সচেতনতায়: শব্দবাজি বন্ধের আবেদন জানিয়ে পোষ্যদের নিয়ে পদযাত্রা। শনিবার, ভবানীপুরে। নিজস্ব চিত্র
কালীপুজোর তখনও দিন চারেক বাকি। ঘুমিয়ে থাকা ল্যাব্রাডর প্রজাতির একটি কুকুর মাঝরাতে উঠে প্রবল কাঁপতে শুরু করে। বাড়ির অন্য সদস্যেরা প্রথমে এর কারণ বুঝতে পারেননি। কয়েক মুহূর্ত পরে তাঁরা শোনেন, কয়েকশো মিটারের মধ্যেই শব্দবাজি ফাটছে। গোটা রাত পোষ্যকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকতে হয় তাঁদের।
দিন চারেক আগেই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে আজ, কালীপুজোর দিন ও তার পরে কী হবে ভেবে পাচ্ছে না প্রথম বার কুকুর পোষ্য নেওয়া ওই পরিবার। প্রতিবারই অবশ্য একই প্রশ্ন ঘোরে পশুপ্রেমী থেকে পশু অধিকার আন্দোলনের কর্মীদের মধ্যে। হাজারো সচেতনতা প্রচার বা পুলিশের কড়া হুঁশিয়ারির পরেও বন্ধ হয় না শব্দবাজি ফাটানো। এ বারেও সেই পশুপ্রেমীরা নিজেদের মতো নানা পরিকল্পনা করছেন। কেউ ভাবছেন, পোষ্যকে কোনও ওষুধ খাইয়ে রাখবেন। কেউ আবার বাড়ির সব দরজা-জানলা বন্ধ করে জোরে সাউন্ড বক্স বা টিভি চালিয়ে বাইরের শব্দ পোষ্যদের কানে পৌঁছনো আটকাবেন। তবে আদৌ তাতে কাজ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় যাচ্ছে না। বাড়ির পোষ্যদের ক্ষেত্রে এ সব পদ্ধতি ব্যবহার করা গেলেও বাইরে থাকা পশুপাখিদের কী হবে সেই প্রশ্নও থাকছে।
‘পিপল ফর দ্য এথিকাল ট্রিটমেন্ট অব অ্যানিম্যালস’-এর (পেটা) পূর্বাঞ্চলীয় শাখার সদস্য বিয়াস মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘এত দিন কোনও পথই পাইনি। আজই পোষ্যকে নিয়ে ছাদে গিয়েছিলাম। তখনই একটা বাজি ফাটে। সারা দিন ওকে আর স্বাভাবিক করা যায়নি।’’ পশু চিকিৎসক শশাঙ্কমণি ত্রিপাঠী বললেন, ‘‘আমরা কোনও শব্দ যে মাত্রায় শুনি, কুকুর-সহ অনেক পশুর কানেই তা কয়েক গুণ জোরে পৌঁছয়। সেই অসহ্য শব্দ সহ্য করতে না পেরেই তারা খাটের তলায় না হলে সোফার তলায় আশ্রয় নেয়। পরিস্থিতি আটকাতে সচেতনতা ছাড়া উপায় নেই। কারণ, এ জন্য বাজারে কোনও নিশ্চিত ওষুধ নেই।’’ পশু অধিকার রক্ষা আন্দোলনের কর্মী প্রান্তিক চক্রবর্তী আবার জানান, কালীপুজো এবং তার পরদিন শব্দবাজি ফাটানো বন্ধ নিশ্চিত করতে তাঁরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে রাস্তায় ঘুরবেন। বেআইনি কিছু দেখলেই তাঁরা পুলিশকে জানাবেন।
শব্দবাজি বন্ধের সচেতনতা প্রচারে শনিবারই পোষ্যদের নিয়ে ভবানীপুরের রাস্তায় হাঁটেন অনেকে। ভবানীপুর থানার উদ্যোগে হওয়া ওই পদযাত্রায় যোগ দিয়েছিলেন স্থানীয় ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অসীম বসু। পোষ্যদের কারও গলায় প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘নো ক্র্যাকার’। আবার কারও গলায় ঝুলছে, ‘সেভ মি ফ্রম লাউড নয়েজ়’ লেখা বোর্ড। ভবানীপুর থানার পুলিশ আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, কলকাতা পুলিশের তরফে নিয়মিত প্রচার চালানো হচ্ছে শব্দবাজি নিয়ে। কখনও সদ্যোজাত শিশু আবার কখনও কুকুরের ছবি দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখা হচ্ছে, ‘এ উৎসব ওদেরও’। সেই পথে হেঁটেই এ দিনের মিছিলের পরিকল্পনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy