের মধ্যে কেউ কেউ অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। অথচ তাদের মা-বাবা কিছু জানতেও পারছেন না। কোথায় পড়ুয়াদের সমস্যা হচ্ছে, কেন তারা নিজেদের সমস্যার কথা খুলে বলতে পারছে না, সে সব দেখা উচিত স্কুল কর্তৃপক্ষের। জি ডি বিড়লা স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের সময়ে তাঁদের কোন কোন বিষয় যাচাই করে দেখা হয়, সব্যসাচীবাবুর কাছে তা-ও জানতে চান বিচারপতি পাথেরিয়া।
নির্যাতিতা শিশুটির বাবার আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেবাল এ দিন আদালতে জানান, তাঁর মক্কেলের মেয়ে এক বছর ধরে স্কুলে যেতে পারছে না। বয়স পাঁচ হয়ে যাওয়ায় অন্য স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রেও অসুবিধা হচ্ছে। তা ছাড়া, অন্য কোথাও ভর্তি হতে গেলে আবার অনেক টাকা লাগবে। সেই টাকা তাঁর মক্কেলের নেই।
সব শুনে স্কুলের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি জানান, মনে রাখতে হবে, কোনও কারণ ছাড়াই একটি শিশু মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছে। তার ভর্তির ব্যবস্থা করতেই হবে। বিচারপতি আরও জানান, জি ডি বিড়লা স্কুল ট্রাস্টি পরিচালিত। কলকাতায় ওই গোষ্ঠীর আরও অনেক স্কুল আছে। তার কোনওটিতে শিশুটিকে ভর্তি করানো যায় কি না, তা পরবর্তী শুনানির দিন আদালতকে জানাতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy