Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Protest For Job Recruitment

পুড়িয়ে দেওয়া গরম, সঙ্গে জলাভাব, তবু পালা করে আগলে ধর্মতলার ধর্নামঞ্চ

এই গরমে চাকরিপ্রার্থীরা কী ভাবে বসে রয়েছেন, তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই সরকার বা বিরোধী দলগুলির। চুপ মুখ্যমন্ত্রীও। এ বার তাই রাজ্যপালের কাছেই তাঁরা সুরাহা চাইতে যাবেন।

A Photograph of a woman drinking water while doing protest

তীব্র গরমেও চলছে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ আন্দোলন। তার মধ্যেই গলা ভেজানোর স্বস্তি (খবর: কলকাতা)। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:১০
Share: Save:

বুধবারের বেলা। পুড়িয়ে দেওয়া তাপমাত্রা। বাঁচতে ভরসা ত্রিপলের ছাউনি। আর গরমের মোকাবিলায় অস্ত্র বলতে পানীয় জল, ওআরএস এবং তরমুজ। সে সব সঙ্গে নিয়েই বিক্ষোভ মঞ্চে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসেছিলেন রাজ্য সরকারের গ্রুপ-ডি চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের পাশে অবশ্য এ দিন বসেছিলেন উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরাও।

তাঁদের অভিযোগ, এই গরমে তাঁরা কী ভাবে বসে রয়েছেন, তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই সরকার বা বিরোধী দলগুলির। চুপ মুখ্যমন্ত্রীও। এ বার তাই রাজ্যপালের কাছেই তাঁরা সুরাহা চাইতে যাবেন। আগামী কাল, শুক্রবার রাজভবন অভিযানের ডাক দিয়েছেন গ্রুপ-ডি চাকরিপ্রার্থীরা। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে চান বলে ইতিমধ্যেই তাঁরা চিঠিও দিয়েছেন।

রাজ্যের গ্রুপ-ডি আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের এক জন, কিংশুক চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা ৪১ ডিগ্রি গরমে বসে। রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে চিঠি লিখে জানানো হয়েছে, তীব্র দহনেও ন্যায্য চাকরির দাবিতে যে ভাবে ধর্না কর্মসূচি চলছে, তাতে যে কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের কাছে অনুরোধ, বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের বিষয়ে তিনি দ্রুত হস্তক্ষেপ ও সমাধান করুন।’’

এ দিন রাজ্য সরকারের গ্রুপ-ডি চাকরিপ্রার্থীদের পাশে বসা উচ্চ প্রাথমিকের এক চাকরিপ্রার্থী সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাত্র ও শিক্ষকদের কথা ভেবে গরমে স্কুল ছুটি দিলেন। আমরাও তো হবু শিক্ষক। অযোগ্য শিক্ষকেরা নিয়োগপত্র পেয়ে চাকরি করছেন। আর যোগ্যেরা বসে আছেন পথে! এ কথা তোআদালত এবং সিবিআই-ই বলেছে। সেই হবু শিক্ষকেরা কী ভাবে এত গরমে বসে, তা নিয়ে তাঁর এতটুকুও সহানুভূতি নেই? এমনকি, সরকার নিয়মিত পানীয় জলের ব্যবস্থাওকরল না?’’

মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির নীচে বসে রয়েছে অনেকগুলি চাকরিপ্রার্থী সংগঠন। রয়েছে প্রাথমিক টেটে উত্তীর্ণদের সংগঠন, ইন্টারভিউ বঞ্চিত উচ্চ প্রাথমিকদের সংগঠন, স্কুলের গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ ডি-দের সংগঠন, এমনকি নতুন করেএসএসসি পরীক্ষার দাবি জানিয়ে বসা সংগঠনও। সকলেই জানালেন, তাঁদের জন্য দু’টি জলের ট্যাঙ্ক রাখা আছে। যার একটি খারাপ। অন্যটির জল বেলা ১২টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়। কারণ, ওই ট্যাঙ্ক থেকে শুধু চাকরিপ্রার্থীরাই নন, পথচলতি মানুষও জল পান করেন। চাকরিপ্রার্থীদের প্রশ্ন, এত গরমে কি পানীয় জলের জোগান দেওয়া যায় না? তাই গরম বাড়ায় ধর্না মঞ্চে কম সংখ্যককে আসতে বলা হচ্ছে। এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বসে থাকা অসম্ভব। ১০টা-২টো এবং ২টো-৫টা পর্যন্ত পালা করে থাকা হচ্ছে।’’ পানীয় জলের সঙ্কটের বিষয়ে পুরসভার জল দফতরের এক কর্তাকে প্রশ্ন করা হলে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ৭৬৬ দিন ধরে বসে নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের এক জন অভিষেক সেন বলেন, ‘‘এই দহন মানুষ চেনাল। মুখ্যমন্ত্রীর তরফে কোনও মানবিক বার্তা পাইনি। পাশে নেই বিরোধী দলগুলিও। তাই মনে রাখব, একলা চলো রে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Protest hot temperature summer Group D Staff
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE