অনিয়ম: কোনও সুরক্ষা ছাড়া এ ভাবেই ম্যানহোলে নামানো হয় শ্রমিকদের। ফাইল চিত্র।
বছর দুয়েক আগে রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার কুঁদঘাটে ম্যানহোলে কাজ করতে গিয়ে তলিয়ে গিয়েছিলেন সাত জন শ্রমিক। চার জনের মৃত্যু হয়েছিল। মৃতেরা সকলেই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা ছিলেন। ম্যানহোলে মানুষ নামিয়ে সাফাই বেআইনি হলেও শহরে তা বন্ধ হয়নি। শহর ও শহরতলিতে ম্যানহোলে মানুষ নামানোর অমানবিক দৃশ্য প্রায়ই চোখে পড়ে। এ বার এই প্রবণতা পুরোপুরি বন্ধ করতে চায় কেন্দ্র। বুধবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তাঁর বাজেট বক্তৃতার ৫৬ নম্বর অনুচ্ছেদে জানিয়েছেন, দেশের প্রতিটি শহরে নিকাশি সংস্কারের কাজ পুরোপুরি আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে করতে হবে। বিজ্ঞানসম্মত ভাবে এই কাজ করতে দেশের সমস্ত রাজ্যের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
নিকাশি নালা ও ম্যানহোল সাফাইয়ের গোটা প্রক্রিয়া যন্ত্রের মাধ্যমে করার কেন্দ্রীয় ঘোষণাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, ‘‘আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ম্যানহোল পরিষ্কারের ব্যবস্থা আগেও ছিল। নতুন কিছু নয়। তবে, বেশির ভাগ পুরসভা এখনও ম্যানহোলে মানুষ নামিয়ে পরিষ্কার করায়। এটা একেবারে বেআইনি। এই ব্যবস্থা বন্ধ করা হলে খুব ভাল হয়।’’
বছর দুয়েক আগে কুঁদঘাটের ম্যানহোলে তলিয়ে গিয়ে চার শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার কথা মনে করিয়ে প্রাক্তন মেয়র বলেন, ‘‘ম্যানহোলে লোক নামানোর অমানবিক ব্যবস্থা যে চলছে, তা কুঁদঘাটের মর্মান্তিক ঘটনাই মনে করিয়ে দেয়। আমি মনে করি, এখন আধুনিক নতুন যন্ত্র এসেছে। ওই যন্ত্রের মাধ্যমে ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে নিকাশি নালা পরিষ্কার করা হোক।’’
কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগের অবশ্য দাবি, এখন ম্যানহোলে লোক নামিয়ে পরিষ্কার করানো হয় না। আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে করা হয়। পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ বলেন, ‘‘কলকাতায় এখন পুরোপুরি যন্ত্রের মাধ্যমেই নিকাশি পরিষ্কার করা হয়। তার জন্য আমাদের পর্যাপ্ত যন্ত্রও রয়েছে।’’ ম্যানহোলে মানুষ নামানোর ঘটনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থাকে দায়ী করেছেন তারক। তাঁর কথায়, ‘‘কিছু ক্ষেত্রে ঠিকাদার সংস্থার ভুলে ম্যানহোলে মানুষ নামতে দেখা যায়। যদিও আমরা সেই ঠিকাদারদের কঠোর ভাবে নির্দেশ দিয়েছি, নিকাশি সংস্কারের ক্ষেত্রে ম্যানহোলের মধ্যে মানুষের প্রবেশ সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ।’’ তবে, সেই নিষেধাজ্ঞায় কাজ হবে কি? প্রশ্ন এখন সেটাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy