আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডের ফুটপাথে পড়ে থাকা তরুণীকে খুন করা হয়েছিল শুক্রবার রাত ১২টার পরে। ময়না-তদন্তের রিপোর্টে এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি রবিবার সংবাদপত্রে প্রকাশিত ছবির সাহায্যে শনাক্তও করা গিয়েছে ওই তরুণীকে। তবে আততায়ী কে বা কারা, তার হদিস এখনও মেলেনি।
পুলিশ জানায়, মৃতার নাম সোমা দাস (২২)। বড়তলার ইমাম বক্স লেনের বাসিন্দা ওই তরুণীর ছবিটি দেখে এ দিন তাঁর পালক মাতা বড়তলা থানায় যোগাযোগ করেন। দেহ শনাক্ত করতে তাঁকে পার্ক স্ট্রিট থানায় পাঠায় তারা। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে নিখোঁজ ওই তরুণীর দেহ উদ্ধার হয় শনিবার সকালে।
সোমার সাড়ে তিন বছরের একটি মেয়ে আছে। বছর পাঁচেক আগে ইমাম বক্স লেনের বাসিন্দা ওই পালক মাতাই তাঁর বিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু মাস সাত-আটেক আগে মেয়েকে নিয়ে স্বামীর ঘর ছেড়ে চলে আসেন ওই তরুণী। সম্প্রতি তিনি যৌনকর্মীর পেশায় যুক্ত হয়েছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। শনিবার সকালে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট ও রিপন স্ট্রিটের মোড়ের কাছে
একটি ফুটপাথে তাঁর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয় লোকজন তাঁকে শনাক্ত করতে পারেননি। মৃতার গলায় কালশিটের দাগ ছিল। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে জানা যায়, মারধর করে ও গলা টিপে ওই তরুণীকে খুন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নিখোঁজ হওয়ার আগে সোমাকে কার সঙ্গে শেষ দেখা গিয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মৃতার বাঁ হাতের কব্জির কাছে উল্কিতে হিন্দিতে ‘সমীর’ লেখা রয়েছে। ডান হাতের একই জায়গায় সে ভাবেই লেখা রয়েছে ‘রিমা’। পুলিশের একটি সূত্রের খবর, সোমার স্বামীর নাম সমীর এবং মেয়ের নাম রিমা। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, ময়না-তদন্তে ওই তরুণীর পাকস্থলীতে মদ পাওয়া গিয়েছে। তিনি যে নিয়মিত মদ্যপান করতেন, বোঝা গিয়েছে তা-ও।
তবে এ পর্যন্ত আততায়ীর সন্ধান মেলেনি। হদিস পেতে ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা রাস্তার সিসিটিভি, বিশেষত নোনাপুকুর ট্রাম ডিপো এবং রিপন স্ট্রিটের মোড়ে থাকা সিসিটিভিগুলির ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থলের কাছে দু’টি মদের দোকান রয়েছে। তার বাইরে লাগানো সিসিটিভি-র ফুটেজও চেয়েছে পুলিশ।
দেহ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টা পরেও আতঙ্ক কাটেনি স্থানীয় ব্যবসাদারদের। খাস কলকাতায় ফুটপাথে এক তরুণীকে খুন করে ফেলে যাওয়া হল, অথচ কেউ কিছু জানতে পারলেন না— এই বিষয়টিই তাঁদের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। স্থানীয় একটি খাবারের দোকানের মালিক মহম্মদ সাজিদের কথায়, ‘‘শুক্রবার রাত ১২টা নাগাদ দোকান বন্ধ করার সময়েও আমরা এলাকায় এমন কিছু দেখিনি। কখন এ সব ঘটল, বুঝে উঠতে পারছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy