হেরিটেজ ভবনটির মালিক রয়্যাল ক্যালকাটা টার্ফ ক্লাব (আরসিটিসি)। — ফাইল চিত্র।
শহরের বুকে গ্রেড ওয়ান তালিকাভুক্ত একটি হেরিটেজ ভবন চত্বরে ৩৫তলা আবাসিক বহুতল নির্মাণের প্রস্তাব ঘিরে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। ঘটনাস্থল মধ্য কলকাতার অন্যতম অভিজাত এলাকা বলে পরিচিত রাসেল স্ট্রিট। ঘটনাচক্রে ওই হেরিটেজ ভবনটির মালিকানা রয়েছে শহরের একটি নামী ক্লাবের হাতে। সম্প্রতি ওই ৩৫তলা বহুতলটি নির্মাণের প্রস্তাবে সিলমোহর দিয়েছে কলকাতা পুরসভার মেয়রপরিষদ। তার পরে সেটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের কাছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই আপত্তি জানিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা।
জানা যাচ্ছে, রাসেল স্ট্রিটে দোতলা ওই হেরিটেজ ভবনটির মালিক রয়্যাল ক্যালকাটা টার্ফ ক্লাব (আরসিটিসি)। পুরসভা সূত্রের খবর, ২০০৪ সালে ওই বাড়িটির পিছনে ফাঁকা জমিতে হোটেল ব্যবসার জন্য একটি বহুতল নির্মাণের প্রস্তাব পুরসভায় জমা দেন আরসিটিসি কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি সেই প্রস্তাব পরিবর্তন করে ক্লাবের তরফে আবাসিক বহুতল তৈরির প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়। যা পুরসভার হেরিটেজ কমিটিতে উত্থাপিত হলে আপত্তি জানান কমিটিরই এক সদস্য।
পুরসভার পরিবেশ বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘নিয়মানুযায়ী, গ্রেড ওয়ান তালিকাভুক্তহেরিটেজ ভবন চত্বরে অন্য কোনও নির্মাণের অনুমতি দেওয়া যায় না। ওই হেরিটেজ ভবন এবং প্রস্তাবিত বহুতল, দু’টির ঠিকানা এক হওয়ায় পুর হেরিটেজ কমিটির এক সদস্যআপত্তি জানিয়েছেন।’’ যদিও পুর আইন বিভাগের এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘প্রস্তাবিত বহুতল এবং ওই হেরিটেজ ভবন, দু’টির মধ্যে দূরত্ব ২১ ফুট। পুর হেরিটেজ কমিটির এক জন সদস্য আপত্তি জানালেও বাকি সদস্যেরা এই প্রস্তাবের সঙ্গে সহমত হয়েছেন।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, ৩৫তলা বহুতল তৈরির প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য কয়েক মাস আগে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছে পাঠানো হয়েছিল। এক পুর আধিকারিক বলেন, ‘‘অ্যাডভোকেট জেনারেল নিজে ওই ক্লাবের সদস্য হওয়ায় তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠতে পারে, সেই আশঙ্কায় তিনি ওই দায়িত্ব নেননি। এর পরে পুরসভার তরফে কলকাতা হাই কোর্টের এক সরকারি আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া হয়। ওই আইনজীবীর তরফে জানানো হয়, পুরসভা ওই হেরিটেজ বাড়ির কাছে বহুতল তৈরির অনুমোদন দিতে পারে।’’
এই প্রসঙ্গে পরিবেশ ও হেরিটেজ বিভাগের মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দারের যুক্তি, ‘‘আইনি পরামর্শ নিয়ে এবং যাবতীয় নিয়মকানুন মেনেই ওই ক্লাবের জমিতে ৩৫তলা আবাসিক বহুতল নির্মাণের ছাড়পত্র দিতে চলেছি। তা ছাড়া, হেরিটেজ ভবনটির নির্মাণশৈলী সম্পূর্ণ অক্ষুণ্ণ রাখা হবে।’’
যদিও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। পরিবেশকর্মী বনানী কক্করের অভিযোগ, ‘‘ওই হেরিটেজ ভবন চত্বরে শুধু ৩৫তলা বাড়িই নয়, এক হাজার গাড়ি রাখার পার্কিং লট থাকবে। তৈরি হবে শপিং মল। বিষয়টি নিয়ে আগেই মেয়র এবং পুর কমিশনারের কাছে আপত্তি জানিয়েছিলাম। ওই চত্বরে একাধিক হেরিটেজ বাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। এমন অবাধ নির্মাণ হতে থাকলে এলাকার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy