সুকান্ত মজুমদার।
কলকাতা পুরভোটের আগে শেষ রবিবার প্রচারে নেমে প্রতিরোধের বার্তা দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি এ দিন কলকাতার ৪১, ৪৭, ৮৩, ৮৪ এবং ৮৭ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার করেন। তারই ফাঁকে সুকান্ত বলেন, “পুরভোট অবাধ হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি না। কলকাতা পুলিশ আগে যে ভাবে ভোট সামলেছে, সেই ভাবেই হবে। অর্থাৎ, ছাপ্পা হবে। তবে এখন কলকাতায় আমাদের সংগঠন যথেষ্ট ভাল। ফলে আমরা প্রতিরোধ করব।”
কলকাতা পুরসভার ভোটে কোনও ‘গা-জোয়ারি’ না করার জন্য দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব তৃণমূলের ওই বার্তায় আস্থা রাখতে পারছেন না। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও অভিযোগ করেন, “আমাদের মহিলা প্রার্থীদের কিছু দিন আগে আত্মীয়দের বাড়িতে লুকিয়ে থাকতে হয়েছিল। বিভিন্ন ওয়ার্ডে আমাদের প্রার্থীদের যা সহ্য করতে হচ্ছে, তা থেকেই স্পষ্ট ভোট কেমন হবে।”
তৃণমূল অবশ্য বিরোধীদের প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তৃণমূলেরর মুখপাত্র তাপস রায় বলেন, “বিজেপির প্রচারে বাধা দেওয়ার খবর আমার জানা নেই। বিজেপির কর্মী নেই, পোলিং এজেন্ট দেওয়ার ক্ষমতা নেই, মানুষও তাদের সঙ্গে নেই। তাই ভোটে হারবেন বুঝে বিজেপি নেতারা আগে থেকে এই সব যুক্তি সাজিয়ে রাখছেন।”
প্রচারে বাধার অভিযোগ নিয়ে এই চাপানউতোরের মধ্যেই এ দিন ২৮ নম্বর ওয়ার্ড প্রতিদ্বন্দ্বীদের সৌজন্যের সাক্ষী হয়েছে। সেখানে প্রচার চলাকালীন সিপিএম নেতা রবীন দেব এবং সুজন চক্রবর্তীর মুখোমুখি হন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। দু’পক্ষের মধ্যে সৌজন্য বিনিময় হয়। পরে সিপিএমের মিছিল তৃণমূলের সভার কাছে এসে পড়লে কিছু ক্ষণ মাইক বন্ধ রাখেন শাসক দলের নেতৃত্ব।
শুভেন্দু এ দিন ৮০ এবং ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে সভা করেন। বিজেপি এ দিন ৮৪ এবং ৮৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীর সমর্থনে রাসবিহারী অঞ্চলে মিছিল করে। সেখানে নেতৃত্বে ছিলেন সুকান্ত এবং শুভেন্দু। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন প্রচার করেন ৮১, ১২৩, ১২৪, ১৪৩ এবং ১৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীর সমর্থনে। সভা, মিছিলের পাশাপাশি এ দিন বাড়ি বাড়ি ঘুরেও প্রচার করেন বিজেপি নেতারা। সভায় শুভেন্দু এবং দিলীপ— দু’জনেই আমপান পর্বে কলকাতার নাগরিকদের ভোগান্তির প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূল পুরবোর্ডকে নিশানা করেন। দু’জনেরই অভিযোগ, কলকাতায় পুর পরিষেবা বেহাল। দু’ঘণ্টার বৃষ্টিতে এখানে নৌকো নামাতে হয়। ইউনিট প্রতি বিদ্যুৎ মাসুল এখানে সবচেয়ে বেশি। শুভেন্দুর কটাক্ষ, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, কলকাতাকে লন্ডন বানাবেন। ঝড়বৃষ্টি হলে সত্যিই কলকাতা লন্ডন হয়ে যায়। কারণ শহরের মাঝখানে টেমস নদী বইতে থাকে। আমপানের সময়ে ওড়িশা থেকে বাহিনী এনে এখানে গাছ সরাতে হয়েছিল। জল, বিদ্যুৎ ছিল না কয়েক দিন। আশা করব, বাঙালির স্মৃতিশক্তি দুর্বল নয়।” আর দিলীপ বলেন, “বর্ষাকালে এই শহরে জল জমে। আর গরমকালে জলের জন্য লাইন দিতে হয়। তৃণমূল শহরটাকে জলে ফেলে দিয়েছে।”
এই প্রেক্ষিতেই কলকাতা থেকে পরিবর্তন শুরু করার ডাক দিয়েছেন সুকান্ত, শুভেন্দু, দিলীপরা। তাঁদের বার্তা, কলকাতা থেকেই শুরু হোক ‘চুপচাপ পদ্মে ছাপ।”
যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব কলকাতায় পুর পরিষেবায় গাফিলতির কথা মানছেন না। তাপস বলেন, “আমাদের দল সারা বছর মানুষকে পরিষেবা দেয় বলেই মানুষ বিধানসভা ভোটে আমাদের জিতিয়েছেন। কলকাতার ভোটেও পরিষেবার পুরস্কারই তাঁরা আমাদের দেবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy