প্রতীকী ছবি।
অতিমারির কারণে টানা প্রায় দেড় বছর ধরে কলকাতা পুরসভার রাজস্ব আদায় এমনিতেই তলানিতে ঠেকেছে। তার মধ্যে উঠেছে গাড়ি রাখা (পার্কিং) নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ। যা রুখতে ইতিমধ্যেই শহরের গাড়ি রাখার জন্য কলকাতা পুরসভার চিহ্নিত এলাকায় অভিযানে যাচ্ছেন দফতরের পুর আধিকারিকেরা।
১ জুলাই থেকে পার্কিং পরিষেবা ফের শুরু হয়েছে শহরে। কিন্তু তার থেকে আয় এখনও সন্তোষজনক নয়, জানাচ্ছে পুরসভা। যার কারণ খুঁজতে গিয়ে পার্কিং ফি আদায়ে নিযুক্ত সংস্থাগুলির দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসছে বলে দাবি পুর কর্তৃপক্ষের।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, গাড়ি রাখার জন্য শহরে নথিভুক্ত জায়গা ৪৫০টি। সেখান থেকে পুরসভা মনোনীত বিভিন্ন গাড়ি পার্কিং সংস্থা পুর কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেওয়া হারে ফি আদায় করে থাকে। পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, স্বাভাবিক সময়ে প্রতি মাসে এই বাবদ পুরসভার আয় হয় প্রায় দেড় কোটি টাকা। তবে করোনা আবহে সেই আয় কমে দাঁড়িয়েছে প্রতি মাসে প্রায় পনেরো লক্ষ টাকায়। গত বছরের মার্চের শেষ থেকে লকডাউন শুরু হওয়ায় এপ্রিল এবং মে-তে গাড়ি রাখার পুর পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। গত বছর জুনে লকডাউন শিথিল হলেও গাড়ি চলাচল কমে যাওয়ায় ওই বাবদ ফি আদায় যথেষ্ট কম ছিল বলে জানাচ্ছে পুরসভা। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুনে সম্পূর্ণ লকডাউন না হওয়া সত্ত্বেও সেই খাতে আয় প্রায় তিন
কোটি টাকা কমেছে! এতেই নড়ে বসছে কলকাতা পুরসভা।
পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, গত বছর এই বাবদ প্রায় সাত কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। এ বার এখনও পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ তিন কোটি। অর্থাৎ, গত দু’বছরে শুধু গাড়ি পার্কিং বাবদই কলকাতা পুরসভার দশ কোটি টাকার মতো আয় কমেছে। পুরসভার গাড়ি পার্কিং বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘গত বছর এবং এ বছর মিলিয়ে ছ’মাস গাড়ির পার্কিং ফি আদায় পুরো বন্ধ ছিল। লকডাউন শিথিল হলেও শহরে আগের মতো গাড়ি না চলায় পার্কিং থেকে যা আয় হয়, তা আদায় করা যায়নি।’’
পুরসভা সূত্রে এ-ও অভিযোগ করা হচ্ছে, লকডাউনের জন্য পুর এলাকায় গাড়ি রাখার পরিষেবা বেশ কয়েক মাস বন্ধ থাকলেও পুরসভার নাম ভাঁড়িয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংস্থা তা আদায় করছিল। এক পদস্থ পুরকর্তা বলেন, ‘‘পুরসভার নাম করে শহরে এখনও পার্কিং ফি আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাচ্ছি। পুলিশকে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।’’ কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস কুমার বলেন, “গত প্রায় দেড় বছর ধরে শহরে গাড়ি চলাচল বন্ধ থেকেছে বা কমেছে। তার
উপরে রাতেও গাড়ি রাখা বন্ধ। ফলে এই খাতে আয় অনেকটাই কমেছে। পাশাপাশি, অনিয়মের কিছু অভিযোগও আসছে, যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
পুরসভা সূত্রের খবর, পথের ধারে গাড়ি রাখা চলতি মাস থেকে ফের শুরু হয়েছে ঠিকই। তবে এখনও সে ভাবে হচ্ছে না। এই ফি আদায়ের দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা পুরসভাকে জানাচ্ছে পার্কিং লটে গাড়ি কম থাকছে। কিন্তু তা সত্যি নয় বলেই দাবি পুরসভার সংশ্লিষ্ট দফতরের।
এ জন্য শহরের বিভিন্ন পার্কিং লটে হানা দিচ্ছেন পুরসভার পার্কিং দফতরের আধিকারিকেরা। মঙ্গলবারও শহরের কয়েকটি এমন জায়গা ঘুরে দেখেন তাঁরা। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘যে ক’টা পার্কিং লট ঘুরেছি, সব ক’টায় গাড়ির সংখ্যা যথেষ্ট ছিল। সেই সঙ্গে সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে আসা অভিযোগও আমরা খতিয়ে দেখা শুরু করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy