বেহাল রাস্তা কোনও মতে তাপ্পি দিয়ে চলাচলের উপযুক্ত করা হয়েছে। খাল সংলগ্ন কালভার্টের মেরামতির জন্য আপাতত সেই রাস্তায় ভারী যান চলাচল বন্ধ। শুধু ছোট গাড়ি যাতায়াত করছে। ওই রাস্তায় এখন এমনিতেই গাড়ির গতি অত্যন্ত শ্লথ। এখন সেখানেই রাস্তা জুড়ে তৈরি হচ্ছে একের পর এক কালীপুজোর মণ্ডপ।
এ শহরে রাস্তা আটকে পুজো অবশ্য নতুন কিছু নয়। শহর হোক বা শহরতলি, দুর্গাপুজো হোক বা কালীপুজো, রাস্তা আটকানোটাই যেন নিয়ম। কিন্তু বর্তমানে দমদম রোডের যা অবস্থা, তাতে এ বারের পুজোয় রাস্তা আটকানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারাই।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার মুখ্য প্রশাসকের অবশ্য দাবি, তিনি রাস্তা আটকে পুজো করার বিরোধী। তিনি জানান, ওই এলাকায় দীর্ঘ কয়েক দশক ধরেই রাস্তার উপরে পুজো হচ্ছে। তাই উদ্যোক্তারা পুজো অন্যত্র সরাতে নারাজ। তা ছাড়া, বিকল্প জায়গারও সমস্যা রয়েছে। মুখ্য প্রশাসক জানান, অতিরিক্ত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করে এবং ট্র্যাফিক পুলিশের সহায়তায় যান চলাচল মসৃণ রাখতে চেষ্টা করা হচ্ছে। পুরসভা জানিয়েছে, পুজো কমিটিগুলিকে ভিড় নিয়ন্ত্রণে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। মাস্ক পরা-সহ যাবতীয় করোনা-বিধি যাতে পালিত হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে তাদের।
দমদম রোডে ‘আমরা মিলেছি’ এবং ‘বর্ণপরিচয়’ নামে দু’টি পুজো হয়। সেই দুই পুজোর সঙ্গে জড়িত দক্ষিণ দমদম পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘আমি রাস্তা আটকে পুজো করার পক্ষে নই। কিন্তু এই দু’টি পুজো দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এখানেই হচ্ছে। উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা স্থান পরিবর্তনে রাজি নন। বিকল্প জায়গারও অভাব রয়েছে।’’
একই যুক্তি দমদম রোডের আর একটি পুজোর সঙ্গে যুক্ত পুরকর্তা রাজু সেনশর্মার। যদিও বিকল্প ব্যবস্থা যে করা যায়, তাঁর ওয়ার্ডেই সেই প্রমাণ মিলেছে। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব সিঁথি মিলিটারি ক্যাম্প এলাকায় রাস্তার উপর থেকে একটি পুজোকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওই ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটরের কথায়, ‘‘যেখানে বিকল্প জায়গা মিলেছে এবং স্থানীয় স্তরে বোঝানো সম্ভব হয়েছে, সেখানে পুজো সরানো হয়েছে।’’
আবার জ’পুরের একটি পুজোর সঙ্গে জড়িত ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর সঞ্জয় দাস জানালেন, আগেও ওই পুজো ফুটপাত এবং রাস্তার কিছুটা অংশ জুড়েই হত। এখন মণ্ডপের আয়তন কমিয়ে শুধু ফুটপাত ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, পুজোর সঙ্গে ধর্মীয় আবেগ ও বিশ্বাস জড়িয়ে রয়েছে। তাই কোথাও পুজো শুরু হলে সরানো মুশকিল। তবু সকলকে চেষ্টা করতে হবে।
এ বছর ওই রাস্তায় ভারী যান চলাচল বন্ধ থাকায় আগের মতো যানজটের সমস্যা হবে না বলেই আশা প্রশাসনের। যদিও তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বাসিন্দাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy