এই ঘটনা সামনে আসার পরে সাবধান হয়েছে শহরের অন্য স্কুলগুলিও। প্রতীকী চিত্র
গোটা স্কুল ভবন দফায় দফায় জীবাণুমুক্ত করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব-বিধি লঙ্ঘিত হয়, এমন কাজ করা চলবে না।
কসবার চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলের এক শিক্ষকের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার প্রসঙ্গে এ ভাবেই বাকি স্কুলগুলির জন্য সর্তকবার্তা দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘যাবতীয় কোভিড-বিধি মেনে স্কুল ভবন বার বার জীবাণুমুক্ত করতে হবে। রাখতে হবে পর্যাপ্ত স্যানিটাইজ়ার। পড়ুয়া, শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের সব সময়ে মাস্ক পরে থাকতে হবে। তবে ওই শিক্ষক স্কুল থেকে আক্রান্ত হননি বলেই শুনেছি। তিনি জ্বর নিয়েও স্কুলে যাননি।’’
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বুধবার জানান, এ দিন পুরসভা থেকে কর্মীরা গিয়ে পুরো স্কুল জীবাণুমুক্ত করেছেন। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে স্কুল বন্ধ থাকবে। কবে স্কুল খুলবে, তা জানিয়ে দেওয়া হবে। অনিন্দ্যবাবু বলেন, ‘‘যে দিন ওই শিক্ষকের জ্বর এসেছিল, সে দিনই উনি কোভিড পরীক্ষা করান। তার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে।’’
তবে ওই শিক্ষক স্কুলে না গেলেও পড়ুয়াদের কথা ভেবে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের জ্বর আসার আগে স্কুলে তাঁর সংস্পর্শে যে ছাত্রছাত্রীরা এসেছে, তাদের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই ঘটনা সামনে আসার পরে সাবধান হয়েছে শহরের অন্য স্কুলগুলিও। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরা জানাচ্ছেন, তাঁদের স্কুল জীবাণুমুক্ত করা, মাস্ক পরে থাকা, দূরত্ব-বিধি মেনে ক্লাস— সে সব নিয়মিত হচ্ছে। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য জানালেন, শুধু স্কুলের ভিতরেই কোভিড-বিধি মেনে চলা নয়। অভিভাবকেরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের নিতে আসার সময়ে মাস্ক পরছেন কি না, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াচ্ছেন কি না, তা দেখা হচ্ছে। অভিভাবকেরা যাতে দূরত্ব-বিধি মেনে দাঁড়ান, তার জন্য মাইকেও ঘোষণা করা হচ্ছে।
সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের সামনেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। ওরাই এখন বেশি আসছে। তাই ওদের সুরক্ষার উপরে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। প্রতিটি প্র্যাক্টিক্যালের ঘরে ন্যানো স্যানিটাইজ়ার রাখা থাকছে। ছাত্রদের ব্যাগও স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে।’’
শিক্ষকদের অনেকেই মনে করছেন, শহরের একটি স্কুলের এক শিক্ষক করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তাঁদের মতে, বিভিন্ন স্কুলে যে ভাবে কোভিড-বিধি মানা হচ্ছে, তাতে স্কুল থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা কম। স্কুল ছুটির পরে বাড়ি ফেরার পথেও পড়ুয়ারা যাতে নিয়ম মানে, তা নিয়ে তাদের সচেতন করা হচ্ছে।
একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, তাঁরা যে ক্লাসটি অফলাইনে স্কুলে নিচ্ছেন, ক্লাস চলাকালীন সেটি ‘লাইভ’ করা হচ্ছে। ফলে ওই ক্লাসের যে বিভাগের পড়ুয়ারা ওই দিন স্কুলে আসেনি, তারা বাড়িতে বসেই অনলাইনে ক্লাস করতে পারছে।
তবে একটি স্কুলের শিক্ষকের সংক্রমিত হওয়ার ঘটনায় কিছুটা হলেও আতঙ্কিত অভিভাবকদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, কেরল ও মহারাষ্ট্রে যে ভাবে নতুন করে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তাতে তাঁরা ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য, স্কুলের ভিতরে বিধি মানা হলেও গণপরিবহণে যখন ছেলেমেয়েরা যাচ্ছে, তখন সে ভাবে কোভিড-বিধি মানা হচ্ছে না। সে কারণে নবম ও একাদশ শ্রেণি, যাদের সামনে এই মুর্হূতে বোর্ডের পরীক্ষা নেই, তাঁদের ক্লাস যতটা সম্ভব অনলাইনে হওয়া বাঞ্ছনীয় বলেই মনে করছেন ওই অভিভাবকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy