এ যেন গাড়ি আছে, অথচ ঘোড়া নেই।
কলকাতা পুরসভা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় পার্ক থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মালির সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। সরকারি নিয়মের লাল ফিতের গেরোয় আটকে নতুন করে মালি নিয়োগও করতে পারছেন না পুর-কর্তৃপক্ষ। ফলে, চলতি মাসে বনসৃজনের আগেই ফাঁপরে পড়েছে পুরসভা।
কলকাতা পুরসভার উদ্যান দফতরের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে শহরে পার্কের সংখ্যা যে ভাবে বেড়েছে, সেই অনুপাতে মালি নেই। ফলে পার্ক দেখাশোনার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। বর্তমানে যে সংখ্যক মালি পুরসভায় রয়েছেন, তার দ্বিগুণ সংখ্যক মালি না থাকলে এই কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।’’
মালি নিয়োগে সমস্যা কোথায়?
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, প্রায় বছর দশেক পুরসভায় স্থায়ী মালি নিয়োগ করা হয়নি। ফলে, পুরনো মালিরা অবসর নেওয়ার পরে নতুন করে আর লোক নিয়োগ হয়নি। ফলে শূন্য পদ রয়েই গিয়েছে। বাকি অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করে কাজ করাতে হয়।
পুরসভার উদ্যান দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভায় স্থায়ী মালির জন্য বরাদ্দ ৩১০টি পদ। বর্তমানে সেই সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ১৫০-য়। বছরখানেকের মধ্যেই এই সংখ্যা আরও অনেক কমে আসবে। চুক্তির ভিত্তিতে পুরসভায় অস্থায়ী মালি নিয়োগ করা হয়েছে ২০৬ জন।
বর্তমানে পুরসভার হিসেব অনুযায়ী, স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে মালি রয়েছেন ৩৫৬ জন। সংশ্লিষ্ট দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, এই সংখ্যা শহরে পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের তুলনায় অপ্রতুল।
দেবাশিসবাবু আরও জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে শহরে পার্কের সংখ্যা ৭০০-র কাছাকাছি। এ ছাড়াও শহরের অনেক জায়গায় রয়েছে প্রচুর ‘রোড সাইড গার্ডেন’। টালা পার্ক, দেশবন্ধু পার্ক, পার্ক সার্কাস, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার-সহ বেশ কিছু পার্কে নার্সারি রয়েছে। এই নার্সারিগুলি সুষ্ঠু ভাবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনও কোনও পার্কে এক জন, কোথাও আবার একাধিক মালির প্রয়োজন।
বর্তমানে মালির সংখ্যা যা, তাতে সব ক’টি উদ্যানে এক জন করেও মালি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বিভিন্ন উদ্যানে ঘাস কাটা বা গাছের পাতা ছাঁটাও সম্ভব হচ্ছে না। উদ্যান দফতরের এক আধিকারিক জানান, বর্তমানে এই সমস্যার মোকাবিলায় উদ্যান রক্ষণাবেক্ষণ এবং রাস্তার ধারে গাছ পোঁতার জন্য বাইরের সংস্থারও সাহায্য নিতে হয়।
পার্সোনেল দফতরের এক আধিকারিকের অবশ্য বক্তব্য, স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে মালির সংখ্যা ইতিমধ্যেই পুরসভার মালির জন্য বরাদ্দ পদের সংখ্যার চেয়ে বেশি। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, এই সংখ্যাই বা বরাদ্দ পদের চেয়ে কী করে বেশি থাকে?
পুরসভার সাফাই, অন্য উপায় না থাকায় বাধ্য হয়েই এই সংখ্যক মালি নিতে হয়েছে। নিয়মানুযায়ী, মোট কত জন কর্মী লাগবে, তা যত দ্রুত সম্ভব সরকারি ভাবে বরাদ্দ করাতে হবে। তবে তা সময় সাপেক্ষ বলে জানান পুর-কর্তৃপক্ষ।
দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘এই সমস্যা মেটাতে সরকারি নিয়ম মেনে যা যা করণীয়, তা করতে হবে। কত জন মালি নেওয়া প্রয়োজন, সে ব্যাপারে একটি তালিকা তৈরি করে মালি নিয়োগ করা জরুরি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে আলোচনায় বসব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy