Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

জল নষ্ট করবেন না, বার্তা দিতে পথে খুদেরা

বুধবার সকালে সোনারপুরের নরেন্দ্রপুরে গ্রিন পার্ক প্রাথমিক স্কুলের প্রায় দেড়শো পড়ুয়া হাতে বালতি নিয়ে শামিল হয় পদযাত্রায়। সঙ্গে ছিলেন অভিভাবক ও স্কুলের শিক্ষকেরা।

প্রচার: বালতি হাতে মিছিলে স্কুলপড়ুয়ারা। বুধবার, নরেন্দ্রপুরে। নিজস্ব চিত্র

প্রচার: বালতি হাতে মিছিলে স্কুলপড়ুয়ারা। বুধবার, নরেন্দ্রপুরে। নিজস্ব চিত্র

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৯ ০২:০৪
Share: Save:

জল অপচয় বন্ধ করা নিয়ে এলাকার মানুষকে সচেতন করতে পথে নামল খুদে পড়ুয়ারা।

বুধবার সকালে সোনারপুরের নরেন্দ্রপুরে গ্রিন পার্ক প্রাথমিক স্কুলের প্রায় দেড়শো পড়ুয়া হাতে বালতি নিয়ে শামিল হয় পদযাত্রায়। সঙ্গে ছিলেন অভিভাবক ও স্কুলের শিক্ষকেরা। প্রায় এক কিলোমিটার পথ পরিক্রমা করে ওই পড়ুয়ারা। এক শিক্ষক সৌমিত্র কর বলেন, ‘‘জলের অপচয় নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করতে মাসখানেক ধরে আলোচনা করা হয়েছিল। কিন্তু পরে আমরা ঠিক করি, শুধু স্কুলের চার দেওয়ালে ওই আলোচনা সীমাবদ্ধ না রেখে এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া জরুরি। সে কথা ভেবেই এমন উদ্যোগ।’’ কিন্তু পড়ুয়াদের হাতে বালতি কেন? স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ কর বলেন, ‘‘সাধারণত এই ধরনের পদযাত্রায় সচেতনতার বার্তা লেখা প্ল্যাকার্ড-পোস্টার দেখা যায়। কিন্তু বালতি নিয়ে পদযাত্রা অনেক বেশি বাস্তব পরিস্থিতির কাছাকাছি থাকবে বলে আমাদের মনে হয়েছিল।’’ তবে পদযাত্রার জন্য স্কুলের পঠনপাঠনে ব্যাঘাত ঘটেনি বলে দাবি করেছেন সৌমিত্রবাবু। তিনি বলেন,‘‘ সকাল আটটা থেকে আধ ঘণ্টা পদযাত্রার পরে স্কুলে ফিরে একটু টিফিন খায় ছাত্রছাত্রীরা। তার পরে রোজকার মতো ক্লাসও হয়েছে।’’

অভিভাবকেরা জানান, সোনারপুর-রাজপুর-বারুইপুর এলাকায় জনসংখ্যা বেড়ে চলেছে। তৈরি হচ্ছে একের পর এক আবাসন এবং ফ্ল্যাট। যার জন্য গত দশ বছরে ওই এলাকায় জলের চাহিদা কার্যত আকাশ ছুঁয়েছে। সোনারপুর-বারুইপুর এলাকায় কিছু বছর আগেও নলকূপের ১০০ ফুট গভীরে জল পাওয়া যেত। এখন আর ওই স্তরে জল পাওয়া যাচ্ছে না। ক্রমে নেমে যাচ্ছে জলস্তর।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজপুর-সোনারপুর ও বারুইপুর সহ আশপাশের এলাকার নাগরিকেরা বাড়িতে নলকূপ এবং পুরসভার পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা জল ব্যবহার করেন। কিন্তু তাঁদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, ভূগর্ভের জলস্তর ক্রমে নেমে যাওয়ায় এক দিকে নলকূপে জল আসছে না। অন্য দিকে পুরসভার পাইপেও জলের চাপ কমে গিয়েছে। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লব দাস বলেন, ‘‘জল নষ্ট বন্ধ করতে আমরা সচেতনতা শিবির করেছি। আশাকর্মী, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের সাহায্য নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রাস্তায় ও পাড়ায় কোথাও যাতে কল খোলা না থাকে, সে ব্যাপারেও নজরদারির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’

সোনারপুর (উত্তর)-এর বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম বলেন, ‘‘কয়েক বছরের মধ্যেই কেন্দ্রের ‘আম্রুত’ প্রকল্পে জল সরবরাহ শুরু হবে। তখন পাইপলাইনে জলের চাপ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওই প্রকল্প অনুযায়ী জলাধার নির্মাণের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও জল অপচয়ের বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার চালানো হবে। ভবিষ্যতের কথা ভেবে সবার আগে সচেতন হতে হবে সাধারণ মানুষকেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Water Crisis Kids Rally
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy