ফাইল চিত্র।
মহানগরীর পুনর্দখল বা সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে হয়তো ততটা সংশয় নেই। তবে পুরভোটে চ্যালেঞ্জ বা পরীক্ষা মূলত দু’টি। এক, শাসক দলের দিক থেকে ভোটকে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ রাখা। দুই, ভোটের শহরে বিরোধী বিজেপির ভূমিকা। আজ, রবিবার পুরভোটে এই দু’টি বিষয়ই হবে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।
পরিস্থিতি যেখানে দাঁড়িয়ে, তাতে এক দিকে আছে দলের কর্মীদের উদ্দেশে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সতর্কবার্তা’। আর পাল্টা হিসেবে সামনে এসেছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘হুমকি’। অভিষেক জানিয়ে রেখেছেন, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করবে তৃণমূল। শুধু তা-ই নয়, দলের কেউ ‘দাদাগিরি’ করলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী বা নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করে দেবেন তিনি। অন্য দিকে, শুভেন্দুর ঘোষণা, ভোট লুট বা গা-জোয়ারি হলে পথে নেমে রাজ্য অচল করে দেবে বিজেপি। সকাল ১০টা পর্যন্ত পরিস্থিতি দেখে প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনের অফিস ঘেরাও করতে এগোবেন বলেই হুমকি দিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় স্তরের নির্বাচনে বার বার ‘ভয় দেখানো’, ‘মনোনয়নে বাধা’ এমনকি, ‘বুথ দখলে’র অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্য পুলিশ এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাও। পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, বিধানসভা ভোটে বিপুল সাফল্যের পরে তৃণমূল সেই ‘দাগ’ মোছার একটা সক্রিয় চেষ্টা করছে। ভোটের আগের দিন রাজ্য নেতৃত্বের তরফে এ ব্যাপারে শেষ মুহূর্তের বার্তাও গিয়েছে জেলা ও ওয়ার্ড স্তরের নেতাদের কাছে। পাশাপাশি বিরোধী দলনেতার ‘হুমকি’ গোলমাল পাকানোর ষড়যন্ত্র বলেও প্রার্থীদের সতর্ক থাকতে বলেছেন শাসক দলের নেতারা। কোথাও সেই পরিস্থিতি তৈরি হলে দ্রুত পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে।
২০১৫ সালের পুরভোটে উত্তর- মধ্য কলকাতায় ভোটদানে বাধা দেওয়া, মারধর এবং ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গিরিশ পার্কে দু’দলের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন এক পুলিশ আধিকারিক। উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি তাপস রায় এ দিন বলেন, ‘‘অশান্তির তো কোনও কারণ নেই। মানুষ তৃণমূলকে দেখে ভোট দেবেন। আর যদি কোথাও তা না-ও দেন, তা তাঁদের অধিকার। সেখানে তৃণমূলের কিছু বলার নেই।’’ শেষ পুরভোটে পার্ক সার্কাস, জাদুঘরের সামনে, বাঘাযতীনে এবং
বন্দর এলাকায় অশান্তি হয়েছিল। তৃণমূলের দক্ষিণ কলকাতা জেলার সভাপতি দেবাশিস কুমারও বলেন, ‘‘পরীক্ষা ঠিকই, তবে তা কঠিন নয়। নেতৃত্বের ঘোষণা ১০০ ভাগ কার্যকর করে দেখাব।’’
অভিষেকের ঘোষণা নিয়ে অবশ্য গোড়া থেকেই সন্দিহান বিরোধীরা। বাইরে থেকে ‘লোক ঢোকানো’ এবং ‘ভয় দেখানো’র ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, প্রয়োজনে পথে নেমে প্রতিবাদের ঘোষিত কর্মসূচির প্রস্তুতি রাখতে হাওড়া ও বিধাননগর এলাকায় বিজেপির একাধিক বিধায়কের থাকার কথা রয়েছে। উত্তরবঙ্গের কয়েক জন বিজেপি বিধায়কের ভোটের দিন সকালে কলকাতায় পৌঁছনোর কথা। দক্ষিণবঙ্গের কয়েক জনের থাকার কথা বিধাননগরে দলের একটি অফিসে। শাসকের উপরে তাঁরা যে ‘চাপ’ রাখতে চাইছেন, তা স্পষ্ট করে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মানুষ বিশ্বাস করে না, তৃণমূলের শাখা সংগঠন হয়ে ওঠা রাজ্য নির্বাচন কমিশন অবাধ ভোট করাতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, এই ভোট আদালতের নজরদারিতে হচ্ছে।’’ শাসক শিবিরের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, ‘‘পুরভোটে যারা সন্ত্রাস করবে, ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে তারা আরও একটি তদন্তের মুখে পড়বে। বিধানসভা ভোটের ক্ষেত্রে যা হয়েছে।’’
তৃণমূলের ঘোষণায় অনাস্থা জানিয়ে সিপিএম নেতা রবীন দেব এ দিন বলেন, ‘‘তৃণমূল বহিরাগতদের শহরে এনেছে। বামকর্মী ও সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন, বাইরের লোক দেখলেই পুলিশ, কমিশনকে জানাতে বলছি।’’ প্রদেশ কংগ্রেসের দুই নেতা আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রীতম ঘোষ নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছেন, অনেক বুথে এ দিনও সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়নি। অনেক চিহ্নিত সমাজবিরোধীকেও গ্রেফতারও করা হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy