ফাইল চিত্র।
মন্দিরে প্রণামী হিসেবে জমা হওয়া ছেঁড়া নোটের একটি প্যাকেট ভুলবশত ফেলে যাওয়া হয়েছিল কালীঘাটে, গঙ্গার ধারে। নোট-রহস্যের তদন্তে নেমে এমনটাই জেনেছে পুলিশ। লালবাজার সূত্রের খবর, ভবানীপুরের পদ্মপুকুর এলাকার একটি মন্দিরে গত কয়েক মাসে যে প্রণামী জমা পড়েছিল, তার মধ্যে থাকা অচল নোটগুলি আলাদা করে রাখা ছিল একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে। সেই ক্যারিব্যাগ রাখা ছিল মন্দিরের বর্জ্য ফুলের বস্তার পাশে। মন্দিরের এক কর্মী ফুলের বস্তার সঙ্গে নোটের ব্যাগটিও তুলে এনে কালীঘাটের মুখার্জি ঘাটে ফেলে দেন।
রবিবার দুপুরে ওই ঘাটে আধপোড়া ছেঁড়া নোটের প্যাকেটটি দেখতে পান এলাকার বাসিন্দারা। ভিতরে ছিল ৫, ১০, ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার সব নোট। খবর পেয়ে আসেন কালীঘাট থানার অফিসারেরা। তাঁরা নোটগুলি বাজেয়াপ্ত করেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে জানা যায়, ওই এলাকায় প্রতিদিন এক ব্যক্তি ফুলের বস্তা ফেলে যান। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি পদ্মপুকুর এলাকার একটি মন্দিরের কর্মী। সোমবার ওই ব্যক্তি এবং মন্দিরের পুরোহিতের সঙ্গে কথা বলতেই পুলিশের কাছে গোটা বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। জানা যায়, প্রণামীর বাক্সের ছেঁড়া-ফাটা নোটগুলি আলাদা করে বড় একটি প্লাস্টিকে ভরে বর্জ্য ফুলের বস্তার পাশে রাখা হয়েছিল। আমপানে নষ্ট হওয়া কিছু নোটও তাতে ছিল। পরে ব্যাঙ্ক থেকে সেগুলি বদলে আনা হবে বলে ভাবা হয়েছিল। কিন্তু মন্দিরের ওই কর্মী ভেবেছিলেন, টাকার প্যাকেটেও বর্জ্য ফুল রাখা আছে। তাই সেটি গঙ্গার ঘাটে ফেলে যান তিনি।
তদন্তকারীরা জানান, গঙ্গার ওই ঘাটে অনেকেই আড্ডা মারেন, ধূমপান করেন। তাঁদের ফেলে দেওয়া সিগারেটের আগুন থেকেই হয়তো ওই টাকার বস্তায় আগুন লেগে সেগুলির কিছুটা অংশ পুড়ে যায়। এক তদন্তকারী জানান, সব দিকই খতিয়ে দেখা হয়েছে। মন্দিরের ওই কর্মী পুলিশের সঙ্গেগঙ্গার ঘাটে গিয়ে দেখিয়ে এসেছেন, কোথায় ফুলের এবং সেই টাকার বস্তা ফেলা হয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, বস্তায় করে ফেলে যাওয়া টাকার পরিমাণ দু’হাজারের বেশি নয়। আর পাঁচশো টাকার নোটও মিলেছে হাতে গোনা। বাসি ফুলের পাশে ওই নোটগুলি পড়ে থাকতে দেখে প্রথমেই সেগুলি কোনও মন্দিরের বলে সন্দেহ হয়েছিল পুলিশের। সেই সূত্র ধরে তদন্ত চালিয়েই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রহস্যের কিনারা হয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের।
এ দিকে, এই ঘটনায় রাজনীতির রং-ও লেগে গিয়েছে। এ দিন পূর্ব বর্ধমানের রায়নায় বিজেপি নেতা রাহুল সিংহ বলেন, ‘‘ওই টাকা কোথা থেকে এল? ওখানে সবার টালির চালের বাড়ি। এলাকার লোকের এত টাকা নেই। ওখানে একটাই রাজবাড়ি। ভাইপোর বাড়ি। কার ভয়ে, কিসের ভয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছে এত টাকা পোড়ানো হল? ইডি বা সিবিআই-কে দিয়ে তদন্ত করানো দরকার।’’
রাহুলবাবুর এই আক্রমণের উত্তরে লোকসভায় তৃণমূলের সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাহুলবাবুর তো ভোটে বার বার হারার জন্য গিনেস বুকে নাম উঠেছে। কালীঘাটে কতগুলো টালির বাড়ি আছে, উনি জানলেন কী করে? ওঁকে মনে করিয়ে দিতে চাই, বড়বাজারের গদিতে বসে মানুষকেও জানা যায় না, কালীঘাটের ইতিহাস-ভূগোলও জানা যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy