Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

পাতা চাপা দিয়ে রাস্তা সারাইয়ের অভিযোগ, ক্ষোভ

তিন বছর হয়ে গেল, এখনও শেষ হয়নি রাস্তার কাজ। এমন ঢিমেতালেই চলছে বারাসত-টাকি রোড সম্প্রসারণ। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ না হওয়ায় দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজও শুরু করা যায়নি।

অনিয়ম: খানাখন্দে পিচ মাখানো পাথর ফেলে পাতা চাপা দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার, দেগঙ্গার বারাসত-টাকি রোডে। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

অনিয়ম: খানাখন্দে পিচ মাখানো পাথর ফেলে পাতা চাপা দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার, দেগঙ্গার বারাসত-টাকি রোডে। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯ ০০:১১
Share: Save:

তিন বছর হয়ে গেল, এখনও শেষ হয়নি রাস্তার কাজ। এমন ঢিমেতালেই চলছে বারাসত-টাকি রোড সম্প্রসারণ। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ না হওয়ায় দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজও শুরু করা যায়নি। বেহাল এই রাস্তা নিয়ে জনরোষের কারণে রাজ্য সরকারের নির্দেশে এক মাস আগে মেরামতি হয়েছিল রাস্তাটি। দিন কয়েক আগের বৃষ্টিতে সেই পিচ, পাথর উঠে ফের খানাখন্দ তৈরি হয়। পূর্ত দফতরের নির্দেশে সেই খানাখন্দ ভরাটের কাজ চলছে। গর্ত হওয়া জায়গায় পিচ মাখানো পাথর ফেলে তার উপরে রোলার না দিয়ে গাছের পাতা বিছিয়ে পা দিয়ে দাবিয়ে মেরামতি হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন এলাকার মানুষ। এমন দায়সারা ভাবে কাজ করলে তা থাকবে কত দিন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন এলাকার মানুষ।

কেন এ ভাবে রাস্তা সারাই? ওই কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকা সংস্থার এক কর্মী জানান, জেলা আধিকারিকের চাপ রয়েছে। দ্রুত মেরামতির নির্দেশ এসেছে। তাই এ ভাবে কাজ করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে পূর্ত দফতরের উত্তর ২৪ পরগনার আধিকারিক রাজা চট্টোপাধ্যায় অবশ্য জানিয়েছেন, রাস্তায় যদি গর্ত হয়, তা হলে তার চার দিকে চৌকো করে কেটে তার মধ্যে পাথর ফেলতে হয়। তার পরে পিচ মাখানো পাথর ফেলে অবশ্যই রোলার চালাতে হয়। তা না হলে পিচ-পাথর উঠে গিয়ে রাস্তায় ফের খানাখন্দ তৈরি হয়। বারাসত-টাকি রোডে পিচ-পাথরের উপরে গাছের পাতা ফেলা হলে তা অন্যায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ প্রমাণ হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

বারাসত থেকে টাকি পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার রাস্তাটিতে দু’টি পর্যায়ে সম্প্রসারণের কাজ করছে রাজ্য সরকার। প্রথম পর্যায়ে বারাসত থেকে বেড়াচাঁপার অম্বিকানগর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার রাস্তার কাজ বছর তিনেক আগে শুরু হয়েছিল। কিন্তু আজও শেষ হয়নি। ফলে দ্বিতীয় পর্যায়ে বেড়াচাঁপা থেকে বসিরহাট পর্যন্ত অংশ মেরামতি না হওয়ায় রাস্তা জুড়ে তৈরি হয় বড় বড় গর্ত। বেহাল রাস্তার ধুলোয় এলাকার মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়েন। রাস্তা সারাইয়ের দাবিতে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভও হয়। রাস্তা কেটে অবরোধ করে সারাইয়ে দাবিও ওঠে।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বেহাল রাস্তার মেরামতি শুরু করে রাজ্য সরকার। বারাসত থেকে গোলাবাড়ি এবং বেড়াচাঁপা থেকে বসিরহাট, সমস্ত রাস্তা সারাইও হয়। কিন্তু এক মাস না যেতেই সেই রাস্তার বেশ কয়েক জায়গায় নতুন করে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। বেড়াচাঁপার অম্বিকানগরের বাসিন্দা কাশী মণ্ডল বলেন, ‘‘এক মাসের মধ্যে সামান্য বৃষ্টিতে পিচ-পাথর উঠে রাস্তার দফারফা অবস্থা। গর্ত ভরাট করে কচু, কলা, শিরিষ গাছের পাতা ফেলে পা দিয়ে চেপে দেওয়া হচ্ছে। এ ভাবে রাস্তা মজবুত হয়? দু’দিনের মধ্যে ফের তো আগের অবস্থায় ফিরে যাবে!’’ কাউকেপাড়ার বাসিন্দা রোহন মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘এত আন্দোলনের পরে রাস্তা সারাই হচ্ছে। সরকারি টাকা খরচ করে কী ভাবে কাজ হচ্ছে, সে দিকে নজরদারি নেই। ঠিকা সংস্থার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

PWD Patch Work Public Works Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE