অভিযোগ, ওই প্রোমোটারেরা নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে শুধু যে অবৈধ বহুতল নির্মাণ করছেন। —প্রতীকী চিত্র।
হাওড়া শহরে বেআইনি বহুতল তৈরির অভিযোগ নতুন নয়। এ বার তারই পাশাপাশি পরিবেশ দূষিত করা-সহ শহরের নিকাশি ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে বলে অভিযোগ উঠল কিছু বহুতলের প্রোমোটারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই প্রোমোটারেরা নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে শুধু যে অবৈধ বহুতল নির্মাণ করছেন তা-ই নয়, সেই বহুতলে সেপটিক ট্যাঙ্ক না করে সেখানকার বাসিন্দাদের মল-মূত্র পাইপলাইনের মাধ্যমে ফেলে চলেছেন পুরসভার নিকাশি নালায়! যার ফলে একের পর এক নিকাশি নালা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ছে। সৃষ্টি হচ্ছে চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের। পুরসভার সাফাইকর্মীরা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা নদর্মার জলে মেশা ওই বর্জ্য পরিষ্কার করবেন না।
হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সেপটিঙ্ক ট্যাঙ্ক না করা এই ধরনের ১২টি বহুতল চিহ্নিত করে নোটিস পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে, অবিলম্বে ট্যাঙ্ক তৈরি না করলে মোটা টাকা জরিমানা-সহ আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে। চিহ্নিত ১২টি ছাড়াও আরও বেশ কিছু বহুতলের প্রোমোটারেরা এই মারাত্মক বেআইনি কাজ করছেন বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বহুতলগুলি চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তিনি জানান, নোটিস পাওয়ার পরে তিনটি বহুতলের তরফে পুরসভায় যোগাযোগ করে জানানো হয়েছে, তারা সেপটিক ট্যাঙ্ক তৈরি করে নেবে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে হাওড়া পুরসভায় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে বেআইনি বহুতল তৈরির প্রবণতা ভীষণ ভাবে বেড়ে যায়। প্রথম বার বোর্ড গঠনের পরে পুর প্রশাসন জরিমানা দিয়ে বেআইনি নির্মাণ আইনি করার প্রক্রিয়া চালু করেছিল। তাতে অবৈধ নির্মাণের ক্ষেত্রে কার্যত আগুনে ঘি পড়ে। ২০১৯ সাল থেকে জরিমানা দিয়ে বেআইনি নির্মাণ আইনি করার পদ্ধতি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় তৎকালীন পুর প্রশাসকমণ্ডলী। কিন্তু অভিযোগ, তার পরেও বাড়ি বা জমির মালিককে জরিমানা করার প্রক্রিয়া চালু আছে বলে দাবি করে পুরসভা অনুমোদিত নকশার বাইরে একাধিক তলের নির্মাণকাজ চালিয়ে যান প্রোমোটারদের একাংশ।
এর পাশাপাশি এই অভিযোগও ওঠে যে, ওই সব অসাধু প্রোমোটারকে সরাসরি সহযোগিতা করছে পুরসভারই বিল্ডিং দফতরের একটি চক্র। তার পরিপ্রেক্ষিতে দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীকে বদলি করে দেওয়া হয়। তবে, এত কিছুর পরেও অবৈধ বহুতল নির্মাণে লাগাম টানা যায়নি। আর এ বার বিভিন্ন বহুতলে সেপটিক ট্যাঙ্ক না করে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরাসরি নিকাশি নালাগুলিতে মল-মূত্র ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ এল পুর কর্তৃপক্ষের কাছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সব এলাকায় এই ধরনের বেআইনি কাজ চলছে বলে অভিযোগ এসেছে, সেগুলি হল হামিদ মুন্সি লেন, আশু বসু লেন, গঙ্গারাম বৈরাগী লেন, তাঁতিপাড়া লেন, শ্রীনাথ পোড়েল লেন, হরচাঁদ মুখার্জি লেন। এক পদস্থ পুর অফিসার বলেন, ‘‘ধরপাকড় শুরু হলে এমন বহুতলের সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়বে। কারণ, সংযুক্ত এলাকা-সহ জগাছা, কদমতলা, ব্যাঁটরা অঞ্চল এই ধরনের বেআইনি বহুতলে
ভরে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy